somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: জিম্মি

০৫ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জিম্মি! তাও সিলেটের মতো ছোট্ট শহরের একটি বিউটি পার্লারে সাজগোজরত কয়েকজন নারীকে দিনে দুপুরে পাঁচ পাঁচটি যুবক জিম্মি করে ফেলবে এটা কারো ধারণার মধ্যে ছিল না। খবরটি ছড়িয়ে পড়া মাত্রই গোটা বাংলাদেশের সবাই টিভিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ল জিম্মি ঘটনার সরাসরি সম্প্রচার দেখার জন্য।

যুবকগুলো কেন এমন কাজ করল কিছুই বুঝা যাচ্ছিল না।

কেউ বা বলল, ওরা নিঃসন্দেহে আইএস এর সদস্য। ইসলাম মতে, মেয়েদের যেখানে হিজাব পড়ার কথা সেখানে তারা নিজেদের সৌন্দর্য্য দেখানোর জন্য সাজগোজ করতে ঢুকেছে বিউটি পার্লারে। এদের শিক্ষা দেয়ার জন্য আইএস যমদূত পঠিয়েছে। পুরুষদের অনেকে ঘটনাকে সমর্থন দিল এবং বলল, ঠিক হয়েছে, ঠিক হয়েছে। সকল বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেয়া উচিত। আবার এমন কিছু পুরুষকেও খুঁজে পাওয়া গেল যারা এর তীব্র বিরোধিতা করল। তাদের মতে, বিউটি পার্লারের দরকার আছে। নারীরা সৌন্দর্য্যের আঁধার। তাদের যদি সাজগোজ করতে না দেয়া হয় তাহলে কারা সাজগোজ করবে? যারা সাজগোজ করছে তারা তো বাইরের পুরুষদের দেখানোর জন্য নাও করতে পারে। নিজের জন্য বা নিজের স্বামীর জন্যও তো তারা সাজতে পারে। তাছাড়া সাজগোজে বাাঁধা দিলে এই যে এতো এতো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেগুলোই বা চলবে কিভাবে?

আবার কেউবা বলল, এসব আইএস টাইএস কিচ্ছু না। সব হচ্ছে বিরোধী দলের স্বড়যন্ত্র। সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য তারা এমনটা করছে। তখন একদল বলে উঠল.তাই বলে মেয়েদের পার্লার! ছি! ছি! ছি! কালে কালে আরো কতো কি দেখবো! এ যে রীতিমতো কাপুরুষতা! জিম্মি করবি, ছেলেদের সেলুন কর! মেয়েদের পার্লার জিম্মি করে তো এদেশের ছেলেদের সাহসীকতার অপমান করা হল?

মন্তব্য প্রদানকারীদের মধ্যে আরেক দল পাওয়া গেল, যারা বলল, আরে মিয়া। রাখো তোমার আইএস বা বিরোধী দল। এসব তো সরকার পক্ষ থেকে করানো হচ্ছে। মিতু হত্যাকান্ড থেকে সবার চোখ সরিয়ে নিতে এমন উত্তেজনাকর গল্প তৈরী। এখন গোটা বাংলাদেশের গাধাগণরা, নাও নতুন গল্প নিয়ে মত্ত থাকো কিছুদিন। মিতু হত্যাকান্ড ভুলে যাও। তবে আর যাই হোক, যিনি মূল গল্পকার তার প্রশংসা করতে হয় বই কি। মেয়েদের পার্লার জিম্মি! এ কথা তো খোদ লাদেনের মাথাতেও ঢুকতো না।

ইতোমধ্যে পার্লারের পুলিশ ও র‌্যাব- সবাই এসে হাজির হয়ে গেছে। তবে সবার আগে এসেছে টিভি ক্যামেরা হাতে সাংবাদিকেরা। এদেশের সাংবাদিকরাও বাহবা পাবার যোগ্য বটে। কিভাবে জানি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আগেই সব অপকর্মের খবর তারা পেয়ে যায় আর সবার আগে সরেজমিনে সদলবলে উপস্থিত হয়ে যায়। আসলে সাংবাদিকদেরই পুলিশ বা সেনাবাহিনীতে নিলে ভাল হতো। এমন অপরাধ কিছুটা হলেও কমে যেত, বোধ করি।

সাধারণ জনগণও অবশ্য কম যায় না। পার্লারের ভেতর থেকে গুলির শব্দ ভেসে আসলেও তারা অতি উৎসাহে পার্লাারের সামনে এসে জড়ো হয়েছে। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়েও তাদের আটকাতে হিমশিম খাচ্ছে। মনে হচ্ছে ব্যারিকেড না হলে তারা সবাই অকুতোভয় যোদ্ধা হয়ে জিম্মি উদ্ধারে পার্লারের ভেতর ঢুকে পড়বে। তাই মনে হয় সাধারণ জনগণকেও পুলিশ হিসেবে নিয়োগ দিলে মন্দ হতো না। জিম্মি উদ্ধার অপারেশন এতো দেরী হতো না। নাকি.. কি জানি! জনগণ পুলিশ হয়ে গেলে বুঝি তারাও ভীত হয়ে পড়তো।

