somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার জীবনে প্রথম লেখা গল্প-১ম পর্ব।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগে কখনও গল্প/গদ্য লিখিনি। এটাই আমার প্রথম প্রচেষ্টা। তাই কোন নাম দিতে পারলাম না। আপনারা গল্পটা পড়ে যদি কোন নাম দিতে পারেন তাহলে আপনাদের নিকট কৃতজ্ঞ থাকব। এখানে প্রথম পর্বটুকু লিখলাম,ভাল রেসপন্স পেলে সামনে এগোব। নাহলে আর আপনাদের অহেতুক বিরক্ত করব না।


“নামহীন গদ্য”

আজ খুব ভোরে ঘুম ভাঙলো জয়ের। জয় ঘুম থেকে উঠেই ডেকে তুলল রাজু ও সোহেল ভাইকে। এরপর সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ল নিজেকে নিয়ে। কারন আজ যে পহেলা বৈশাখ। বাঙ্গালির প্রানের উৎসব আজ। জাতি-ধর্ম ভুলে আজ সবাই মেতে উঠবে উৎসবের আনন্দে। আর সেই আনন্দে ওরা যোগ দেবে না তাই কি হয় নাকি??
তাইতো সবাই সকাল সকাল সেভ করে গোসল করে নিল। আজতো আর সারা দিনে বাসায় ফেরা হবে না তাই সবাই প্রস্তুত হয়ে নিচ্ছে। রাজু গোসল করে এসে জাহাঙ্গীরকে ডেকে তুলল। জাহাঙ্গীর আজ ওদের সাথে বের হবে না। ও আজকে ওর প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে,তাই ওর খুব একটা তাড়া নেই।
জয় ওর প্রিয় সোনালী রঙের পাঞ্জাবী ও পায়জামা পড়ল। সাথে আছে ওর সব সময়ের সঙ্গী গোল হ্যাট। রাজু পড়ল সাদা চেক শার্ট সাথে জিন্স। সোহেল তার পছন্দের সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরে রেডি হল উৎসবের রঙে মেতে উঠতে। এতক্ষনে জাহাঙ্গীরও গোসল সেরে আসল। ওর পাঞ্জাবী নেই তাই জয় ওকে লাল একটা পাঞ্জাবী ধার দিল। তারপর জয়ের ক্যামেরাটা নিয়ে ওরা সবাই বেরিয়ে পড়ল।
রমনা পার্কে ওরা যখন পৌঁছল তখন প্রায় ৮টা বাজে। রাস্তায় আজ মানুষের ঢল নেমেছে। তা অতিক্রম করে আসতেই ওদের এত দেরি। রমনার গেটে দীর্ঘ লাইন দেখে ওরা হতাশ হয়ে পড়ল। এই লাইনে দাড়িয়ে ঢুকতে গেলে ওদের আজ আর ঢোকা হবে না,তাই ওরা পুলিশের চোখ এড়িয়ে বেড়া টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ল।
একটা কনসার্টের সামনে ওরা এসে দাঁড়াল। গান শুনল কিছুক্ষন সাথে চলতে থাকল জয়ের ছবি তোলা। আজ ও টার্গেট করেছে সর্বোচ্চ সংখ্যক ছবি তুলে তার ছবি তোলার রেকর্ড আজ ব্রেক করবে। নিজেদের ছবি ছাড়াও চারপাশের অসংখ্য বঙ্গ ললনাদের ছবি তুলল জয়।
রমনা পার্ক থেকে বেরিয়ে জাদুঘর হয়ে ওরা এগিয়ে গেল ঢাকা ভার্সিটির ক্যাম্পাসে। অপরাজেয় বাংলার পেছনে একটু খোলা জায়গায় ওরা বসল। তারপর আরও কিছুক্ষণ বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান দেখে সন্ধ্যার আগে আগে ওরা বাসার পথ ধরল। আসার পথে কাঁটাবনে একটা দোকান থেকে জয় দুটো খরগোশের বাচ্চা কিনল। ওর অনেক দিনের শখ ঢাকায় থাকলে ও খরগোস পালবে। সেই শখটা ও আজ এই বিশেষ দিনে পূরণ করে নিল।
