somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

(NCTB Book ) চতুর্থ শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ১ম অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আরবী আমার পাঠ্য বিষয় ছিল না, কিন্তু আমার এক আত্মীয় খুব পীড়াপীড়ি করল চতুর্থ শ্রেণির ইসলাম ধর্ম বইয়ের ১ম ও ২য় অধ্যায়ের প্রশ্নগুলোর উত্তর তৈরি করে দিতে। কথায় আছে না,"পড়েছি মোগলের হাতে, খানা খেতে হবে সাথে"-শত ব্যস্ততার মাঝে তাই করে দিতে হলো । আর আপনাদের সাথে তা শেয়ার করলাম, যদি কারো উপকারে আসে। আমার জন্য দোয়া করবেন।
************************************************** ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
চতুর্থ শ্র্রেণি
প্রথম অধ্যায়
ইমান ও আকাইদ
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
১) আল্লাহ তায়ালার পাঁচটি গুণের নাম লিখ।
উত্তর: মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অসংখ্য গুণের উদাহারণ আমাদের জীবনে বিদ্যমান। আল্লাহ তায়ালার পাঁচটি গুণের নাম নিম্নে দেওয়া হলো-
ক) আল্লাহু মালিকুন ( ) অর্থ আল্লাহ মালিক
খ) আল্লাহু কাদীরুন ( ) অর্থ আল্লাহ সর্বশক্তিমান
গ) আল্লাহু সালামুন ( ) অর্থ আল্লাহ শান্তিদাতা
ঘ) আল্লাহু রহমান ( ) অর্থ আল্লাহ দয়ালু
ঙ) আল্লাহু খালিকুন ( ) অর্থ আল্লাহ স্রষ্টা

২) ইমান মুফাসসালে কয়টি বিষয়ের উল্লেখ আছে?
উত্তর: ইমান মুফাসসালে সাতটি বিষয়ের উল্লেখ আছে । বিষয়গুলো হলো:
১. আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস ২. ফেরেশতাগণে বিশ্বাস ৩. আসমানি কিতাবে বিশ্বাস
৪. নবি-রসুলে বিশ্বাস ৫. শেষ দিবসে বিশ্বাস ৬. তকদিরে বিশ্বাস
৭. মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস
আমরা উল্লিখিত সাতটি বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করব এবং সে অনুসারে আমল করব।

৩) চারজন প্রসিদ্ধ ফেরেশতার নাম লিখ।
উত্তর: মহান আল্লাহ অসংখ্য ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন ফেরেশতা বেশ প্রসিদ্ধ । তাঁরা হলেন-
ক) হযরত জিবরাইল (আ)
খ) হযরত মিকাইল (আ )
গ) হযরত আযরাইল (আ)
ঘ) হযরত ইসরাফিল (আ)

৪। চারখানা বড় কিতাবের নাম লিখ।
উত্তর: মহান আল্লাহ ১০৪ খানা কিতাব প্রেরণ করেছেন। এদের মধ্যে বড় চারখানা কিতাব হল:
ক. তাওরাত খ. যাবুর গ. ইনজীল ঘ. কুরআন মজিদ

৫। দশজন নবি-রাসুলের নাম লিখ।
উত্তর: মহান আল্লাহ পৃথিবীতে অসংখ্য নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে দশজনের নাম নিম্নে দেয়া হল:
ক)হযরত আদম (আ )
খ)হযরত নূহ (আ )
গ)হযরত ইবরাহীম (আ )
ঘ)হযরত ইসমাঈল (আ )
ঙ)হযরত ইসহাক (আ )
চ)হযরত ইয়াকুব (আ)
ছ)হযরত ইউসূফ (আ )
জ)হযরত মূসা (আ)
ঝ)হযরত ঈসা (আ)
ঞ)হযরত মুহম্মদ (সা)

৬। আসমানি কিতাব কতো খানা?
উত্তর: আসমানি কিতাব সর্বমোট ১০৪ খানা । এগুলোর মধ্যে ৪ খানা বড় আর ১০০ খানা ছোট ৭। ছোট কিতাবকে কী বলে?
উত্তর: মহান আল্লাহ ১০৪ খানা কিতাব প্রেরণ করেছেন । এগুলোর মধ্যে ৪ খানা বড় আর ১০০ খানা ছোট । ছোট কিতাবকে সহিফা বলে ।

৮। সর্বশেষ নবি কে?
উত্তর: মহান আল্লাহ পৃথিবীতে অসংখ্য নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হলেন হযরত মুহম্মদ (সা)। আমরা তাঁকে অনুসরণ করি।

