somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পে গল্পে সুরাহ আল আহযাব

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হযরত মুহম্মদ (সাঃ) দ্বিধান্বিত। ঠিক যেন, টু বি অর নট টুবি দ্যাট ইজ দ্যা কোয়েশ্চন। যে চাচাতো বোনকে তিনি বিয়ে দিয়েছিলেন তারই মুক্তিপ্রাপ্ত কৃতদাস এবং পালিত পুত্র জায়েদ বিন হারিসার সাথে, সেই জয়নব (রাঃ) এখন তালাকপ্রাপ্তা। নির্দেশ এসেছে পালিত পুত্রের (যে কিনা তখন জায়েদ বিন হারিসার বদলে জায়েদ বিন মুহম্মদ নামে পরিচিত) তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে বিয়ে করতে হবে। পালিত পুত্র তো সেই সময় নিজ পুত্রের সমমর্যাদায় অধিষ্ঠিত। নিজ ছেলের বউকে কিভাবে বিয়ে করে ঘরে আনা হবে? হোক সে তালাকপ্রাপ্তা। তাও আবার এ ঘটনাটি ঘটবে স্বয়ং নবী করিম (সাঃ) কর্তৃক যিনি এসেছেন মানব জাতিকে পথ দেখাতে। কিন্তু না। এ কাজটি করতে হবে পথ দেখানোর জন্যই। পালক পুত্র কখনো নিজ পুত্রের সমমর্যাদার হতে পারে না। ইসলাম পূর্বযুগে দত্তক পুত্র বা কন্যা গ্রহণ করার প্রচলিত রীতি তো সঠিক নয়। পালক পুত্র বা কন্যা কখনো গর্ভজাত পুত্র কন্যার সন্তান হতে পারে না। তাই এ রীতি তুলে দিতে হবে। তখন এ রীতিটি সামজে এতোটাই প্রচলিত ছিল যে কেবল ঘোষণা দিয়ে মানবকূলকে এ থেকে চিরতরে রহিত করা যাবে না। তাই পথ প্রদর্শক নিজেকেই এ রীতি ভাঙার মতো কিছু করতে হবে । বিয়ে করতে হবে জয়নব (রাঃ) কে। এটা কিভাবে সম্ভব? এ করলে বিরুদ্ধবাদীরা সুযোগ পেয়ে বসবে। কুৎসা রটাতে থাকবে নবী করিম (সাঃ) এর বিরূদ্ধে। ফলাফলে রুদ্ধ হয়ে যেতে পারে ইসলামের জয়যাত্রা। নবী (সাঃ) যখন এসব কথা ভাবছিলেন তখনই নাযিল হল,
১. হে নবী, আল্লাহকে ভয় কর। কাফের ও মুনাফেকদের আনুগত্য বরণ কর না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়।
২. তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যে বিষয়ের ইঙ্গিত করা হচ্ছে তার অনুসরন কর। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা সবই জানেন।
৩. আল্লাহর উপর নির্ভর কর। কর্ম সম্পাদনের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
আয়াতগুলো নাযিল হচ্ছে সামাজিক সংস্কার নিয়ে। কুসংস্কার সব দলিত করে সবাইকে মহান আল্লাহর দিকে ধাবিত করা যখন উদ্দেশ্য, তখন আরবে একটা কু-প্রথা প্রচলিত ছিল। আরবের লোকেরা স্ত্রীদের সাথে ঝগড়া করতে করতে কখনো কখনো এ কথা বলে বসত, “তোমার পিঠ আমার কাছে আমার মায়ের পিঠের মতো”। এভাবে ‘যিহার’ করলে মনে করা হত স্বামীর কাছে তার স্ত্রী হারাম হয়ে গেছে। আরেকটি ঘটনায় আমরা জানতে পারি, ঐ সময় জামিল ইবনে মুয়াম্মার নামে এক ব্যাক্তি ছিল যার স্মৃতিশক্তি খুব প্রখর ছিল। সে দাবী করত তার ভেতর দুটি হৃদয় রয়েছে এবং এজন্য সে মুহম্মদ (সাঃ) থেকে বেশি বুঝতে সক্ষম। কিন্তু দুটি হৃদয়ের অধিকারী কি মানুষ হতে পারে?
৪. আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন। (চলবে...)
বি.দ্র: ছোটবেলা থেকেই কোরান পড়া শুরু করেছি। পবিত্র রমযান মাস এলে অন্যদের সাথে রীতিমতো প্রতিযোগিতা করে কোরান শেষ করার চেষ্টা করেছি। কে কতবার কোরান শেষ করতে পারল এ নিয়ে আমাদের মধ্যে ছিল তুমুল প্রতিযোগীতা। কিন্তু আমাদের এই পাঠ ছিল আরবী ভাষায়। কখনো এর অর্থ জানার চেষ্টা করিনি। আমি যে কোরান শরীফটি পড়তাম তার নিচে বাংলা ভাষায় এর অনুবাদ থাকা সত্ত্বেও কখনো ইচ্ছে হয়নি তাতে কি লেখা আছে তা পড়ে দেখার। কিছু কিছু আয়াতের দিকে হয়তোবা কখনো চোখ পড়েছে। কিন্তু না বুঝার কারনে কখনো বেশি দূর এগোইনি। কী দরকার! আরবী পড়লেই তো সওয়াব হয়। বাংলা পড়ার প্রয়োজনীয়তা বা ইচ্ছা কোনটাই কখনো উপলদ্ধি করিনি। কেন পড়লাম না, কেন আগ্রহ হল না- এ নিয়ে ভাবকে ভাবতে মনে হল, সহজ ভাষায় আগ্রহ সৃষ্টিকারী কোরানের উপর এমন কোন বাংলা বই হাতের কাছে পাইনি বলেই কখনো কোরান বুঝার ইচ্ছে হয়নি আমার। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, যে পবিত্র গ্রন্থটি আমাদের প্রত্যেক ঘরে ঘরে অন্তত একটি করে আছে সেই গ্রন্থে আসলে কী লেখা আছে তা জানার একটুখানি চেষ্টা করি। এ সিদ্ধান্ত থেকেই সুরা আল আহযাব পড়া শুরু করলাম। আর ভাবলাম, এ সুরাটি পড়ে আমি যা জানছি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। আমার এ লেখায় তাফসীর ইবনে কাসীর, তফসীরে মা‘আরেফুল কোরআন, তফসীরে জিবরীল, তাহফীমুল কোরআন, বুখারী শরীফ, সহীহ মুসলিম, কোরান শরীফ-সরল বঙ্গানুবাদ থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো সন্নিবেষ্টিত হবে। লেখায় কোন ভুল ধরা পড়লে জানাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৮
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

Testimony of Sixty- By Edward Kennedy বাংলাদেশের রক্তাক্ত সত্যের এক আন্তর্জাতিক স্বীকারোক্তি

লিখেছেন কিরকুট, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩




১৯৭১ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর বৈপরীত্যের বছর। এটি যেমন ছিল অন্ধকার ও রক্তাক্ত, তেমনি ছিল সত্যের প্রতি অবিচল এক সময়কাল। এই বছরের গণহত্যা, শরণার্থী স্রোত ও মানবিক বিপর্যয়ের বিবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×