somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্থানীয়ভাবে নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ !

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৪:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মুখ ও মুখোশ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আর বর্তমান বাংলাদেশের স্থানীয়ভাবে নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সবাক চলচ্চিত্র। ১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি পরিচালনা করেছেন আব্দুল জব্বার খান। ইকবাল ফিল্মস এই ছবিটি অর্থায়ন এবং চিত্রায়নে সহায়তা করে। চলচ্চিত্রটি ১৯৫৬ সালের আগস্টের ৩ তারিখে মুক্তি পায়। ছবিটির প্রথম প্রদর্শনী হয় মুকুল প্রেক্ষাগৃহে বর্তমান যার নাম আজাদ প্রেক্ষাগৃহ। এটি ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ এবং খুলনায় একযোগে মুক্তি পায়। সেই অঞ্চলের প্রথম চলচ্চিত্র হিসাবে দর্শকমহলে এটি নিয়ে আগ্রহের সৃষ্টি হয়। চলচ্চিত্রটি ততকালীন প্রায় ৬৪,০০০ রূপি নির্মাণব্যয় হয় আর প্রথম দফায় মুক্তির পর চলচ্চিত্রটি প্রায় ৪৮,০০০ রুপি আয় করে।মূলত চিত্রনাট্যটি আবদুল জব্বার খানের ডাকাত নাটক হতে চলচ্চিত্রটির কাহিনী নেওয়া হয়। ১৯৫৩ সালে তিনি চলচ্চিত্রটির কাজ শুরু করেন। সে সময় দৃশ্যত পূর্ব পাকিস্তানে নিজস্ব কোন চলচ্চিত্র শিল্প গড়ে উঠেনি। স্থানীয় সিনেমা হলগুলোতে কলকাতা অথবা লাহোরের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হতো। পশ্চিম পাকিস্তানের চলচ্চিত্র প্রযোজক এফ. দোসানির পূর্ব পাকিস্তানে চলচ্চিত্র প্রযোজনার ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্যে ক্ষুদ্ধ হয়ে জব্বার খান চলচ্চিত্রটি নির্মাণে উদ্যোগী হন।জব্বার খান দুই বছর ধরে ছবিটির কাজ করেন। ১৯৫৪ সালের ৬ই আগস্ট আবদুল জব্বার খান তার পরিচালনায় প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ এর মহরত করেন হোটেল শাহবাগে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ইস্কান্দার মির্জা ছবির মহরতের উদ্বোধন করেন। স্থানীয় অভিনেতারা, চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই বিনা পারিশ্রমিকে এই ছবিতে অভিনয় করেন।স্থানীয়ভাবে কোন ফিল্ম প্রোডাকশন স্টুডিও না থাকায় ছবির নেগেটিভ ডেভেলপের জন্য লাহোরে পাঠানো হয়। লাহোরের শাহনূর স্টুডিওতে মুখ ও মুখোশ এর পরিস্ফূটন কাজ সম্পন্ন হয়। ১৯৫৬ সালে ছবির কাজ শেষ হয় কিন্তু তিনি ছবিটি নিয়ে প্রথমে ঢাকায় ফেরার অনুমতি পাননি। মুখ ও মুখোশ’র প্রথম প্রদর্শনী হয় লাহোরে। ঢাকায় ফিরে আসার পর ছবিটি প্রদর্শনীর বিষয়ে কোন প্রেক্ষাগৃহের মালিকের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়াও পাননি। তবে এ অবস্থা কাটাতে বেশি সময় লাগেনি। অল্পদিন পরেই মুখ ও মুখোশ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম এবং খুলনায় একযোগে প্রদর্শিত হয়। ছবিটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয় রূপমহল প্রেক্ষাগৃহে।

ইনাম আহমেদ - মুখ্য পুরুষ চরিত্র
আব্দুল জব্বার খান - দ্বিতীয় প্রধান পুরুষ চরিত্র
পূর্ণিমা সেনগুপ্ত - প্রধান নারী চরিত্র
জহরত আরা। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর ছাত্রী
পিয়ারী বেগম। তখন ইডেন কলেজের ছাত্রী
রহিমা খাতুন।
বিলকিস বারী।
আমিনুল হক। তখন ঢাকা বেতার কেন্দ্র-এ চাকুরীরত

চিত্রনাট্য - বিপ্রদাশ ঠাকুর -কলকাতা।
চিত্র গ্রহণ - মুরারী মোহন উপদেষ্টা । পরে এই দায়িত্ব তুলে নেন সহকারী চিত্রগ্রাহক জামান।
অঙ্গসজ্জা - শ্যাম বাবু -আসল নাম শমসের আলী ।
সংগীতে কন্ঠ - আবদুল আলীম এবং মাহবুবা হাসনাত ।
সঙ্গীত পরিচালক - সমর দাস।
সহকারী সঙ্গীত পরিচালক - ধীর আলী।
শব্দ গ্রহণ - মইনুল ইসলাম।
সম্পাদক - আব্দুল লতিফ -পশ্চিম পাকিস্তান ।


ছবির প্রথম প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি ছিলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক।ছবির মহরতে উপস্থিত ছিলেন তদানীন্তন পাকিস্তানের গভর্নর ইস্কান্দার মীর্জা।প্রথম শুটিং কালীগঞ্জে ১৯৫৩ সালের ডিসেম্বর মাসে।ছবির মহরত হয় ১৯৫৪ সালের ৬ আগস্ট। স্থান তখনকার শাহবাগ হোটেল।প্রথমে ছবির নাম রাখা হয়েছিল 'ডাকাত'। পরে ফজল শাহাবুদ্দিনের পরামর্শে নাম রাখা হয় 'মুখ ও মুখোশ'।শুটিং শেষ হয় ১৯৫৫ সালের ৩০ শে অক্টোবর।
শুটিংয়ের মূল স্থানগুলো ছিল সিদ্ধেশ্বরী, তেজগাঁও, রাজারবাগ, কমলাপুর, লালমাটিয়া, জিঞ্জিরা এবং টঙ্গীর বিভিন্ন জায়গায়।


Ali Mansoor and Zahrat Ara in Mukh O Mukhosh.Courtesy: Bangladesher Cholochchitrer Itihash by Anupam Hayat

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৪:৫৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×