৯।সর্বশেষ আসমানি কিতাব কী?
উত্তর: মহান আল্লাহ ১০৪ খানা আসমানি কিতাব প্রেরণ করেছেন। এগুলোর মধ্যে ‘কুরআন মজিদ’ হল সর্বশেষ আসমানি কিতাব। এটি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হলেন হযরত মুহম্মদ (সা)-এর উপর নাযিল হয়েছে।

বর্ণনামূক প্রশ্ন:
১) সংক্ষেপে আল্লাহ তায়ালার পরিচয় দাও ।
উত্তর :
আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরিক নেই। তিনি সব কিছু জানেন, শুনেন ও দেখেন। তিনি সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ও রিযিকদাতা। তিনি সর্বশক্তিমান, ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। আমরা যা কিছু দেখতে পাই সবই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। আবার এমন অনেক কিছু আছে যা আমরা দেখতে পাই না, সেগুলোও তিনিই সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের লালন-পালনের ব্যবস্থাও করেছেন। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সব কিছুরই মালিক আল্লাহ তায়ালা । দুনিয়ার সকল ধন-সম্পদের মালিক আল্লাহ । আমাদের সুখ-দু:খের মালিক আল্লাহ । আমাদের জীবন-মৃত্যুর মালিকও আল্লাহ ।পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর হুকুমেই এরা চলে। দিন-রাত, জন্ম-মৃত্যু, রোদ-বৃষ্টি ইত্যাদি আল্লাহর হুকুমেই সংঘটিত হয়। আলো-বাতাস, আগুণ-পানি সব কিছুই মহান আল্লাহর শক্তির অধীন। আল্লাহ শাস্তি দিতে চাইলে কেউ রক্ষা পায় না। আর কাউকে রক্ষা করলে কেউ তাকে মারতে পারে না। আল্লাহ তায়ালার মতো শক্তি আর কারো নেই । একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই শান্তিদাতা । যারা আল্লাহর হুকুম মেনে চলে তিনি তাদের শান্তি দেন।

২) আল্লাহ তায়ালার কয়েকটি গুণের নাম লিখ।
উত্তর: মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অসংখ্য গুণের উদাহারণ আমাদের জীবনে বিদ্যমান। নিম্নে আল্লাহ তায়ালার কয়েকটি গুণের আলোচনা করা হল:
(ক)আল্লাহ তায়ালার অন্যতম একটি গুণ হল- মালিকুন ( )। মালিক অর্থ অধিপতি। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সব কিছুরই মালিক আল্লাহ তায়ালা । দুনিয়ার সকল ধন-সম্পদের মালিক আল্লাহ। আমাদের সুখ-দু:খের মালিক আল্লাহ । আমাদের জীবন-মৃত্যুর মালিকও আল্লাহ। আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালো কাজ করব।
(খ)আল্লাহ তায়ালার অন্যতম আরেকটি গুণ হল-কাদীরুন ( ) । কাদির অর্থ সর্বশক্তিমান ।আল্লাহ কাদীরুন অর্থ হল আল্লাহ সর্বশক্তিমান। আল্লাহ তায়ালার মতো শক্তি আর কারো নেই। তিনি সমগ্র পৃথিবীর সকল কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রতিটি জিনিস তাঁর হুকুমেই চলে। দিন-রাত, জন্ম-মৃত্যু, রোদ-বৃষ্টি ইত্যাদি আল্লাহর হুকুমেই সংঘটিত হয়।আলো-বাতাস, আগুণ-পানি সব কিছুই মহান আল্লাহর শক্তির অধীন। আমরা মহান আল্লাহকে সর্বশক্তিমান হিসেবে বিশ্বাস করব।

(গ)আল্লাহ তায়ালার অন্যতম আরেকটি গুণ হল- সালামুন ( )।সালাম অর্থ শান্তি । আল্লাহ সালামুন অর্থ আল্লাহ শান্তিদাতা। একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই শান্তিদাতা।যারা আল্লাহর হুকুম মেনে চলে তিনি তাদের শান্তি দেন। দুনিয়াতে শান্তি দেন। আখিরাতেও শান্তি দিবেন। আমরা আল্লাহ তায়ালাকে পরম শান্তিদাতা বলে বিশ্বাস করব। তাঁর কাছেই শান্তি চাইব। সবার সাথে শান্তিতে বাস করব। শান্তির পক্ষে কাজ করব।