জিম্মি নাটকের এক ঘন্টা হতে চলল, এখনো পুলিশ থেকে হুমকি দেয়া হচ্ছে জঙ্গীরা অনতিবিলম্বে আত্মসমর্পণ না করলে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারা অবশ্য এতে কোন কর্ণপাত করছে না। একটু পর পর ফাঁকা গুলি ছুঁড়ছে।

অবশেষে পুলিশের পক্ষ থেকে হ্যান্ড মাইক নিয়ে ঘোষনা করা হল,
-আপনারা ভেতরে যারা যারা আছেন তাদের কোন দাবী -দাওয়া থাকলে আমাদের কাছে পেশ করুন। আমরা দেখি দাবীগুলো পুরণ করা যায় কি না।
ভেতর থেকেও হ্যান্ড মাইকের আওয়াজ ভেসে আসলো।
-আমরা চাই তোমরা সব চলে যাও। আমরা এখানে কিছুক্ষণ থাকবো তারপর চলে যাব। আমাদের যখন বের হবার সময় হবে তখন নিরাপদে চলে যেতে দিলেই হবে।
তাদের কথায় পুলিশ ও র‌্যাব বাহিনী সন্তুষ্ট হল বলে মনে হল না। তাই তারা আবারো জিজ্ঞেস করল-
-আপনারা কি কোন টাকা পয়সা চান বা কারো মুক্তি চান?
-না। আপাততঃ আমরা কিছু চাচ্ছি না। এখন গোল না পাকিয়ে সরে পড়ো তোমরা। পরে কিন্তু পস্তাতে হবে। এখান থেকে কাউকেই জীবিত পাবে না।
হুমকি শোনে পুলিশ বাহিনী আপাতত পিছু হটে আরো কিছুক্ষণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিল।

ভেতরে অবস্থানরত তরুণীদের অনেকের আত্মীয়-স্বজনও পার্লারের সামনে চলে এসেছে। সাংবাদিকরা তাদের সাক্ষাৎকার নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
-আচ্ছা, আপনি বলছেন আপনার মেয়ে ভেতরে আটকা পড়েছে। তার নামটা একটু বলবেন প্লিজ?
-তারা। ভদ্রমহিলা কাঁদতে কাঁদতে জবাব দিলেন।
- কী বললেন? একটু স্পষ্ট করে বলেন।
-তার নাম তারা। পেছন থেকে আরেকজন ভদ্রমহিলা উত্তর দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলেন, আপনারা কোন চ্যানেলের লোক ভাইজান?
-আমরা আর টিভি থেকে এসেছি।
-ওরে আল্লারে! আমারে কি অহন আর টিভিতে সরাসরি দেখাইতেসে?
-জ্বি। আমরা লাইভ সংবাদ সম্প্রচার করছি।
-আরেকটা প্রশ্ন জিগাই, ভাইজান?
-জ্বি, জিগান। সাংবাদিক অনুমতি দিলেন।
-এইটা তো অহন লাইভ দেখাইতেছে। পরে কি আবার পুনঃপ্রচার করা হবে? ইয়ে মানে আমি তো দেখতে পারতেসি না।
-হতেও পারে। এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। আচ্ছা, যিনি ভেতরে আটকা পড়েছেন, মানে- তারা, তিনি আপনার কী হয়?
-আমার পাশের বাড়ির মেয়ে। মানে উনার মেয়ে। সামনে দাড়িয়ে থাকা কান্নারত মহিলাকে দেখিয়ে হাসিমুখে কথাগুলো বলল আলোচ্য মহিলাটি।
-মা, মা, দেখো দেখো তারা আপু ফেসবুকে ছবি পোস্ট দিসে!
পাশে দাড়িয়ে থাকা মেয়ের চিৎকারে সবাই তার দিকে ছুটল।

