somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দুজন ফ্রেন্ড, তাদের কৈশোর প্রেম ভালবাসা অতঃপর বিয়ে.. সামনে জীবনের কঠিন চ্যালেন্জ

২২ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কৈশোর প্রেম সাধারনত আবেগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই বয়সের ছেলেমেয়েরা অনেক কিছুই না বুঝে করে। এরা আবেগকে সব সময় প্রশ্রয় দেয়। ভাল মন্দ বিচার করার ক্ষমতা এরা রাখে না। আর রাখলেও নিজের ইচ্ছাকে সামনে রাখে। অনেক পরিবার বিশেষ করে বিত্তশালী পরিবার এদের সাথে তাল মিলিয়ে সবচেয়ে বড় ভুলটা করে বসে। সন্তান যা চায় তাই দেয়, যা করতে চায় তাই করতে দেয়। কোন বাধা নেই, তাকে সুস্থ মস্তিষ্কে বোঝানোর মত কেউ নেই। ব্যাস্ত পরিবারে সন্তানকে নিজে থেকেই সবকিছু বুঝে নিতে হয়। ভাল মন্দের পার্থক্যটা ধরে নিতে হয়

একটা অল্পবয়সী ছেলে নিজে থেকে কতটুকুই বা করতে পারে?

উচ্চবিত্ত পরিবারের পাশাপাশি নিম্নবিত্ত পরিবারেও এই ব্যাপারগুলো দেখা যায়। সন্তানকে নিজে থেকেই মানুষ হতে হয়। নিজে থেকেই অনেক কিছু বোঝার চেষ্টা করতে হয়। আবার তারা নিজে নিজেই ভুল পথে পা দেয়....

কিশোর বয়সের ছেলে মেয়েরা সবচেয়ে বড় যে ভুলটা করে তা হল, প্রেম। কৈশোর প্রেম খুবই মারাত্মক হয়ে থাকে। অতিরিক্ত আবেগপ্রবন হয়ে অনেকে অল্পবয়সেই বিয়ে করে ফেলে। নিম্নমধ্য বিত্ত পরিবারে এরকম অহরহ দেখা যায়। জীবন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা না থাকায় তারা এই ভুলটা করে থাকে। সংসারী জীবন কত বড় চ্যালেন্জ সেটা বিয়ের পরে বুঝতে পারে...

আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলি, আমাদের এলাকায় কিছুদিন আগে আমার দুজন ফ্রেন্ডের বিয়ে হয়ে গেল। বয়স খুবই কম। সতের আঠেরোর গন্ডি এখনো পাড়ায় নি কিংবা এখনো সেই ষোল সাড়ে ষোল এর মধ্যে আটকা পড়ে আছে। একজন আন্ডার মেট্রিক সার্টিফিকেট নিয়ে সেই টেনেই পড়ে আছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাব করলে সে এখনো আমার জুনিয়র। এরপর আর কোথাও ভর্তি হয় নি। বাবার ছোটখাট ব্যবসা দেখা শুরু করল। বাবা মাও ছেলেকে ধরে ফুটফুটে একটা মেয়ে দেখে বিয়ে দিয়েছে।

আরেকজন মোটামুটি ভাল ছাত্র। ক্লাস মেইট এক ফ্রেন্ডের সাথে প্রথমে প্রেম তারপর বিয়ে।

দু পরিবারেরই প্রধান সমস্যা হল, এরা নিম্ন মধ্যবিত্ত। এরা জীবন নিয়ে অতটা ভাবে না। একভাবে গেলেই হল। তাদের কাছে জীবনের মিনিংটা হল এরকম- এলাম, দেখলাম, খেলাম, সংসারী হলাম, চলে গেলাম। যদিও সবার মধ্যে স্বপ্ন বলে একটা কথা আছে। কিন্তু বাহির থেকে এরকমই মনে হয়।

মাঝে মাঝে কোথাও যাওয়ার সময় এই দম্পতিদের সাথে প্রায়ই পথে ঘাট দেখা হয়। একজন আরেকজনের হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে প্রেমিক- প্রেমিকাদের মত খুব ভাব নিয়ে হেটে যায়। ওদের সাথে খুব কম সময়ই আমার কথা হয়। বিয়ের পর কেন ওদের সাথে দুরত্বটা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। পথে হঠ্যাৎ দেখা হলে মুচকি একটা হাসি দেয়। এই হাসির মাঝখানে অনেক কিছু প্রকাশ পায়। এক. খুব বড় হয়ে গেছি, দুই. আমার একখান সুন্দরী বউ আছে, তোর নাই, তিন. সংসারী হয়ে গেছি, চার. আমার বউই দুজনের মধ্যে পার্থক্য তৈরী করে দিল.....

বিয়ে পরবর্তী দিন চলছে। বাবার টাকায় ভালই আয়েশ করে দিন কাটছে। বাবার টাকায় নতুন বউরে নিয়া সার্কেট হাউসের সামনে বসে পা দুলাইতেছ আর বাদাম ফুচকা খাইতেছ, বাবার টাকায় গাড়ি ভাড়া দিয়া ঘুরতেছ, ঘোর। যখন নিজের পয়সা খরচ করার জন্য পিছন দিয়া ঠেলাঠেলি শুরু হইয়া যাইবে তখন ঠিকই বুঝবা। সুন্দরী বউ আর নতুন জীবনের অহংবোধ তখন কই যাইবে?

আমি কাউকে আঘাত দেয়ার জন্য কথাগুলো বলিনি। সাধারনত যা হয় তাই বললাম। এদের পরিবার এমন নয় যে সারাজীবন বাবার টাকায় পায়ের উপর পা তুলে খাবে। একসময় এদের অর্থের সন্ধানে নামতে হবে, একটা পরিবারকে বাঁচানোর জন্য। জীবনের কঠিন চ্যালেন্জ তখনই উপলব্ধি করতে পারবে।

অল্প বয়সে বিয়ে করার ফলে এরা পরিবার নিয়ে সচেতন কম হয়। দেখা যায় বিয়ের পর বছর দুয়েকের মধ্যে সে পরিবারে একটা শিশুর জন্ম হল। আরেকটা মুখ বেড়ে গেল। আরেকজনের ভরন পোষনের সংগ্রাম শুরু হয়ে গেল। এরপর আরেকটা শিশু। সংসারে টানপোড়ান যতই বাড়তে থাকে, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একে অপরের সম্পর্কের বন্ধন ততই ঢিলে হতে শুরু করে। এরকম নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এইসব পরিবার অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। শুরু হয় একটা স্বপ্ন নিয়ে। ভেঙ্গে যায় জীবনের প্রতি প্রবল ঘৃনা নিয়ে



৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×