somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শৈশব ভ্রমন

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার খুব কম বয়সেই বিমানে চড়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। বাবা কি একটা চাকরি নিয়ে নাইজেরিয়া গেছিলেন, তখন আমার বয়স চার/ পাচ। বাবা যাওয়ার এক বছরের মধ্যে অবশ্য আমাদের ডাক এলো। মা বেশ কদিন ঢাকাতে দৌড়া-দৌড়ি করে প্লেনের টিকেট ভিসা বের করলেন। আর আমরা পড়া লেখা নেই এই খুশিতে সারাদিন নানু বাড়িতে খেলে খেলে বেড়াতাম। যাওয়ার সময় মনে আছে খালা মামা চাচা আনেকে এসেছিলেন বিদায় দিতে।বিমানে উঠার আগের উৎকট ঝামেলাগুলো আম্মার উপর দিয়ে গেছিলো। শুধু মনে পড়ে বিমান থেকে আমরা তিন ভাই বোন খুব অবাক হয়ে ঢাকা শহরের বাস গাড়ি ছোট ছোট হয়ে যাওয়া দেখছিলাম। আমাদের অবাক চোখ দেখে এয়ার হোস্টেজ গাল টিপে বলেছিলো ‘বাবু মেঘের রাজ্যে স্বাগতম’। বাংলাদেশ বিমানে পাকিস্তান হয়ে আমরা ‘পি আই এ’ তে করে চলে গেছিলাম বাহরাইন। তখন বাহরাইনে আমার আবু মামা আর আছমা খালা থাকতেন। মামা তখনো বিয়ে করেননি আর আছমা খালার তিন মেয়ে আমাদের সমবয়সি আর কোলে একমাত্র ছেলে এনাম।আর এমদাদ খালু বুয়েট থেকে গোল্ড মেডেলিস্ট...... বাহরাইন ইউনিভারসিটিতে প্রফেসর। উনারা কেম্নে কেম্নে আমাদের একদিন বাহরাইনে থাকার ব্যবস্তা করে ফেললেন। বাহরাইনে এয়ারপোর্টে কাচের দরজাগুলো অটো সিস্টেম......... সামনে দাড়ালেই খুলে যায়। মনে পড়ে আমার এয়ারপোর্টের প্রথম এক ঘন্টা শুধু এই কাচের দরজাগুলোর পিছনে ছুটেই কেটেছিল। মামা গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন, আমাদের বাহরাইনের অনেকটা কিছু সময়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখালেন। একটা বিরাট রাস্তা পার হয়েছিলাম যার দু ধারে দু রকমের জল না মিশে চলে গেছে সাগর আব্দি। খালু দেখিয়ে বলছিলেন, পবিত্র কোরআন শরিফে সুরা আর রহমানে আল্লাহ সুবহানাত’লা এদিকে ইশারা করেছেন, “তিনি প্রবাহিত করেছেন দুই জলরাশিকে--- তাদের উভয়ের মধ্যে রয়েছে এক ব্যবধান যা তারা আতিক্রম করতে পারে না” (সুরা আর রহমান, আঃ ১৯-২০)। সত্যিই আল্লাহর অনুগ্রহ অসীম।
খালার বাসায় দুপুরটা কেটেছিলো স্বপ্নের মতো। মধ্যপ্রাচ্যের ধনাঢ্য জীবন যাপনের খুদ্র নমুনা। দোতলা বাসার সবকিছুই আধুনিক আর নান্দনিক আসবাবে ভরপুর। আমার বাংলাদেশে তখন সাদা কালো টিভি দেখতাম তাও এর ওঁর বাসায় গিয়ে আর খালার বাসায় রংগিন টিভিতে নিত্য নতুন কারটুন...... আমার কাছে যেন স্বর্গে আসা। খালা খালু আর মামা মিলে ব্যপক আয়োজন হয়েছিলো। কিন্তু মোটে একদিন... দেখতে দেখতেই চলে গেল। মামা তার গাড়িতে করে এয়ারপোর্ট আব্দি পৌছে দিয়েছলেন ত বটেই তার সাথে আমাদের তিন ভাই বোনকে ব্যপক চক্লেট জুস কিনে দিয়ে গেছিলেন। এবার আবশ্যি বিমান পরিবর্তন হয়ে চড়লাম গালফ এয়ারে...... বিমানটা ছিলও বিশাল জাম্বু জেট, দোতলা বিমান। আমরা নিচ তালায় থাকলেও আমার আর ভাইয়ার কৌতূহল বাধ মানে না। বিমানের পিছন থেকে হেটে হেটে সাম্নের সিড়ি টাইপ একটা কিছুর কাছে পৌছতেই দুই নিরপত্তারক্ষী টাইপের কেউ আমাদের আবার কোলে করে পিছনে দিয়ে গিয়েছিলো।মা খুব করে বকেছিলেন কাছছাড়া হবার জন্য। প্লেন পরবর্তী গন্তব্য ছিল জেদ্দাহ বিমান বন্দর সৌদি আরব। প্লেনেই এক চাচির সাথে পরিচয় হয় আম্মার, নাম মনে নেই তবে উনারও গন্তব্য ছিল নাইজেরিয়া। জেদ্দা বিশাল বিমান বন্দর ক্ষনে ক্ষনে প্লেন উঠছে নামছে আর মাইকে মুহুরমুহু ঘোষনা...... তাল সাম্লানোই দায়। এক বিদেশিনীকে দেখছিলাম কাঁদো কাঁদো হয়ে তার মেয়েকে খুজে বেড়াচ্ছেন। আম্মা পই পই করে সাবধান করতেন যেন কোনমতেই কাছছাড়া না হই। আসলে সাদা হোক কালো হোক সব মায়ের জন্যই তার সন্তানের প্রতি ভালবাসা সমান। আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা পবিত্র কোরানে সমগ্র মনব জাতিকে ইয়া বনু আদ’মা বা এক আদমের সন্তান হিসাবেই আখ্যা দিয়েছেন তাই তাদের স্বভাবে ত সাদৃশ্য থাকবেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:১৮
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×