মোবাইলে দেখা গেল এক তরুণীর লাস্যময়ী মুখ। পাশে কালো পোশাকে হাতে রাইফেল নিয়ে দাড়ানো একটি ছেলে। ছবির নিচে ক্যাপশন:
আইএস যোদ্ধার সাথে! একজন সাংবাদিক খেয়াল করলেন ছবিটা পোস্ট হয়েছে- ফাইভ মিনিটস অ্যাগো। কিন্তু লাইক পড়ে গেছে অলরেডি ৫১২ টা। বিচক্ষণ সাংবাদিক মুহুর্তে বুঝে নিলেন ছবিটা ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়বে আতি শিগ্গির। আলোচ্য বিচক্ষণ সাংবাদিক কিন্তু আরেকটা ব্যাপার লক্ষ্য করতে ব্যর্থ হলেন। অন্য একজন পথচারী ব্যাপারটা ঠিকই ধরে নিলেন, আচ্ছা আপু আপনি বললেন মেয়ের নাম তারা, কিন্তু এখানে দেখতে পাচ্ছি মেয়ের নাম জান্নাতুল জারা। ব্যাপারটা কি একটু বুঝিয়ে বলবেন? ভদ্রলোক সাংবাদিকদের মতোই প্রশ্ন রাখলেন।
ভদ্রমহিলা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আরে বাবা! আমার মেয়ে ভেতরে বিপদের মুখে আছে। পারলে আগে তাকে উদ্ধার করুন। তা না। আপনারা এখানে গবেষনা শুরু করে দিয়েছেন তার নাম নিয়ে।
পেছন থেকে তখন একটা কম বয়সী মেয়ে এগিয়ে এসে বলল, আমি তারা আপুর কাজিন হই। আসলে জান্নাতুল জারা হল আপুর ফেসবুকীয় নাম।
-ও। মানে, ওটা আপনার আপুর ছদ্ম নাম। সাংবাদিকটি জিজ্ঞেস করলেন।
-জ্বি। এমন আরো অনেক নাম আছে আপুর!
-অনেক নাম! যেমন বলুন তো! সাংবাদিকের অবাক কণ্ঠ।
-এই যেমন এস এফ মাহি, নীড় হারা পাখি, বেলা শেষে ক্লান্ত পাখি, অমি চৌধুরী, আর আর..
-আর?
-ভুলে গেছি। মনে পড়ছে না। চমৎকার মুচকি হেসে টিভি ক্যামেরায় তাকিয়ে থাকল মেয়েটি।
-বাই দ্যা বাই। কিছু মনে করবেন না। আপনারও কি এমন করে অনেক নামে ফেসবুক আইডি আছে?
-সাক্ষাৎকার ভিন্নদিকে মোড় নিচ্ছে দেখে আশু বিপদের গন্ধ পেল মেয়েটি। তাই সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই সটকে পড়ল মুহুর্তে।

একটু পরেই মায়ের মোবাইলে তারার ফোন থেকে কল আসল। এতোক্ষণ বন্ধ ছিল তারার ফোন। মায়ের হাত কেঁপে উঠল! তাড়াতাড়ি ফোনটা রিসিভ করলেন দুরুদুরু বুকে।
-মা! তুনাকে দাও! মেয়ের ঝাঁঝালো কণ্ঠ শুনে আরো ভড়কে গেলেন মা।
-তুনা তো সাক্ষাৎকার দিয়েই চলে গেছে!
-চলে গেছে! মা তুনাকে জিজ্ঞেস কর তো, সে সবকিছু বলে দিল কেন?
-তুনা আবার কী বলল!
-ঐ যে টিভিতে বলল, আমার অনেকগুলো নাম!
-হু, বলেছে তো কি হয়েছে? তুই কেমন আছিস, সেটা বল? ওরা মারধর করছে না তো?
-না মা ওরা তার চেয়েও বেশি কিছু করছে! এর চেয়ে মারধোর করা অনেক ভাল ছিল।
মা হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বললেন,
মা আল্লাহকে ডাক মা। আল্লাহকে ডাক!
-ডাকব, কিন্তু তার আগে তুমি ঐ তুনাকে গিয়ে আমার হয়ে একটা চড় মারবা। সে সাক্ষাৎকারে আমার নামগুলো বলে দিল কেন?
-নাম বলেছে তো কি হয়েছে? কাঁদতে কাঁদতেই মা আবার প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করলেন।
-আরে সবাই দেখছে না? আমার প্রেস্টিজ সব পাংচার হয়ে গেল না? এখানেও তো আমাদের টিভি চালানো। এখন আবার জঙ্গীগুলো আমার সাক্ষাৎকার ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড দেয়াবে। আমাকে নাকি সব স্বীকার করতে হবে! বলেই মেয়ে কান্না জুড়ে দিল।
মায়ের রাগ উঠে গেল।
-তুই কী স্বীকার করবি? স্বীকার তো করবে ওরা! অন্যায় ওরা করেছে!
-তুমি বুঝবে না মা। আমি রাখি। ওরা রাখতে বলছে!