বাসায় ফিরতে সন্ধ্যে হয়ে গেল। রাজু ক্লান্ত শরীরে শুয়ে পড়ল,সোহেল টিউশনিতে চলে গেল। জয় তার আদরের খরগোস ছানাদের দেখাশোনা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। সে ছোট একটা ঘর বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। হঠাৎ তার মোবাইলে একটা কল আসল। জয় দেখল আননোন নাম্বার। রিসিভ করতেই অপাশ থেকে এক মেয়ে কণ্ঠ জানতে চাইল...
হ্যালো...জয় আছে?
জয়ঃ হ্যা,আমি জয় বলছি। আপনি কে??
সোনিয়াঃ আমি সোনিয়া বলছি।
জয়ঃ কোন সোনিয়া?
সোনিয়াঃ ভুলে গেলেন আমাকে? ওই যে সিলেট যাবার ট্রেনে পরিচয় হয়েছিল...
জয়ঃ ও...হ্যা মনে পড়েছে। কেমন আছ তুমি?
সোনিয়াঃ হ্যা,ভাল আছি। But একটু প্রবলেম এ পড়েছি। একটু হেল্প করবেন?
জয়ঃ কি প্রবলেম বল?
সোনিয়াঃ আমি এখন ট্রেনে ঢাকা আসতেছি,রাতের লঞ্চে ওখান থেকে বাড়িতে মানে চাঁদপুরে যাব।
জয়ঃ ভাল কথা,তা তোমার সাথে আর কে আছে?
সোনিয়াঃ সেটাই তো প্রবলেম। আমার বাড়ি ফেরাটা একটু জরুরি ছিল আর আমার নানুর বাসার সবাই নানা কাজে ব্যাস্ত তাই আমি একা আসতেছি।
জয়ঃ কাজটা তুমি ভাল করনি। এত রাতে একা একা...। আচ্ছা আমকে কী করতে হবে?
সোনিয়াঃ আপনার যদি অসুবিধা না থাকে তাহলে আমাকে একটু কমলাপুর থেকে সদরঘাটে পৌঁছে দিবেন?
জয়ঃ আচ্ছা আমি আসতেছি। তোমার ট্রেন কটায় ঢাকায় পৌছবে?
সোনিয়াঃ দশটার দিকে।
জয়ঃ দশটা??? আর লঞ্চ কটায়?
সোনিয়াঃ বারোটা পর্যন্ত প্রতি আধঘণ্টা পর পর লঞ্চ আছে।
জয়ঃ ওকে আমি আসছি...
জয় ফোনটা রেখে রাজুকে ডাকল। রাজু উঠে বসল। জয় ওকে পুরো ঘটনাটা খুলে বলল। তারপর ওরা দুজন রেডি হয়ে বের হল। জয়ের মনে একটা ভয় কাজ করতে লাগল। একা একটা মেয়েকে নিয়ে এত রাতে যদি কোন বিপদ হয়। তাছাড়া সোনিয়ার সাথে ওর পরিচয়টা ক্ষণিকের। মেয়েটা আসলে কেমন সেটাই তো ও ভাল করে জানে না। মেয়েটার মনে যদি অন্য কোন দুরভিসন্ধি থেকে থাকে তাহলে তো মহা বিপদ। তাই জয় সোহেলকে ফোন করে ব্যাপারটা জানাল। সোহেল বলল সমস্যা নেই তোরা যা আমি টিউশনি শেষ করে আসতেছি।
তারপর জয় রাজুকে নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে গেল। সেখানে পৌঁছে দেখল সাড়ে নটা বাজে। সোনিয়াকে ফোন করে জানল যে তার আসতে নাকি আরও কিছুটা দেরি হবে। তাই ওরা স্টেশনের ভিতরেই অপেক্ষা করতে লাগল। ওরা একটা খোলা জায়গায় দুজনে বসল। একটু পরেই একটা ট্রেন আসল। ট্রেন আর লোকজনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে জয়ের মনে পরে গেল মাস কয়েক আগের তার জীবনের প্রথম ট্রেন জার্নির কথা...



চলবে......
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জেনারেল রাও ফরমান আলী ছিল ইন্ডিয়ান 'র'-এর এজেন্ট

লিখেছেন ধূসর সন্ধ্যা, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২



জেনারেল রাও ফরমান আলী ছিল ইন্ডিয়ান 'র'-এর একজন এজেন্ট। এই তথ্য কেউ জানতো না। তার ফ্যামিলিও জানতো না। ১৯৪১ সালে বর্ডার ক্রস করে সে ঢুকেছিল পাকিস্তান। তারপর আস্তে আস্তে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×