somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

SonoLuminescence (শব্দ থেকে আলো) ও ধর্মান্ধতা

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পৃথিবীতে জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, ভবিষ্যতে এনার্জির (বিদ্যুত) অভাবে অনেক জাতিকে চরম মূল্য দিতে হবে জীবন ও জীবিকায়। এর সমাধানে যে এনার্জি সোর্সের কথা বিজ্ঞানীরা ভাবছেন সেটা সূর্য্য যেভাবে তার এনার্জি জেনারেট করে (এটম ফিউশন দ্বারা), সে ফিউশন বিক্রিয়াকে ইউজ করে সুর্য্যের মত অফুরন্ত এনার্জি 'তৈরী' করা। কিন্তু প্রবলেম হল এই বিক্রিয়ার (দুটা হালকা অনু কে ফিউশন করা) জন্য যে তাপ মাত্রা দরকার (১৫০, ০০০, ০০০ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড) সেটা সুর্য্যের মাঝেই আছে- পৃথিবীতে সেটা তৈরী করা অনেক অসাধ্য। দুটা অনু যখন প্রচন্ড তাপমাত্রায় তাদের নিউক্লিূয়াসগুলি 'জোড়া' লাগে, তখন সে নতুন অনু (এটম) এ রূপান্তরিত হয় আর এর সাথে অনেক এনার্জি ও পরমানু নিউট্রন কে রিলিজ করে। অনেক সাধনার পর Joint European Torus (JET), the world's largest fusion device, কয়েক সেকেন্ডের জন্য মেগাওয়াট পাওয়ার জেনারেট করতে পেরেছে ফিউশনের মাধ্যমে- যেটা এখন পর্যন্ত্য ওয়ার্ল্ড রেকর্ড।
নিচে সহজ ভাবে বুঝার জন্য ছবি দেখানো হল



কিন্তু কিভাবে ফিউশন ঘটানোর জন্য এই তাপমাত্রা পাওয়া যায়??? ১৯৩০ এর শতকে জার্মান বিজ্ঞানীরা প্রথম শব্দ থেকে আলো তৈরী হওয়ার অবলোকন করেন। যেখানে পানির মাঝে যখন উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সীর শব্দ প্রবাহিত করা হয়, তখনই দেখা যায় যে বিন্দু আকারের বুদবুদ (যেটা নেগেটিভ প্রেশার থেকে তৈরী) যেটা ফেটে (কলাপ্সড) গিয়ে আলো তৈরী করে ..সেই আলো দেখা যায় এক সেকেন্ডের ১০, ০০০,০০০,০০০ ভাগের একভাগ সময়। এটাই হল SonoLuminescence। নিচের ইউটিউব ভিডিতে আরো বিশদ ভাবে বলা আছে। আর বিজ্ঞানীরা দেখতে পেলেন যে এই আলো তৈরীর সময় তাপমাত্রা প্রায় সুর্য্যের পৃস্ঠের তাপমাত্রার সমান হয়।
এখানে ও খুব বিশদ কিন্তু সহজ ভাবে ব্যাখা আছে


'পিস্তল চিংড়ি' লিখে গুগুলে সার্চ দিন তাহলে দেখতে পারবেন কিভাবে এই চিংড়ি তার শিকার ধরার সময় যে প্রচন্ড শব্দ করে তার সাড়াশি দিয়ে..তাতেও পানিতে আলো ও তাপমাত্রা জেনারেট করে।


SonoLuminescence কিভাবে কাজ করে সেটা কিন্তু ফিজিজিস্টরা এখনও শিউর না এবং এটা এখনও পর্দাথ বিজ্ঞানে আনসলভড প্রবলেম বলে 'বিখ্যাত'