মায়ের সাথে মেয়ের এই কথাবার্তা মুহুর্তে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে সমর্থ হল টিভি সাংবাদিকরা। গোটা বাংলাদেশের সবাই তখন টিভি ফেলে তারার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট- জান্নাতুল জারা সার্চ করা শুরু করল। সবার সুবিধার্থে জান্নাতুল জারার ফেসবুক ওয়াল টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করল দেশের সকল টিভি চ্যানেল। একটু পরই জঙ্গীটির সাথে তারার সাক্ষাৎকার আপলোড হয়ে গেল জান্নাতুল জারার ফেসবুক প্রোফাইলে।
ভিডিওতে দেখা গেল তারা একটা চেয়ারে বসে পা ডুবিয়ে রেখেছে একটা পানিভর্তি গামলায়। সামনেই কালো পোশাক পরিহিত, হাতে একটা ছুরি নিয়ে বসে থাকা এক জঙ্গী। জঙ্গী কথা বলা শুরু করল।
-তা এই যে তোর এতো এতো ফেসবুক আইডি। এইগুলো ক্যান করছিস? একটা আইডি দিয়েই তো সব হয়!
প্রশ্ন শুনে তারা কান্না শুরু করল।
-কানলে কোন লাভ নাই! ঠিকঠাক মতো উত্তর দে। নইলে তোর শরীর থেকে মাথা আলাদা করে ফেলবো।
তারা কাঁদতে কাঁদতে বলল,
-আমার তো বয় ফ্র্যাান্ড কয়েকটা, তাই একেক জনের সাথে একেক আইডি দিয়ে যোগাযোগ করতে হয়। (কান্না)
-ও... বয় ফ্র্যান্ড একটা রাখলে হয় না? জঙ্গিটি কর্কশ গরায় জিজ্ঞেস করল।
-না। সারাদিন বাসায় একা একা বসে থাকি। মা বাবা বাইরেও যেতে দেয় না। আমার সময় কাটবে কিভাবে বলুন? একজন বয় ফ্র্যান্ড তো সারাক্ষণ সময় দিতে পারে না। ছেলেদের কতো কাজ!
-সময় কাটাতে হলে কি কেবল ছেলেদের সাথে চ্যাট করতে হবে? অন্য কাজ নাই? এই যেমন বই পড়ে সময় কাটাতে পারিস, বা গান শুনে।
-আমার ওসব ভাল্লাগে না।
-তাহলে একটা আইডি দিয়েও তো সবার সাথে যোগাযোগ রাখা যায়।
-না, যায় না। ছেলেগুলা আবার খুব জেলাস হয়ে থাকে। আইডি আ্যকটিভ দেখলেই বুঝে নেয় আর কারো সাথে চ্যাট করছি! আমাকে আপনি প্লিজ ছেড়ে দেন। কথা দিণাম এখন থেকে একটা আইডি ইউজ করব। (কান্না)
ভিডিও শেষ।

ভিডিও শেষ হবার একটু পরেই এলাকার রিয়াদকে দেখা গেল পুলিশ ব্যারিকেডের পাশে দাড়িয়ে চিৎকার দিতে।
“জঙ্গী তোমরা এগিয়ে চল। আমরা আছি তোমার সাথে!” হাত নাড়তে নাড়তে মিছিলের ভঙ্গিতে রিয়াদ চিৎকার দিচ্ছে।
“জান্নাত জারার ফাঁসী চাই। দিতে হবে, দিতে হবে।”
“জঙ্গী তোমার ছুরিখানা কাজে লাগাও এক্ষুনি! এক্ষুনি, এক্ষুনি, এক্ষুনি, এক্ষুনি। বেঈমান জারার মুন্ডু কাট, এক্ষুনি. এক্ষুনি।”

তার কথাগুলো সবার কাছে স্পষ্ট হলে কেউ একজন চিৎকার করে বলল, এই শালা জঙ্গীদের মদদদাতা! ধর শালারে!
চিৎকার কানে যেতেই রিয়াদ বুঝতে পারল তার বড্ড ভুল হয়ে গেছে। পাবলিক সেন্টিমেন্ট বড় ভয়াবহ জিনিস! মুহুর্তে তাই সে দিল একটা ভোঁ দৌড়। তার পেছন ছুটল র‌্যাব, পুলিশ, সাধারণ জনগণ আর সাংবাদিকরা তাদের ক্যামেরা সহ।