৩) “আল্লাহ সর্বশক্তিমান” কথাটির অর্থ বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর: আল্লাহ তায়ালার অন্যতম একটি গুণবাচক নাম হল-কাদীরুন ( ) । কাদির অর্থ সর্বশক্তিমান । আল্লাহ কাদীরুন অর্থ হল আল্লাহ সর্বশক্তমান। আল্লাহ তায়ালার মতো শক্তি আর কারো নেই।তিনি অসীম শক্তির অধিকারী। সর্বশক্তিমান আল্লাহ সমগ্র পৃথিবীর সকল কিছু সৃষ্টি করেছেন। পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর হুকুমেই এরা চলে। দিন-রাত, জন্ম-মৃত্যু, রোদ-বৃষ্টি ইত্যাদি আল্লাহর হুকুমেই সংঘটিত হয় । আলো-বাতাস, আগুন-পানি সব কিছুই মহান আল্লাহর শক্তির অধীন। আল্লাহ শাস্তি দিতে চাইলে কেউ রক্ষা পায় না। আর কাউকে রক্ষা করলে কেউ তাকে মারতে পারে না। আল্লাহ নমরুদ, ফিরাউন, হযরত নূহ (আ)-এর সম্প্রদায়, আবরাহা বাদশাকে ধ্বংস করেছেন। কেউ তাদের বাঁচাতে পারেনি।অন্যদিকে হযরত ইবরাহীম (আ), হযরত মূসা (আ), হযরত ঈসা (আ), হযরত মুহাম্মদ (সা)-কে রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু কেউ তাঁদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি। তাই আমরা মহান আল্লাহকে সর্বশক্তিমান হিসেবে বিশ্বাস করব। বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, সিডর ইত্যাদি সহ সকল বিপদ-আপদের সময় আমরা তাঁর কাছেই সাহায্য চাইব। তাঁর উপর ভরসা রাখব।

৪।“ আল্লাহ শান্তিদাতা” –এ বাক্যটি বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর: মহান আল্লাহ তায়ালার অন্যতম একটি গুণবাচক নাম হল- সালামুন ( )। সালাম অর্থ শান্তি । আল্লাহ সালামুন অর্থ আল্লাহ শান্তিদাতা। একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই শান্তিদাতা । প্রচুর ধনসম্পদ থাকলেই শান্তি পাওয়া যায় না। কারণ আল্লাহ তায়ালা যাকে শান্তি দেন সেই শান্তি পায়। কুড়েঘড়ে থাকলেও শান্তি পায়। অভাব-অনটনেও শান্তি থাকে। আল্লাহ শান্তি দিলে কেউ তার ক্ষতি করতে পারে না। যেমন-আল্লাহ তায়ালা হযরত ইবরাহীম (আ:)-কে আগুনের মধ্যেও শান্তিতে রেখেছিলেন, নমরুদ তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারেনি। অতএব যারা আল্লাহর হুকুম মেনে চলে তিনি তাদের শান্তি দেন। দুনিয়াতে শান্তি দেন। আখিরাতেও শান্তি দিবেন।
আমরা আল্লাহ তায়ালাকে পরম শান্তিদাতা বলে বিশ্বাস করব। তাঁর কাছেই শান্তি চাইব। সবার সাথে শান্তিতে বাস করব। একে অপরের সাথে দেখা হলে আমরা সালাম দিব। আমাদের প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.)সবসময় শান্তির জন্য কাজ করতেন।আমরাও শান্তির পক্ষে কাজ করব।

৫। কলেমা শাহাদাত অর্থসহ বাংলায় লিখ।
উত্তর: কলেমা শাহাদাত ইসলামের মূল বিষয় । কলেমা অর্থ বাক্য আর শাহাদাত অর্থ সাক্ষ্য দেয়া । কলেমা শাহাদাত মানে সাক্ষ্য দেওয়ার বাক্য । এই কলেমা দ্বারা আমরা তওহিদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দেই ।কলেমা শাহাদাত হলো-
কলেমা শাহাদাত (বাংলায়)
আশহাদু আল্ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।
ওয়াহ্দাহূ লা শারীকালাহু অর্থ : তিনি এক, তাঁর কোন শরিক নেই।
ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু
অর্থ: আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই হযরত মুহাম্মাদ (স) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।

