somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় - শিক্ষক নিয়োগ, গবেষণা, দক্ষতা, নৈতিকতা ও রাজনীতি (শিক্ষা)

০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছাত্র জীবনে আমার এক বন্ধুকে তিনটি টিউশনির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বন্ধুটি কোন টিউশনিই দুই মাসের বেশি কন্টিনিউ করতে পারেনি। অভিযোগ হল স্যারের বদমেজাজ, উচ্চস্বরে কথা বলা, ছাত্র/ছাত্রীদের সাথে তুই/তুকারী করা, বেত দিয়ে পেটানো, সময়মতো পড়াতে না যাওয়া, অপরিচ্চন্ন ড্রেসআপ, শরীরের দুর্গন্ধ ও অতি কথন। সর্বাপরি ছাত্রদের আপন করে নিতে না পারা।

তিনটি বাসায় আমি ইংলিশ ও একাউন্টিং পড়াতাম। আর বন্ধুটির দায়িত্ব ছিল গণিত পড়ানো। আমরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পড়াতে যেতাম বলে একে অন্যের সাথে তেমন দেখা হত না। একদিন এক ছাত্রীর মা আমার কাছে এসে বল্লেন, মেয়েটি গত দুইদিন স্যারের কাছে পড়তে বসেনি। অনেক চেষ্টা করেও রাজি করাতে না পেরে আমাকে জানাতে এসেছেন, আমি যাতে মেয়িটিকে বুঝিয়ে বলি। কারণ জানতে চাইলে মেয়েটি বল্ল, স্যারকে সে প্রচন্ড ভয় পায়। তিনি সব সময় ধমক দিয়ে কথা বলেন, তুই তুকারি করেন। এছাড়া সময়মত পড়াতে আসেন না ইত্যাদি আরো অনেক অভিযোগ। আমি অনেক দিন থেকে তাকে পড়ানোর ফলে মেয়েটির মানসিক অবস্থা সহজে বুঝতে পারতাম। মেয়েটি খুব মেধাবী ছিল বলে সব সময় হোম ওয়ার্ক করে রাখত। সে খুব ভদ্র ও নিরিবিলি ছিল। কোনদিন তার সাথে রাগারাগি করিনি বা বকাঝকা দেইনি। অনেক চেষ্টার পরও রাজি করাতে না পেরে স্যারকে বাদ দিতে হল। বাকি দু'টি টিউশনিতে কমিবেশি একই অবস্থা। কোনটি একমাস, কোনটি দেড়মাস টিকেছিল।

আমার এ বন্ধুটি গত আট বছর থেকে বাংলাদেশের নামকরা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত শিক্ষক। এখন আমেরিকায় পিএইচডি করছে। সর্বশেষ গত জানিয়ারিতে (২০১৮) তার সাথে দেখা হওয়ার পর সে বলেছে পিএইচডি করতে আমেরিকাতে আর আট-দশ বছর থাকতে হবে। তবে আমেরিকায় কাটানো বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেতন-ভাতা ঠিকই পাবে। আর পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করার পর বিদেশে ভাল সুযোগ সুবিধা পেলে আর দেশে ফিরবে না, সে দেশে থেকে যাবে।

প্রশ্ন করেছিলাম এত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়িয়েও কিভাবে বেতন পাওয়া সম্ভব? আর একজন শিক্ষক হিসাবে এটা কী নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য? তাছাড়া তুমি তো আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে নাও আসতে পার, তাই না? জবাবে বল্ল এটাই নিয়ম। সবাই এটা করে। বাংলাদেশের শত শত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতি বছর উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে বিদেশে যান। কিন্তু এদের অনেকেই ভাল চাকরি ও গবেষণার সুযোগ পেয়ে আর ফিরে আসে না। যেহেতু ফাও বেতন ভাতা পাওয়া যায় সেহেতু চাকরি ছাড়বো কোন আক্কেলে? আর এগুলো করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের মধ্য থেকে। এজন্য নাকি নীতি-নৈতিকতার কোন বরখেলাপ হবে না!


