somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পানতুমাই একটি চোখ জুড়ানো গ্রাম!!!

০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পিয়াইন নদিতে ঝর্নার প্রতিচ্ছবি, স্বচ্ছতার আরেক রূপ!!

প্রথম পর্বে ছিলঃ ভরা বর্ষায় আমার সিলেট ভ্রমণ - বিছানাকান্দি, সিলেটের আরেক বিস্ময়!!!


পানতুমাই থেকে বিছানাকান্দি ৩০ কি.মি. এর মত। বিছানাকান্দি দেখা শেষ করে আমরা ঐ নৌকাতেই চললাম পানতুমাই দেখতে। পাহাড় ঘেঁষা আঁকাবাঁকা নদিপথে চলেছি আমরা। মাঝে মাঝেই দেখা যায় আরো পর্যটকের নৌকা, স্কুলগামী ছেলেমেয়েরাও চলেছে নৌকাতেই। প্রতিটি বাড়িই যেন একেকটি দ্বীপ। এদের বাড়ির পাশ দিয়েই নদি, তাই আনুসাঙ্গিক সমস্ত কাজকর্মই নদিতে হচ্ছে। ১০/১২ বছরের বাচ্চা শিশুরাও প্রয়োজনে একাই নৌকা অথবা ভেলা চালিয়ে, তাদের প্রয়োজন সারছে, নদি পাড়ের গাছে উঠে পানিতে লাফিয়ে পড়ে ঝাপাঝাপি করছে। এমন দৃশ্য কত যুগ যেন দেখি না! মুগ্ধ বিস্ময়ে এসব দেখতে দেখতে এক সময় চলে এলাম পানতুমাই। জানি না কতক্ষণ ধরে নৌকায় এলাম, হয়তো ঘন্টাখানেক।


(১)


(২)


(৩)


(৪) এ নৌকায় নতুন বউ আসছে মনে হয় !! :D


(৫)


(৬)


(৭)


(৮)


(৯)


(১০) আশেপাশের গ্রামের এমনই চিত্র, যা আমাকে মুগ্ধ করেছে!


(১১)এভাবেই পাথর তুলে স্তুপ করে রাখা হয়েছে, পাশে রাখা পাথর ভাঙ্গা মেশিন।


(১২)ছুটে চলছে পাথরবাহী নৌকার দল।


(১৩)আমরা পানতুমাই-এর কাছাকাছি চলে এসেছি।


পানতুমাই চোখ জুড়ানো একটি গ্রাম! সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার একটি গ্রাম এই পানতুমাই। পানতুমাই গ্রামকে বলা হয় বাংলাদেশ-এর সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম। অনেকে একে “পাংথুমাই”-ও বলেন, আবার কেউ বলে্ন এটি পানতুমাই। মেঘালয় রাজ্যের সারি সারি পাহাড় , ঝর্না , ঝর্না থেকে বয়ে আসা পানির স্রোতধারা , আর দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ আর সবুজ এই গ্রামটি । এই গ্রাম থেকে খুব কাছে দাঁড়িয়ে দেখা যায় ভারতের বড়হিল ঝর্ণা।

বাংলাদেশের কোল ঘেঁসে প্রতিবেশী ভারতের মেঘালয়ের গহীন অরণ্যের মাঝ থেকে বাংলাদেশের দিকে নেমে এসেছে এই অপরূপা ঝর্নাধারা! ঝর্নাটির স্থানীয় নাম ফাটাছড়ি ঝর্না, আবার কেউ কেউ বলেন বড়হিল ঝর্না। ঝর্নাটি ভারতের মধ্যে পড়লেও পিয়াইন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে খুব কাছে থেকে দেখা যায় এটি। তাই সব সৌন্দর্য্য উজার করে দিয়েছে আমাদের বাংলাদেশকেই। এর শুভ্র পানির স্রোতধারা এসে মিশে যাচ্ছে আমাদের পিয়াইন নদিতে। পিয়াইন তাই সব সময়েই ভরাযৌবনা। পাশেই বিএসএফের ক্যাম্প। কয়েকটা বড়ই গাছ দেখলাম, ওখানেই বাংলাদেশের শেষ সীমানা। এখানে বিজিবির কোনো ক্যাম্প বা কোন চৌকি নেই। তাই সীমানার কাছাকাছি যাওয়া বিপদজনক। আমরা কিছুটা সীমানা অতিক্রম করেছিলাম। বিএসএফ-এর টহল নৌকা দেখে ওখান থেকেই ফিরেছি। পিচ্চি ছেলেরা ছোট ছোট ডিঙি নৌকা নিয়ে বসেছিল বাংলাদেশের সীমানায়। ওরাই নিয়ে গেল আমাদের ভারতের সীমানার কিছুটা ভিতরে। বলল, “ যাওয়া যাবে। আসেন ভয় নাই।“ নৌকাগুলো এতোই ছোট, দু’জনের বেশী তিনজন ওঠা যাবে না। আমার মনে হচ্ছিল ঝর্ণার এত কাছে নিশ্চয়ই গভীর পানি। আমি সাঁতার জানি কী না তাও ভুলে গেছি :D । সেই কোন্‌ ছোটবেলায় নানাবাড়ি গেলে পুকুরে সাতার কেটে গোসল করতাম। বড় হবার পরে আর সাতার কাটার জায়গাই পাইনি।

স্থানীয়দের কাছে শোনা, অনেক আগে ঝর্নার কাছে যাওয়া যেত। বিএসএফ এর ক্যাম্প ছিল না। কিন্তু বাঙালী আর খাষিয়া মারামারি হওয়ার কারণে এখন যাওয়া নিষেধ। আমরা নিরাপদ দূরত্ব রেখে এর অপরূপ সৌন্দর্য্য শুধু দেখলাম আর মনের গহীনে গেঁথে নিলাম!!!



(১৪) এটাই ভারতের বড়হিল ঝর্ণা।



(১৫)এতদূর পর্যন্ত গিয়েছিলাম আমরা।


(১৬) সামনের বড়ই গাছ পর্যন্তই বাংলাদেশের শেষ সীমানা।


(১৭) ভারতের পাহাড়ের সুপারী বাগান।


(১৮) সামনেই ভারতীয় মৎস শিকারী।


(১৯) এই সৌন্দর্য্য শুধুই মুগ্ধ হয়ে দেখবার।


(২০) ওপারেও অনেক পর্যটকের ভীড়।


(২১) টহলরত বিএসএফ।


(২২) ফিরে এলাম একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে!!


(২৩) ফেরার পথে আকাশটাও যেন হাসিমুখে বিদায় জানাল।

তথ্যসুত্রঃ আমাদের নৌকায় মাঝি ছাড়াও একজন গাইড ছিলেন। তার কাছে থেকে আমরা অনেক তথ্য পেয়েছি। স্থানীয় বলতে আমি তাকেই বুঝিয়েছি।


ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:২৬
৫৫টি মন্তব্য ৫৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×