৫। ইমান মুজমাল অর্থসহ বাংলায় লিখ।
উত্তর: ইমান অর্থ বিশ্বাস আর মুজমাল মানে সংক্ষিপ্ত । ইমান মুজমাল মানে সংক্ষিপ্ত বিশ্বাস। ইসলামের মূল বিষয়গুলোকে সংক্ষেপে বিশ্বাস ও স্বীকার করাকে ইমান মুজমাল বলা হয়। ইমান মুজমাল হলো-

আমানতু বিল্লাহি কামা হুয়া বিআসমাইহী ওয়া সিফাতিহী ওয়া কাবিলতু জামী‘আ আহ্কামিহী ওয়া আরকানিহী।
অর্থ : আমি ঈমান আনলাম মহান আল্লাহর ওপর ঠিক তেমনি- যেমন আছেন তিনি তাঁর সব নাম ও গুণাবলিসহ। আর মেনে নিলাম তাঁর সব হুকুম-আহকাম ও বিধি-বিধান।

৭। ইমান মুফাসসালে উল্লিখিত বিষয়গুলোর নাম লিখ।
উত্তর : ইমান মুফাসসালে আমরা সাতটি বিষয়ের উপর ইমান আনি। বিষয়গুলো হলো:
ক. আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস খ. ফেরেশতাগণে বিশ্বাস গ. আসমানি কিতাবে বিশ্বাস
ঘ. নবি-রসুলে বিশ্বাস ঙ. শেষ দিবসে বিশ্বাস চ. তকদিরে বিশ্বাস
ছ. মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস
ক. আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস: ইমানের প্রথম কথাই হলো আল্লাহর উপর বিশ্বাস। আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরিক নেই। তিনি সব কিছু জানেন, শুনেন ও দেখেন। তিনি সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ও রিযিকদাতা। তিনি সর্বশক্তিমান, ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
খ. ফেরেশতাগণে বিশ্বাস: মহান আল্লাহ অসংখ্য ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন । ফেরেশতাগণ আল্লাহ তায়ালার বিশেষ সৃষ্টি । তাঁরা নূরের তৈরি । নূর মানে আলো । তাঁরা আল্লাহর আদেশে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। তাঁদের সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
গ. আসমানি কিতাবে বিশ্বাস: মহান আল্লাহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নবি-রসুলের কাছে সর্বমোট ১০৪ খানা আসমানি কিতাব প্রেরণ করেছেন। এগুলোর মধ্যে ৪ খানা বড় আর ১০০ খানা ছোট । আমরা আসমানি কিতাবে বিশ্বাস রাখব ।
ঘ. নবি-রসুলে বিশ্বাস: মহান আল্লাহ পৃথিবীতে অসংখ্য নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন। নবি-রসুলগণ মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী প্রচার করতেন।আমরা নবি-রসুলগণের প্রতি ইমান আনব ।
ঙ. শেষ দিবসে বিশ্বাস: সকল প্রাণীকে একদিন মৃত্যু বরণ করতে হবে। আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোন কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। আমরা সেই দিনের উপর বিশ্বাস স্থাপন করব।
চ. তকদিরে বিশ্বাস: তকদির মানে ভাগ্য। আমাদের ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণকারী আল্লাহ তায়ালা ।আমরা তকদিরের উপর ইমান আনব ।
ছ. মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস: আখিরাত বা পরকালে সব মানুষকে জীবিত করে হাশরের ময়দানে একত্রিত করা হবে।মৃত্যুর পর এই পুনরুত্থানের প্রতি আমরা বিশ্বাস স্থাপন করব।
আমরা উল্লিখিত সাতটি বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করব এবং সে অনুসারে আমল করব।

৮। “আল্লাহ উপর বিশ্বাস” কথাটি বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর: ইমানের প্রথম কথাই হলো আল্লাহর উপর বিশ্বাস । আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরিক নেই। তিনি সব কিছু জানেন, শুনেন ও দেখেন। তিনি সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ও রিযিকদাতা। তিনি সর্বশক্তিমান, ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সব কিছুই আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন । দুনিয়ার সকল ধন-সম্পদের মালিক আল্লাহ । আমাদের সুখ-দু:খ , জীবন-মৃত্যুর মালিক আল্লাহ । পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর হুকুমেই এরা চলে। আলো-বাতাস, আগুণ-পানি, রোদ-বৃষ্টি, দিন-রাত, জন্ম-মৃত্যু সব কিছুই মহান আল্লাহর শক্তির অধীন। আল্লাহ শাস্তি দিতে চাইলে কেউ রক্ষা পায় না। আর কাউকে রক্ষা করলে কেউ তাকে মারতে পারে না। যখন কেউ ছিলনা, তখন তিনি ছিলেন। একদিন সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে, কিন্তু আল্লাহ থাকবেন। একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই শান্তিদাতা। যারা আল্লাহর হুকুম মেনে চলে তিনি তাদের শান্তি দেন। দুনিয়াতে শান্তি দেন। আখিরাতেও শান্তি দিবেন। আমরা আল্লাহ তায়ালাকে পরম শান্তিদাতা বলে বিশ্বাস করব।