ছোটবেলা থেকে দৌড়ে দক্ষ রিয়াদের সাথে কেউ পেরে উঠছিল না। যারা টিভিতে বসে ধাওয়ার দৃশ্য দেখছিল তাদের মনে হল র‌্যাব আর পুলিশ দৌড়ে ছেলেটার সাথে পারছে না। সবকটা র‌্যাব আর পুলিশকে ছাটাই করে রিয়াদের মত দক্ষ দৌড়বিদদের নিয়োগ দেয়া উচিত। দৌড়ে পেরে উঠছে না দেখে এক পুলিশ অফিসার বাধ্য হয়ে গুলি ছুঁড়ে দিল রিয়াদের পিঠ বরাবর। হয়তো মারা যাবে রিয়াদ। কিন্তু তাতে কী? পুলিশদের হাতে তো এখন আইন তুলে নেয়ার অগাধ ক্ষমতা। বছর কয়েক আগে হলেও এমন পিঠ বরাবর গুলি করার সাহস দেখাতে পারতো না পুলিশ অফিসারটি। পুলিশ হয়েছে বলে নিজেকে ধন্যবাদ দিতে দিতে অপেক্ষায় থাকল রিয়াদের অনিবার্য মৃত্যুর। কিন্তু না, লক্ষ্যভ্রষ্ট গুলি গিয়ে লাগল রিয়াদের ডান পায়ে। হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল রিয়াদ। দৌড়ে গিয়ে রিয়াদকে গ্রেফতার করল পুলিশ। যে পুলিশ অফিসারটি গুলি করেছিল তাকে সবার আগে আগে দেখা গেল। তাকে বলতে শোনা গেল- আমি! আমি! আমি নিজ হাতে জঙ্গীটাকে গুলি করেছি! টিভি ক্যামেরা অসীম সাহসী সেই পুলিশ অফিসারকে ফোকাস করল। ফোটো সাংবাদিকেরা বেশ কয়েকটি ছবি নিল তার। জঙ্গী রিয়াদকেও ফোকাস করা হল। কেউ একজন এসে বলল, অফিসার! যেহেতু আপনি জঙ্গীটাকে গুলি করে ধরাশায়ী করেছেন, আপনি তার হাত ধরে থাকুন। আপনারা দুজন একসাথে দাড়ান। আমাদের ছবি তুলতে দিন। হুটহাট বেশ কিছু ছবি তোলা ও ভিডিও করা হল। অনলাইন মিডিয়াগুলো সংবাদ পোস্ট করে দিল, জঙ্গীর মদদদাতা রিয়াদ ধৃত!

কিন্তু কিছুক্ষণ পর সবার ভুল ভাঙল। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেল, রিয়াদ জান্নাতুল জারার প্রেমিক। তার কাছে জারার সব বেঈমানী ফাঁস হয়ে যাবার পর সে নিজের আবেগ আর ধরে রাখতে পারেনি বলে তার শাস্তি চেয়েছিল। উপস্থিত জনগণ রিয়াদের ব্যথায় কাতর হল এবং জান্নাত জারার ফাঁসী চাইতে থাকল মনে মনে। কিন্তু পুলিশের উর্ধ্বতনরা রিয়াদের কথাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারলেন না। এই মুহুর্তে কোন রকমের অসতর্ক তারা হতে চাচ্ছেন না। তাই তাকে অ্যারেস্ট করে থানায় পাঠিয়ে দেয়া হল।

ওদিকে সিলেটের চেয়ে বেশ দূরে ব্রাম্মণবাড়িয়া শহরের একটা বাড়িতে ঘটে গেল আরেকটা ঘটনা। সে বাড়ির সবাই মিলে টিভিতে জিম্মি ঘটনা লাইভ দেখছিল। তারার ফেসবুক ভিডিওটি যখন টিভিতে দেখানো হচ্ছিল তখন এ বাড়ির গৃহকর্ত্রী অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে গেলেন। গৃহকর্তা বাবুল রায় চিৎকার করে বলে উঠলেন, এ যে রাজীব! আমার ছেলে রাজীব এখন জঙ্গী! এটা কিভাবে সম্ভব! এ ঘটনা দেখার আগে আমার মৃত্যু হওয়া ভাল ছিল। ছি ছি ছি! আমি নিজের দলে কিভাবে মুখ দেখাবো! হায় হায়! এটা কী হল!

ঘটনা হল। তারার সাক্ষাৎকার নেয়া জঙ্গী ছেলেটি এ বাড়ির একমাত্র ছেলে রাজীব। রাজীবকে দেখে সবাই অবাক হল। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেল, গতকাল রাতে রাজীব মৌলভীবাজারে খালার বাড়ি যাচ্ছে বলে বের হয়েছিল। তাড়াতাড়ি রাজীবের খালার বাড়ি কল দিয়ে জানা গেল না, সে তার খালার বাড়ি যায় নি! রাজীবের বাবা চিৎকার দিয়ে বলে ওঠলেন, ওরে রাজু, থানায় যা তো । এখনো হয়তো কেউ তাকে দেখেনি । তাড়াতাড়ি গিয়ে একটা জিডি করে আয়! আর আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। কেউ আসলে বলবি, আমি ইন্ডিয়া গেছি। বিরোধী দল করি বলে তো মহা সমস্যা। রাজীবের পরিচয় জানার পর আমাকে গ্রেফতার করতে ছুটে আসবে সবাই। আমি গেলাম রে। ফিরে এসে সরকারি দলে নাম লেখাতে হবে দেখছি!