যদি সুর্য্যের পৃস্ঠের তাপমাত্রার সমান জেনারেট হয়, তাহলে তো SonoLuminescence দিয়ে হালকা দুটি এটম কে ফিউশন বিক্রিয়া করানো যেতে পারে। যদি SonoLuminescence এর সাথে সাথে পরমানু নিউট্রন কে ডিটেক্ট করা যায়, তাহলেই বলা যাবে যে ফিউশান বিকৃিয়া সম্পূর্ন হয়েছে। এই আইডিয়ার উপর ভিত্তি করেই ভারতীয় বংশভুত বিজ্ঞানী Rusi Taleyarkhan আমেরিকার অক রিজ ল্যাবে প্রথম পেপার পাবলিশ করেন বিখ্যাত জার্নাল Science এ ২০০২ সনে যে উনার SonoLuminescence এক্সপেরিমেন্টের সময় উনি নিউট্রন পরমানু ডিটেক্ট করেছেন। এই পেপার সারা পৃথিবীতে হইচই ফেলে দেন...সবাই উনার নোবেল পুরস্কার পাওয়া কিছুদিনের মাঝেই বলে প্রেডিক্ট করা আরম্ভ করেন। নিচে দেখুন সেই ঝড় নিয়ে প্রতিবেদন
Rusi's Storm for Bubble Fusion
যে মুহুর্তে এটা পাবলিশ, সে সময় থেকেই তাবদ নিউক্লিয়ার ফিউশন বিজ্ঞানীদের মাথা খারাপ অবস্হা...সবাই আদাজল খেয়ে লাগল এই এক্সপেরিমেন্ট কে রিপিট করার জন্য কিন্তু কারো পক্ষেই সম্ভব হল না সেটা রিপিট করা... সবার মতে উনি যে নিউট্রন ডিটেক্ট করেছেন, সেটা ব্যাকগ্রাউন্ড নিউট্রন... SonoLuminescence থেকে না। ফলাফল Rusi Taleyarkhan এর বিজ্ঞানী হিসাবে পতন। কিন্তু উনি অনড় এবং এখনও উনি উনার যায়গায় স্হির বিশ্বাসে আছেন ...অনেকেই ইদানিং বিশ্বাস করতে আরম্ভ করছে যে Rusi Taleyarkhan হয়ত সঠিক ছিলেন। বিবিসি ২০০৫ সনে নিজের টাকায় এই এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে একটা বিশদ ডকুমেন্টারি তৈরী করে যেটা আপনি নিচের ইউটিউব লিংকে দেখতে পারেন


কিন্তু ধর্ম এল কিভাবে???

বাইবেল বিজ্ঞানীরা এই যে শব্দ থেকে আলো তৈরী হয় সেটা কে GOD এর বলা শব্দ 'Let There Be Light' দিয়ে এই বিশ্ব ব্রম্মান্ড কে সৃস্টি কে প্রমান হিসাবে প্রতিস্ঠা করতে চাইছেন। শয়ে শয়ে ওয়েব সাইট বানানো হয়েছে এটা কে প্রমান হিসাবে ব্যবহার করে
"“In the beginning God created the heaven and the earth. And the earth was without form, and void; and darkness was upon the face of the deep. And the Spirit of God moved upon the face of the waters. And God said, Let there be light: and there was light. And God saw the light, that it was good: and God divided the light from the darkness. And God called the light Day, and the darkness he called Night. And the evening and the morning were the first day.” (Genesis 1:1-5)"
যেমন বাইবেল সাইন্স ফোরাম এর সাইট
GOD created Universe through sonoluminescence
GOD and SonoLuminescence


ভাগ্য ভাল এখনও অন্য ধর্মের লোকজন এটার খবর পায় নাই... তাহলে তারাও এটা নিয়ে নাড়াচাড়া করত...অবশ্য একজন কে পেয়েছি উনি বলছেন পানির বদলে নাকি অলিভ অয়েলে শব্দ দিয়ে আলো এর কথা লিখা আছে যার মাধ্যমে পৃথিবী সৃস্টি করার কথা উনার ধর্মের গ্রন্হে নাকি লিখা আছে...

যুগ যুগ ধরেই দেখে আসছি বিজ্ঞানরা কোন কিছুর আবিস্কারের পরে ই এক দল লোক জন দৌড়ে এসে বলতে আরম্ভ করেন যে এটা তো আমাদের গ্রন্হেই আগেই বলা আছে...একদিন ও দেখলাম বিজ্ঞানীদের আগে ধর্মীয় গ্রন্হ পড়ে কিছু আবিস্কার করতে....
ACCEPT THE SCIENCE.....SCIENCE IS THE BEAUTY OF NATURE
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:২৫
১৬টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×