৯। প্রসিদ্ধ ফেরেশতাদের নাম ও তাঁদের কাজ বর্ণনা কর।
উত্তর: মহান আল্লাহ অসংখ্য ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন । ফেরেশতাগণ আল্লাহ তায়ালার বিশেষ সৃষ্টি । তাঁরা নূরের তৈরি । নূর মানে আলো । তাঁরা আল্লাহর আদেশে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। তাঁরা কখনো আল্লাহর হুকুম অমান্য করে না । তাঁদের পানাহারের প্রয়োজন হয় না। আল্লাহর জিকিরই তাঁদের খাবার। তাঁদের সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। তাঁদের মধ্যে চারজন ফেরেশতা বেশ প্রসিদ্ধ । নিম্নে প্রসিদ্ধ ফেরেশতাদের নাম ও তাঁদের কাজের বর্ণনা দেয়া হলো:
ক) হযরত জিবরাইল (আ) : তিনি নবি-রসূলগণের কাছে আল্লাহর ওহি নিয়ে আসতেন। ওহি মানে আল্লাহর বাণী।
খ) হযরত মিকাইল (আ) : তিনি জীবের জীবিকা বন্টন করার কাজে এবং মেঘ-বৃষ্টির দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।
গ) হযরত আযরাইল (আ) : তিনি আল্লাহর হুকুমে জীবের জান কবজ করেন।
ঘ) হযরত ইসরাফিল (আ) : তিনি শিঙ্গা হাতে আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায় আছেন। তিনি যখন তাঁর শিঙ্গায় প্রথম ফুঁ দেবেন, তখন সকল সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে যাবে। আবার যখন দ্বিতীয় ফুঁ দেবেন, তখন সবকিছু জীবন ফিরে পাবে।
একদল ফেরেশতা আছেন, যারা মানুষের ভাল-মন্দ কাজের হিসাব রাখেন। তাঁদের বলে কিরামান কাতিবিন। মুনকির-নকির নামে আরও একদল ফেরেশতা আছেন। তাঁরা কবরে প্রশ্ন করবেন।

১০। আসমানি কিতাব কাকে বলে? সর্বশেষ আসমানি কিতাবের সংক্ষেপে বর্ণনা দাও।
উত্তর: মহান আল্লাহ নবি-রসূলগণের কাছে ওহি পাঠাতেন। ওহি মানে আল্লাহর বাণী। আল্লাহর বাণীসমূহের সমষ্টিকে আসমানি কিতাব বলা হয়।আসমানি কিতাব হলো ১০৪ খানা ।এগুলোর মধ্যে ৪ খানা বড় আর ১০০ খানা ছোট ।ছোট কিতাবকে সহিফা বলে । এদের মধ্যে বড় চারখানা কিতাব হল: ক. তাওরাত খ. যাবুর গ. ইনজীল ঘ. কুরআন মজিদ ।
এগুলোর মধ্যে সর্বশেষ আসমানি কিতাব হলো ‘কুরআন মজিদ’। এটি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হলেন হযরত মুহম্মদ (সা)-এর উপর নাযিল হয়েছে। কুরআন মজিদে আছে মানুষের জন্য হিদায়েত ও মুক্তির কথা। এতে আছে কেয়ামত পর্যন্ত বিশ্বের সকল মানুষের সব সমস্যার সমাধান, ভালো হওয়ার শিক্ষা। আমরা কুরআন মজিদের শিক্ষা মেনে চলব।

*****************************************
চতুর্থ শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ২য় অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর

তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ১ম অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর

তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ২য় অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর


সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন-হাদিস অনুযায়ী তারা পাকিস্তান এবং অন্যরা অন্যদেশ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২১



সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬০। তোমরা তাদের মোকাবেলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তত রাখবে। এর দ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত রাখবে আল্লাহর শত্রুকে, তোমাদের শত্রুকে, এছাড়া অন্যদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×