জিম্মি দৃশ্যপটে আবার ফেরা যাক। ঘটনা শুরুর প্রায় ৫ ঘন্টা অতিবাহিত। ইতিমধ্যেই জিম্মি সবার নাম ও পরিচয় জানা গেছে। যারা জিম্মি হয়েছে তারা হল:
১. তারা। পুরো নাম, ফেরদৌসী আক্তার। দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। বাবা জমির আহমেদ। পেশা ব্যবসায়ী।
২. লুৎফন্নাহার তারিন। নবম শ্রেণী। বাবা, আকরাম খান। সিলেট অনার্স কলেজের অধ্যাপক।
৩. ঐন্দ্রিলা ধর। এইচএসসি পরীক্ষার্থী ( আগামীকালকের পরীক্ষা উচ্চতর গণিত।) বাবা, ডা. শুভ্র ধর।
৪. নীলিমা কবির। প্রকৌশলী মি. হাসনাত কবীরের স্ত্রী। দু সন্তানের মা।
৫. বাবলি আক্তার। অষ্টম শ্রেণী। স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামের মেয়ে।
৬. লাবণি আক্তার। বিউটিশিয়ান।
৭. সুবর্ণা বেগম। বিউটিশিয়ান।
৮. আঁখি আক্তার। বিউটিশিয়ান।

জিম্মিদের নিকটাত্মীয়রা ইতোমধ্যে এসে ঘটনাস্থলে পৌছে গেছেন। তাদের সবাইকে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে একত্রে রাখা হয়েছে। মাঝে অবশ্য সাংবাদিকদের অনেকেই আছেন।
হঠাৎ তারিনের মোবাইল থেকে কল আসল তার মার মোবাইলে। আর সবার মতো এতোক্ষণ তারিনের মোবাইলও সুইচড্ অফ ছিল। মা ঝটপট কল রিসিভ করলেন। পুলিশের অনুরোধে লাউড স্পিকার চালু করা হল।
-মা, মা। তুমি শুনতে পারছ আমার কথা?
-হ্যারে মা! শুনতে পাচ্ছি। (কান্না)
-উফ মা! এটা কান্নার সময় না। আমি ভীষণ একটা ঝামেলায় পড়েছি।
-কী ঝামেলা মা? তাড়াতাড়ি বল।
-মা এখানে সবার ক্ষিধা পেয়েছে। রান্নার আয়োজন করার হচ্ছে। ওদের সাথে রান্নার সব সরঞ্জাম আছে মা। আমাকে তারা বলছে, আলু ভর্তা করতে।
-আহ! বাঁচালি মা। মা যেন হাঁফ ছেড়ে বাাঁচলেন। বললেন, সবচে সহজ আইটেমটাই তোকে করতে দিয়েছেরে মা।
-কী বল সহজ! আমার তো কান্না পাচ্ছে। আমি কি কখনো আলু ভর্তা করেছি? তুমিই বল মা! আমি তো কিচ্ছু জানি না।
মা চোখের পানি মুছলেন।
-দাঁড়া, দাঁড়া আমি বলছি। তুই আলুগুলো আগে গরম পানি তে সিদ্ধ কর।
-মা তুমি বুঝতেস না কেন! আমি তো সিদ্ধ করাটাই পারি না, মা। বল তাড়াতাড়ি। দশটা আলু কতটুকু পানিতে সিদ্ধ করব। বরং এক কাজ কর মা। ডিটেলস মেসেজ দিয়ে পাঠাও। আমি রিকোয়েস্ট করে আমার মোবাইল ওপেন রাখছি। তাড়াতাড়ি কর মা। তাড়াতাড়ি।
মা মেসেজ লিখতে বসে গেলেন। তার হাত কাঁপছে। বানান ঠিকমতো লিখতে পারছেন না। তবু চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার মেয়েকে এ অপমান থেকে রক্ষা করতেই হবে তাকে।

জঙ্গীদের সাথে যোগাযোগে আর কোন অগ্রগতি হয় নি। এটুকু বুঝা যাচ্ছে এখনো তারা অতোটা ভায়োলেণ্ট হয় নি জিম্মিদের সাথে। তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারছে না। জিম্মিদের উদ্ধারে অপারেশন চালাবে, কি চালাবে না এখনো দ্বিধাদন্দ্বে আছে। ইতিমধ্যে সোয়াত টিমও ঘটনাস্থল এসে পৌছে গেছে।