আমি হিসাব মেলাতে না পেরে এই বলে নিজেকে সান্তনা দিলাম, 'হাজার হোক মানুষ গড়ার কারিগর বলে কথা'। বিদেশে বছরের পর বছর উচ্চশিক্ষার নামে নিজের আখের গুছাতে ব্যস্ত থেকে কোন্ নৈতিকতার বলে শিক্ষকরা বেতন নেয়? একবারও কী মনে হয় না দেশের হত দরিদ্র, অভুক্ত মানুষের কথা; যাদের ঘাম ঝরা, রক্ত ঝরা টাকায় তাদের বেতন-ভাতা হয়। দেশের আইনটাই বা কেমন? সরকার কেন তাদের এ অনৈতিক কর্মকান্ডকে সাপোর্ট করে? কেন বছরের পর বছর শিক্ষক মামধারী এসব সার্থপরদের প্রতিনিয়ত সুবিধা দেয়? আমার বোধগম্য হয় না।

আমার পরিচিত একজন দেশের নামকরা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আছেন। অনার্সে দ্বিতীয় বিভাগ থাকার পরও ২০০৩ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় তিনি নিয়োগ পান। তিনি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর পাশাপাশি সারাদিন ব্যাচ আকারে বাসায় প্রাইভেট পড়ান। আপনারা হয়তো দ্বিধায় পড়ে গেছেন, এটা কিভাবে সম্ভব? হ্যা, তিনি একটি দামী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ও'লেভেল এবং এ'লেভেলের একটি বিষয়ের শিক্ষকও বটে! প্রতিদিন শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী উনার বাসায় টিউশনি পড়তে আসে। মাস শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন ছাড়াও উপরি কয়েক লাখ!

আহ! শিক্ষার কারবারী, জাতির বিবেক!!

আরেকজন ভদ্র মহিলা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করে বিয়ের পর একজন সাধারণ গৃহিনী হিসাবে ছিলেন। যেই না সরকার পরিবর্তন হলো, একদিন শুনলাম উনি নামকরা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেছেন! আমার মতো অনেকেই সেদিন অবাক হয়েছিলেন। এখন উনি পিএইচডি ডিগ্রিধারী! শুনা যায় টাকার বিনিময়ে তা অর্জিত হয়েছে দেশের আরেকটি নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এখানে, উনার হাজবেন্ডের টাকার পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রভাব ছিল বেশ। তিনি তিনজন মানুষের সামনেও গুছিয়ে কথা বলতে না পারলে কী হবে; উনার ডক্টরেট ডিগ্রী আছে, একটা সময় ঠিকই প্রফেসর হবেন।

গত নয় বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি হয়েছে। নিয়োগ পেয়েছেন ৯০০ জনের অধিক শিক্ষক! শুনা যায় এসময় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অনেক নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগের জন্য। এই সংখ্যাটা সম্ভবত গিনজ বুকে স্থান পেতে পারে। দল ভারী করার জন্য যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় তখন শিক্ষকদের পাঠদান ও গবেষণার যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয়টা মূখ্য হয়ে উঠে। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি অনেক বেশি। এমনও অভিযোগ আছে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ছাড়াই কোন কোন ছাত্রকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যা সত্যি বেদনাদায়ক।

এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলে এবং রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে হলে এতো প্রশ্ন হতো না। কারণ, এর আগের বিশ বছরেও ৯০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। এগুলো ধারাবাহিকভাবে হওয়ার কথা ছিল, হঠাৎ করে নয়। বিশ্ববিদ্যালয় তো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, তাহলে বাকী বছরগুলোতে প্রশাসন হাত গুটিয়ে বসেছিল কেন? এই ৯০০ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় পরিচয় ছিল রাজনীতি, পাশাপাশি অর্থ। এমন কিছু বিভাগ খোলা হয়েছে যেগুলো আদৌ প্রয়োজন নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঊর্দু বিভাগ আছে! অথচ জাপানিজ-চায়নিজ-স্পেনিশ-জার্মান-ফ্রেঞ্চ-পর্তুগীজ-রুশ ইত্যাদি ভাষার বিভাগ থাকার কথা ছিল।


