somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কার্টুনিস্ট আরিফের মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন (সংকলিত রি-পোস্ট)

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কার্টুনিষ্ট আরিফকে নিশ্চয়ই আমাদের সবার মনে আছে। সেই যে প্রথম আলোর আলপিন বিভাগে মোহাম্মদ বিড়াল ঘটিত একটি নির্মল বিনোদনের কার্টুন আঁকতে গিয়ে নিরীহ ছেলেটিকে আচমকা মুখোমুখি হতে হয়েছিল এক নিষ্ঠুর ও দানবীয় শক্তির বিরুদ্ধে প্রায় একা? দেশে এত ভয়ংকর কোন অপরাধী ছিল বলে যেই ঘটনার আগে আমরা কেউ জানতাম না? সেই ঘটনা বোধ করি কাউকে নুতন করে স্মরন করাতে হবে না। আরিফের সাথে আমার সামান্য পরিচয় হয়েছিল আমার ব্লগে ক’মাস আগে। তখন সে মানসিকভাবে বেশ বিপর্যস্ত, মামলা হামলার ঝুট ঝামেলা নিয়ে কাটছে এই তরুনের জীবন। সাথে নানান হুমকি ধামকি এসব তো আছেই। জলের মত টাকা ঢালতে হচ্ছে মামলার পেছনে, আর্থিক সংগতি বলতে গেলে তেমন নেই। সেসব বলে আর কলেবর বৃদ্ধি করতে চাই না।

দুদিন আগে আবারো আমার ব্লগে দেখা। এবার বিপদ আরো ঘনীভূত। এই জীবনের সবচেয়ে বড় আপনজন মা গুরুতর অসূস্থ। তাঁর দুটো কিডনীই নষ্ট হয়ে গেছে। কিডনী ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে, তবে যতদিন না করা যায় ততদিন সপ্তাহে দুদিন করে ডায়ালাইসিস করে যেতে হবে। কি পরিমান শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রনার মাঝে এই মা ও ছেলের সময় কাটছে তা বলার কোন প্রয়োযন নেই। সাথে সাথে জীবনের চরম বাস্তবতা, অর্থ সংকট। এই চিকিতসা অত্যন্ত ব্যায় বহুল বলাই বাহুল্য। এই মা অনেক প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে অনেক আশা নিয়ে মানুষ করেছিলেন ছেলে আরিফকে।


আরিফের নিজের ভাষায় শুনুনঃ

নানীর কাছে শুনেছি আমার মায়ের বয়স যখন ১২ কি ১৩ বছর তখন আমার নানা আমার মা কে বিয়ে দেন। এটা বাল্য বিবাহ ছিল। বিয়ের দের বছর পর আমার জন্ম।

আমি তখন খুব ছোট ৮ কি ৯ বছর বয়স আমার, আর আমার ছোট বোনের বয়স ২ কি ৩। তখন আমার বাবা অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করে, এবং আমার মা কে ডিভোর্স দেয়, এর পর মা আমাদের দুই ভাই-বোনকে নিয়ে আমার নানার বাড়ি চলে আসেন। সেখানে-ই আমাদের স্কুলে ভর্তি করে দেন।কিন্তু বাবা কখনই আমাদের কোন খোজ খবর নেননি। বাবা আমাদেরকে ফেলে দিয়েছিল কিন্তু মা আমদেরকে ফেলেদেন নি। কারন- তিনি যে মা। মায়ের সাথে কি কখনও কার তুলনা হয়?! মা কি কখনও সন্তান কে ফেলতে পারে?!

২০০৬ সালে টি, আই, বি আয়োজিত কার্টুন কন্টেস্ট-এ কার্টুন পাঠানোর পর, মা কে বলেছিলাম মা আমি যদি পুরস্কার পাই তাহলে তোমাকে আমি একটা মোবাইল কিনে দেব।কারন মা থাকতো গ্রামে আর আমি তখন শহরে বড় মামার বাসায় থেকে লেখা করতাম। মা’র সাথে আমার খুব একটা যোগাযোগ হত না।
২০০৬ সালে টি, আই, বি আয়োজিত কার্টুন কন্টেস্ট-এ পুরস্কার পাওয়ার পর মা কে একটা মোবাইল কিনে দিয়েছিলাম। আমার মা এখনও সেই মোবাইলটাই ব্যবহার করে।

২০০৭ আমি তখন জেলে প্রায়-ই বাড়ি থেকে পাঠানো চিড়া বা মুড়ির ভিতর ১টা চিঠি পেতাম আমাকে লেখা মায়ের চিঠি। আমার ডিটেনশন থাকার কারনে আমার সাথে মা সহজে দেখা করতে পারতোনা। তাই মা আমাকে চিড়া বা মুড়ির ভিতর চিঠি পাঠাতো।
আমি যখন জেলে তখন আমার মা অনেক কষ্ট উপেক্ষা করে গ্রাম থেকে জীবনের প্রথম ঢাকা শহরে এসেছিলেন আমাকে এক নজর দেখতে।কিন্তু মা সেদিন আমার সাথে দেখা করতে পারেন নি।
পরে অন্য একদিন আমার চাচাতো ভাইয়ের সহযোগীতায় আবার এসেছিলেন আমাকে দেখতে, আমি সেদিন অনেক কেদেছিলাম মা কে দেখে।উপলদ্ধি করেছিলাম আমার প্রতি আমার মা এর ভালবাসার প্রখরতা।

আজ আমার মা ভীষণ অসুস্থ। তার দুটো কিডনি-ই নষ্ট হয়ে গেছে।চার দিন অ্যাপলো হসপিটালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি, আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি আমার সীমিত সামর্থ্ অনুযায়ী আমার মা-এর সুচিকিৎসা করতে। ডাক্তার বলেছেন কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করার আগ পর্যন্ত সপ্তাহে ২ বার ডায়ালাইসিস করতে হবে, সপ্তাহে ১টা করে নাভিতে ইঞ্জেকশন দিতে হবে আর নিয়মিত ঔষধ খাওয়াতে হবে।এখন-ই আমি হিমশিম খাছি, চোখের সামনে শুধুই অন্ধকার। আমি জানি না চিকিৎসা বাবদ এত টাকা পয়সা আমি কোথায় পাব?! আমি জানি না আমার মা কে সুস্থ করে তুলতে পারব কি না?! তবুও আল্লাহর উপর ভরসা আর বুকে আশা নিয়ে চেস্টা করে যাচ্ছি, চেস্টা করে যাব মা কে সুস্থ করে তুলতে। আমি যেন আমার মা কে সুস্থ করে তুলতে পারি।
আপনারা সবাই আমার মা-এর জন্য দোয়া করবেন।


আমরা অনেকেই হয়তবা বিরাট ধনী নই, তবে মুক্তমনা ও বিভিন্ন ব্লগের অংশগ্রহনকারীরা হয়ত সামান্য চেষ্টা করলেই একটি অমূল্য মানব জীবন বাঁচাতে কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পারি। মুক্তমনা সদস্য/সদস্যাদের বেশী কিছু বলা ধৃষ্টতাই বলে মনে করি। এ জাতীয় কাজ কিভাবে অর্গানাইজ করতে হয় আমার কোন ধারনা নেই, আশা করি অভিজিত ও অন্য যাদের অভিজ্ঞতা আছে এগিয়ে আসবেন।

আরিফের ব্যাংক একাউন্টঃ
Arifur Rahman
Dutch Bangla Bank
Shazadpur Branch
Savings Account No-157-101-8319
১৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×