মাঝখানে কিছুক্ষণ উত্তেজনাহীন কাটার পর ঐন্দ্রিলার ফেসবুকে নতুন ভিডিও আপলোড হওয়া মাত্রই সবাই আবার নড়েচড়ে বসল।
বয়কাট চুলের ঐন্দ্রিলার পরনে একটা টি শার্ট ও ফেড জিনস। তার সামনে বসে আরেক জঙ্গী। হাতে একে ৪৭ টাইপের একটা রাইফেল। পরনে কালো পোশাক।
-এই মেয়ে তোমার কিছু বলার থাকলে বল। ঐন্দ্রিলার দিকে তাকিয়ে ধমকে উঠল জঙ্গিটা।
- কাল না আমার পরীক্ষা। আমাকে ছেড়ে দিন। (কান্না)
-কাল কি পরীক্ষা?
-এইচএসসি ফাইনাল।
-কোন পরীক্ষা?
-হায়ার মেথ।
-কী? হায়ার মেথ পরীক্ষা কাল! আর আজ তুমি এসছো সাজগোজ করতে? পড়বা কখন? জঙ্গীটা অবাক হল বলে মনে হল।
-পড়া তো আগেই শেষ। তাছাড়া রুনা পড়ছে, সাবিহা পড়ছে।
-রুনা, সাবিহার পড়া দিয়ে তোমার কী হবে?
- আমরা সবাই মিলেমিশে পরীক্ষা দেই তো। তাই একেকজন একক অংশ পড়ে। আর তাছাড়া তাছাড়া...
-তাছাড়া কি?
-তাছাড়া স্যাররা তো আছেনই।
-স্যাররা কী করবেন?
-স্যাররা আমাদের সাহায্য করবেন। সবাই মিলে আমরা ঠিক জিপিএ ৫ পেয়ে যাবো নিশ্চিত। ঐন্দ্রিলা কিছুটা স্বাভাবিক এখন।
-ও আচ্ছা। তাহলে এতো এতো জিপিএ ৫ এর রহস্য তবে এটাই।
-জ্বি। কিছুটাতো বটেই।
- বুঝলাম। আর আজকে এখানে কী করাতে এসেছো?
-আজ চুল কাটলাম। লম্বা চুল লুক-আফটার করা খুব কষ্টের আর তাছাড়া লুকটাও কেমন গ্রাম্য গ্রাম্য লাগে।
-আমার তো মনে হয় তোমাকে লম্বা চুলেই ভাল লাগবে। কি বল সবাই? জঙ্গীটি তার সঙ্গিদের দিকে তাকাল।
-ঠিক ঠিক। সমস্বরে সবার চিৎকার শোনা গেল।

ভিডিও শেষ হওয়া মাত্রই খবর এল আমাক বার্তা সংস্থায় আইএস বাংলাদেশের সিলেট শহরের এই জিম্মি ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। তারা বলেছে জিম্মিদের কাউকেই আর বাঁচিয়ে রাখা হবে না।

হঠাৎ করে উর্ধ্বতন মহল থেকে নির্দেশ আসল টিভি চ্যানেলে এ ঘটনাটি লাইভ সম্প্রচার করা যাবে না। জিম্মি হয়েছে সমস্যা নেই। কিন্তু সেই জিম্মি ঘটনা সরাসরি দেখিয়ে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ণ করা যাবে না। যদি কোন চ্যানেল এ আদেশ অমান্য করে তবে সেই চ্যানেল অবিলম্বে বন্ধ করে দেয়া হবে। যদিও চ্যানেল বন্ধ করলে ভাবমূর্তি কতটুকু রক্ষা পাবে এ বিষয়ে কেউ কোন প্রশ্ন তুলল না।

যাই হোক, আমাক বার্তা সংস্থার খবরটি পেয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতরা ভাবলেন আর দেরী না। এক্ষুনি অপারেশন চালাতে হবে। তারও আগে অপারেশনের নাম ঠিক করতে হবে। বেকারী হাউজে অপারেশনের নাম রাখা হয়েছিল অপারেশন থান্ডারবোল্ট। এবার কী রাখা যায়? পুলিশ বাহিনী থেকে প্রস্তাব এলো নাম হবে অপারেশন অ্যগেইনস্ট বিউটি পার্লার। র‌্যাব আর সোয়াত বাহিনী নামটির তীব্র প্রতিবাদ করল। তারা যুক্তি দেখাল, তাদের অপারেশন তো জঙ্গীদের বিরূদ্ধে, কোন বিউটি পার্লারের বিরূদ্ধে তো না। তাই তারা অন্য নাম প্রস্তাব করল। দীর্ঘ এক ঘন্টা পর ঠিক হল নাম রাখা হবে, অপারেশন লিপস্টিক! সবার কাছেই নামটি বেশ জুতসুই লাগল।