এমন নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের সাথে চরম বেমানান, বিব্রতকর। শিক্ষকরাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেরুদণ্ড। আর শিক্ষকের প্রধান যোগ্যতা হলো জ্ঞান, রাজনৈতিক পরিচয় কোন অবস্থাতেই যোগ্যতা হিসাবে বিবেচ্য হতে পারে না। এ ধারা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান।

শুনা যায় অনেক শিক্ষক অন্যের গবেষণা কর্ম শতভাগ নকল করে ধরা পড়েছেন। রাজনীতি যেখানে মান মর্যাদা আর রুটি রুজির প্রধান হাতিয়ার সেখানে অন্য শিক্ষকের গবেষণাকর্ম চুরি হবে এটাই স্বাভাবিক। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতিটাই তো বেশিরভাগ শিক্ষকের গবেষণার মূল বিষয়বস্তু। বিষয়ভিত্তিক গবেষণার সময় কই!

শিক্ষা, গবেষণা, পাঠদান, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আরো উৎকর্ষ সাধনের পথ ছেড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি এবং ব্যক্তিগত পদ-পদবী আর দলাদলির স্বার্থে শিক্ষকরা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য পৃথিবীর সেরা দুই হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে বাংলাদেশের একটিও নেই। ভবিষ্যতে যে তালিকায় আসবে তার কোন লক্ষণ দেখছি না। রাজনীতি বাদ দিয়ে শিক্ষকরা গবেষণায় মনযোগ না দিলে সে সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের প্রায় সবকয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় রাজনৈতিক বিবেচনায় ও সুপারিশে। যে দলীয় সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে তাদের মতাদর্শের আলোকে শিক্ষক নিয়োগ হয়। এছাড়া ক্লাসে ফাস্টক্লাস ফাস্ট হতে আছে অনেক স্বজনপ্রীতি। কোন কোন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগও মাঝে মাঝে শুনা যায়। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়ায় বেশিরভাগ শিক্ষক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি নতজানু থাকে। শিক্ষক রাজনীতির আড়ালে লাল দল, নীল দল নামে রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। এখানে ভাল শিক্ষক হওয়ার প্রচেষ্টার চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে খুশি রাখার প্রতিযোগিতা বেশি হয়।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা ৭০ ভাগ শিক্ষক প্রত্যক্ষভাবে দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। এটা দুর্ভাগ্যজনক। তরুণ শিক্ষকরা রাজনীতি করেন অপেক্ষাকৃত ভাল বাসস্থান, স্কলারশীপ ও সিন্ডিকেট সদস্য হওয়ার আশায়। আর বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ শিক্ষদের লক্ষ্য থাকে প্রক্টর, প্রভোস্ট, ডিন, উপ-উপাচার্য, উপাচার্য এবং বিভিন্ন সংস্থা বা কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়ার।


বিশ্ববিদ্যালয় হল গবেষণার জায়গা। সারা পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাই করা হয়। সেসব দেশে শিক্ষকদের রাজনৈতিক পরিচয় নেই। স্বজনপ্রীতি নেই। তাদের শিক্ষকতার মান ও গবেষণার উপর নির্ভর করে তাদের মর্যাদা ও পদোন্নতি। আর আমাদের দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গবেষণা বাদ দিয়ে অন্যের লেখা কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেন। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। স্বনামধন্য কিছু শিক্ষক অন্যের গবেষণাপত্র হুবহু নকল করে ধরা পড়েছেন। এটা সত্যি জাতি হিসাবে আমাদের লজ্জিত করেছে।

এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাস্টক্লাস ফাস্ট হওয়া মানে ভাল শিক্ষক হওয়ার গ্যারান্টি বুঝায় না, এটা নিয়োগ দাতাদের বোঝা প্রয়োজন।এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কোন রাজনৈতিক দল নয় যে বাছ বিচার না করে কর্মী হিসাবে নিয়োগ দেবেন। লন্ডনে দেখেছি যদি কোন ছেলে/মেয়ে শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে নিতে চায় তবে ছাত্র জীবনে অত্যন্ত সতর্ক থাকে, যাতে কোন অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত বা সামাজিক বিশৃংখলার কোন রেকর্ড না থাকে। আমার এক ব্রিটিশ বন্ধু তার বান্ধবীকে সামান্য শারিরিক নির্যাতনের রেকর্ড থাকায় সেকেন্ডারী স্কুলের শিক্ষক হওয়ার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হয়েছিল। আর আমাদের এখানে চান্দাবাজ ছাত্র, রাজনৈতিক গুন্ডা, অস্ত্রবাজ ছাত্র, মামা-চাচার প্রভাব, মন্ত্রী/এমপিদের সুপারিশ ইত্যাদি হল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার অন্যতম প্রধান যোগ্যতা।

একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে অবশ্যই ভদ্র, বিনয়ী, ধৈর্যশীল, গবেষক, পরিশ্রমী হতে হবে। থাকতে হবে সুন্দর ও সাবলীল উচ্চারণ, আকর্ষনীয় বাচনভঙ্গী ও ব্যাক্তিত্ব। হতে হবে রাজনৈতিক দলের পরিচয়মুক্ত কিন্তু রাজনীতি সচেতন। ছাত্র/ছাত্রীদের শ্রদ্ধা অর্জন করার যোগ্যতা। সিলেবাসের বাইরে গিয়েও সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতি, রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও দৈনন্দিন ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোর উপর নজর রাখা এবং এসব বিষয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের জ্ঞানদান করা। অসাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষন করা, সঠিক সময়জ্ঞান থাকা, চরিত্রবান হওয়া। পরিষ্কার-পরিচ্চন্ন পোষাক পরিচ্ছদ পরিধান করাও একজন শিক্ষকের ভাল শিক্ষক হওয়ার অন্যতম যোগ্যতা।

সবচেয়ে অবাকের বিষয় বিশ্বের নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের দেশের অসংখ্য প্রফেসর, রিসার্চার আছেন। এরা এই নোংরা রাজনীতি ও স্বজনপ্রীতির জন্য দেশে ফিরে আসে না। এভাবে প্রতি বছর মেধা পাচার হয়। আর এই সুযোগে গলাবাজ আর সুযোগ সন্ধানীরা শুণ্যস্থান পূরণ করে। পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ গবেষক বিদেশী। সেসব দেশ জানে কিভাবে গুণীর মর্যাদা দিতে হয়। এজন্য এই গুণীরাই তাদের আবিষ্কার ও দর্শন দিয়ে নিজ দেশের পরিবর্তে সেসব দেশের উন্নয়নে অবদান রাখেন। আমরা করি মেধাবীদের দেশ ছাড়া, আর ওরা মেধাবীদের বিভন্ন দেশ থেকে জড়ো করে দেয় নাগরিকত্ব! পাশাপাশি পর্যাপ্ত গবেষণার সুযোগ করে দেয়। এজন্যই তারা আমাদের চেয়ে দুইশত বছর এগিয়ে। তারা জানে কিভাবে গভীর সমুদ্র থেকে মুক্তা আহরণ করতে হয়।

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক উচুমানের শিক্ষক ও গবেষক আছেন। যাদের একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান থাকে শিক্ষা ও গবেষণায় নিজেকে নিয়োজিত রাখা। এমন অসংখ্য শিক্ষকের সান্নিধ্য আমি পেয়েছি। উনাদের চেহারা চোখের সামনে ভাসলে একটা বাড়তি অনুপ্রেরণা পাই। দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা অটোমেটিক অবনত হয়। তাদের জ্ঞানগর্ব কথাগুলো আমাদের জীবন চলার খোরাক যোগায়, গবেষণায় আগ্রহ যোগায়, দেশপ্রেমে উদ্ভোধ্য করে, বিশ্বমঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে সাহস যোগায়। আমার এ লেখাটি এসব খাঁটি মানুষ গড়ার কারিগরদের বেলায় প্রযোজ্য নয়।।



ফটো ক্রেডিট,
গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:৪৫
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×