কতোদিন দেখিনি তোমায়
শুধু তোমাকে দেখব বলে
তেপানন্তরের মাঠ পেরিয়ে
রাতের আঁধারে সীমান্ত রক্ষীর
লাল চোখকে ফাঁকি দিয়েছিলাম
এসে দেখি তুমি নেই,শুন্য আমার ঘর।
উনত্রিশ ডিসেম্বরের পরও
দুদিন তোমার বরাই তলা স্কুল মাঠে
গিয়েছিলাম।
যে সবুজ মাঠ জুড়ে ছিল
আমাদেের লীলাভূমি
সেখানে আমি আজ অবাঞ্চিত আগন্তুক ।
হেড মাষ্টার বাবু উদাস কন্ঠে আমায়
বলেছিলেন"তুমি বদলী হয়ে গেছ"।
আমার পথ গিয়েছিল বেড়ে
সেই চিরচেনা পথ অামি আজও অতিক্রম
করতে পারিনি।
তোমার ছাত্র ছাত্রীরা আমাকে দেখে
নিরবে দাড়িয়েছিল।
যে অভিবাদন
আমার বুকে বিষাক্ত তীরের মত বেঁধেছিল।
ছয়টি বছর কেটে গিয়েছে
বুকে পাষাণ বেঁধে আছি।
এখনও ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে তোমার মুখ
দেখে জেগে উঠি,হাহাকারে কাটে রাত দিন।
চাতকের মত আকাশে নয়
তোমার পথ পানে আজও চেয়ে থাকি।
ইচ্ছে করলে তোমাকে আমি
আর দেখতে পারি না শাস্ত্রে নাকি সেটা পাপ
অথচ আমিতো শাস্ত্র,ব্যকারণ,আইন মানি না।
আমার এক বুক তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যায়
নরকের আগুনে পুড়ে অঙ্গার হলেও
শুধু একবার তোমার চোখে দেখতে চাই
কতটা ক্রোধ,কতটা অভিমান জমা ছিল
তোমার বুকে আমার জন্য।
ছয়টি বছর নয়
তুমিহীনা আমি যেন কাটিয়ছি ছয়শত কোটি বছর।
দিবস রজনী ভূলে তোমার পথ চেয়ে
চোখ পুড়িয়েছি অপেক্ষার প্রহরে।
পানশালায় বুকের জমানো সব অভিমান
উগরে দিতে চেয়েছি,পারিনি
সেখানেও তোমার মুখ ভাসে স্বচ্ছ শরাবের পেয়ালায়।
আলমের কাছে শুনেছিলাম তুমি শুক্রবার
ট্রেনে বাড়ী ফিরবে শুধু একবার তোমার চাঁদ মুখখানা
দেখবে বলে আমি কত শুক্রবার স্টেশনে
শেষ ট্রেনটার অপেক্ষায় ছিলাম
তবুও তোমায় দেখতে পাইনি।
সুমি,শারমিনদের বাড়ীতে গিয়েছিলাম
ওরা আর কেউ বাড়ীতে থাকে না।
যাদুর আয়নায় তোমার মুখ দেখব বলে
তিন রাত তান্ত্রিকের আখড়ায় গাঁজা খেয়ে পড়েছিলাম।
আলমিরা তোরঙ্গের চিপায় তোমার
একখানা ফটোগ্রাফও খুঁজে পাইনি।
অলিতে গলিতে স্মৃতির পাতায় কত খুঁজেছি তোমায়।
হাজার মানুষের ভিড়ে পাইনি তোমার সেই মুুখ
যার জন্য আমি আজ ঘড়ছাড়া বিবাগী।
অথচ মিমু আমরা একদিন
একই ছাদের নিচে ছিলাম
একটা চাঁদকে দুজনে ভাগাভাগি করে নিতাম।
অামি এখনও সেই চাঁদে তোমার মুখখানি খুুঁজি
যে চাঁদ এখন ঢেকে গিয়েছে অমাবশ্যার
নিকষ কালো আঁধারে।
যে ভাবে হারিয়ে গেছ তোমার চাঁদমুখ
আমার জীবন থেকে!!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১২