এরই মধ্যে স্থানীয় মসজিদের ইমাম শুক্রবারের জুমআর নামাজ শেষে চলমান জিম্মি ঘটনার আশু অবসান কামনা করে দোয়া পাঠ করলেন। দোয়ার আগে তিনি বয়ানে বললেন, আল্লাহর গজব পড়েছে আমাদের দেশের উপর। তাই উপুর্যুপরি দুই-দুইটা জিম্মি ঘটনা। আর এইসব বিউটি পার্লারে যতসব নাফরমানি কাজ হয়। মেয়েদের সাজগোজের দরকার কী? তারা এমনিতেই সুন্দর। আল্লাহ তাদেরকে হিজাবের ভেতর থাকতে বলেছেন। আমরা আল্লাহর কথা ভুলে গিয়ে দুনিয়াদারী নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। পুরষদের দেখানোর জন্য আমরা বিউটি পার্লারে গিয়ে সাজগোজ করি। নাউজুবিল্লাহ। প্রিয় মুসুল্লিয়ানগণ আজ থেকে আপনারা খেয়াল করবেন, আপনাদের মেয়েরা যেন আর বিউটি পার্লারে না যায়। সবসময় ওদের ওপর চোখ রাখবেন। বাসায় ঘোষনা করে দেবেন, বাড়ির মেয়েরা যদি বিউটি পার্লারে যায় তবে তাদের ত্যাজ্য কন্যা ঘোষনা করা হবে।
একথা শুনে পেছন থেকে কে জানি বলে উঠল, হুজুর আপনার মেয়েটাও তো পার্লারে আটকা পড়সে শুনলাম।
হুজুর কথাটা শুনেও না শুনার ভান করলেন। সকলের সব কথা শুনতে নাই । পাপ হয়, মহা পাপ। হুজুর তাড়াতাড়ি দোয়া শেষ করলেন।

জুমআর নামাযের খানিক পরেই অপারেশন লিপস্টিক শুরু হল। শুরু হল এবং শেষ হয়ে গেল। বিনা রক্তপাতে, বিনা গুলাগুলিতে জঙ্গীদের সবাই ধরা পড়ল। তারা ছিল মোট পাঁচ জন। আরো আশ্চর্যের ব্যাপার হল তাদের কাছে ছুরি ছাড়া আর কোন ভয়াবহ অস্ত্র পাওয়া গেল না। একে ৪৭ এর মতো রাইফেলগুলো মোটেও সত্যিকারের রাইফেল ছিল না। ওগুলো ছিল কাঠের তৈরী। একেবারে একে ৪৭ এর মতো করে তৈরী করা। গুলাগুলির যতো আওয়াজ এসেছিল, সবগুলো ছিল ক্যাসেট প্লেয়ারে রেকর্ডকৃত। তাদের জেরা করে এই নাটকের মূল হোতা জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক কয়েস সামীকে তার নিজ বাসা হতে পাকড়াও করা হল। ১২ ঘন্টা জিম্মি নাটক করার জন্য তিনি উতোমধ্যেই সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ও যে কোন শাস্তি মেনে নিবেন বলে অঙ্গিকার করেছেন। তাকে নিয়ে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রধানরা বসলেন এমন নাটক করার কারণ জানার জন্য।

-সত্যি কথা বলতে কি আমার একটা কাহিনীর দরকার ছিল। অনবরত লিখতে লিখতে ভেতরকার কাহিনী তৈরী করার ক্ষমতা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তাই হঠাৎ মনে হল, একেবারে রিয়্যাল লাইফ স্টোরি একটা লেখা যাক। তাই পাঁচজন মোটামোটি শিক্ষিত মাস্তানদের বিভিন্ন জায়গা থেকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়া করলাম। নির্ধারিত বিউটি পার্লারটি তাদের দেখিয়ে দিলাম। ঘটনা শুরু হল এবং টিভিতে পুরো ঘটনা দেখে দেখে গল্পটা লিখে ফেললাম। আমার পরিকল্পনাটা শতভাগ সার্থক। আমি নিজেও ভাবিনি ব্যাপারটা এতো চমৎকার একটি গল্পে পরিণত হবে। আমি সন্তুষ্ট। গল্পটা লিখতে পেরে আমার লেখক মনও সন্তুষ্ট। এবার আপনার আমায় যে কোন শাস্তি দিন, আমি মাথা পেতে নেব।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৩১
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×