somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভরা বর্ষায় আমার সিলেট ভ্রমণ

০১ লা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




অতি সম্প্রতি ঘুরে এলাম সিলেট বিভাগের কিছু অংশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এই বিভাগ, বিশেষ করে বর্ষাকালে। যদিও হাওর বাওর আমার দেখা হয়ে ওঠে নাই। শুধু সবুজ প্রকৃতি, চা বাগান, নদি, খাল, ঝর্ণা, জলপ্রপাত দেখতেই আমার দু'তিন দিন কেটে গেল। ঝর্ণা, জলপ্রপাত যদিও নেমে এসেছে মেঘালয়ের পাহাড়গুলো থেকে, তবে সৌন্দর্য্যমন্ডিত করেছে বাংলাদেশকেই।

সিলেট থেকে গোয়াইনগাট উপজেলা প্রায় ৬৫/৭০ কিলোমিটার পথ। ছয় জনের একটা দল আমরা। সাথে পাঁচ বছর আর সাত বছরের দু’টো বাচ্চা। ওদের ঘুম থেকে উঠতে দেরী হতো বলে আমরা যে তিনটে দিন সিলেটে ছিলাম, একদিনও খুব ভোরে বেরোতে পারিনি। সকাল ন’টায় সবার সকালের নাশতা কিনে নিয়ে বেরোলাম। দোকানে বসে খেতে আরো দেরী হবে। একটা সাত সিটের মাইক্রো দু'দিনের জন্য ভাড়া করে রেখেছিলেন আমাদের এক বন্ধু। এই গাড়ীতেই রওয়ানা হলাম আমরা।

সিলেট শহর পেরিয়ে যাবার পরেই শুরু হলো দু’পাশে সবুজ ধানের চারার ক্ষেত। কোথাও ছোট বড় পুকুর। ফুটে আছে লাল সাদা শাপলা। আমাদের বেরসিক মনিপুরী ড্রাইভার আমাকে শাপলার ছবি তুলতে দেয়নি। আমার খুব রাগ হচ্ছিল ওর ওপরে, কিছুই বলতে পারছিলাম না।

আরো কিছুদূর এগিয়ে যাওয়ার পরেই শুরু হলো দু’পাশে বিস্তীর্ণ জলরাশি। মাঝে মাঝে একেকটা দ্বীপবাড়ি। প্রতিটি বাড়ির সাথে একটা করে ডিঙি নৌকা বাঁধা, যা এই বর্ষায় তাদের একমাত্র বাহন। এভাবে ঘন্টা দুই যাবার পরে রাস্তাটা একটু খারাপ, মাঝে মাঝে ডুবেও গেছে। এর মাঝেই এগিয়ে চলেছি আমরা। একবার অবশ্য ড্রাইভার আমাদের অনুরোধে থামলেন, কিছু ছবি তুললাম আমরা। দূরে দেখা যাচ্ছিল ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ের সারি। সমস্ত পাহাড় জুরেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ছোট বড় ঝর্না। যতগুলো ঝর্না নেমে এসেছে, সবই ভারত থেকে। এমনই একটা ঝর্না দেখার জন্য আমরা বিছানাকান্দি যাচ্ছি।








দু’পাশে এমনই বিস্তীর্ণ জলরাশি।


মাঝে মাঝে রাস্তাও পানিতে ডুবে গিয়েছিল।

একসময় পৌছে গেলাম গোয়াইনঘাট উপজেলার পীরেরবাজারে। এখান থেকে নৌকায় যেতে হবে। যেতে, ঘুরে দেখতে আর আসতে ঘণ্টা চারেক সময় লাগবে আমাদের। অনেক দর কষাকষির পরে দুই হাজার টাকায় নৌকাভাড়া মিটল। উঠে পড়লাম আমরা ছয় জন।

নৌকা ছাড়ার পরে চারিদিকে দেখতে দেখতে বিস্মিত আমি! দুইপাশে সবুজ গ্রামের মধ্যে দিয়ে চলেছি আমরা। এই এলাকায় পাথর তুলে স্তুপ করা আছে। নদিতে, মাটিতে, বালিতে সবখানেই শুধু পাথর। স্থানীয় অধিবাসীদের বেশীরভাগ মানু্ষের জীবিকা পাথর তোলা! একপাশের গ্রাম একসময় শেষ হয়ে গেল, শুরু হলো শুধু পাহাড় আর পাহাড়। পাহাড়ের দেয়াল যেন নেমে এসেছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে। আরেকপাশে বাংলাদেশের সবুজ গ্রাম।


























মহিষ এভাবে পানিতে মুখ ডুবিয়ে নিচের ঘাস-পাতা খায়, আমি এই প্রথম দেখলাম। আগে শুধু দেখেছি পানিতে গোসল করতে বা গরম লাগলে পানিতে সারা শরীর ডুবিয়ে রাখতে।
এমনই কখনও দু'পাশে সবুজ গ্রাম, কখনও একপাশে পাহাড়ের সারি পেরিয়ে চলেছি আমরা।



একসময় পৌছে গেলাম বিছানাকান্দি। চারিদিক ছোট বড় পাথর, তার মাঝে বয়ে চলেছে ঝর্ণার স্রোতধারা। ঝর্ণাটা বেশ দূরে, কিন্তু তবুও পানিতে বেশ স্রোত। পাথরের উপর দিয়ে এগিয়ে গেলাম বাংলাদেশের শেষ সীমানা পর্যন্ত! ছবি তুলছিলাম আর বিস্ময় নিয়ে দেখছিলাম! ধীরে ধীরে পর্যটকের ভীড় বাড়তে শুরু হলো। ঘন্টাখানেক থেকে আমরাও রওয়ানা হলাম পান্থুমাই জলপ্রপাতের দিকে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছানাকান্দির পথে যে সৌন্দর্য্য আমি দেখেছি, তা' শুধুই উপভোগ করার। ছবির ফ্রেমে ধরে রাখার মত নয়। স্মৃতির এলবাম-এ ভরে রাখলাম আমি এই ছবিগুলো।


































ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:১৭
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×