somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি ব্যর্থ প্রেম ও বাসর রাতের গল্প

১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হঠাৎ করেই বিয়ে টা করে ফেলছি! তাই কাউকে জানাতেও পারি নি! :-/ পারিবারিক ভাবেই বিয়ে টা হলো। বালিকাও আমার পূর্ব পরিচিত না। যাক সেসব কথা। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

বাসর রাতে কথা তো আর বলা যায় না তবুও কিছু টা শেয়ার করি!

আমাদের বাসর রাতের কথা:

সব ব্যস্ততা শেষ করে যখন রাত বারো টা র দিকে বাসর ঘরে ঢুকতে যাবো তখন ই কাজিন দের বায়না বাসর ঘর সাজাইছে বকশিশ না দিলে বাসর ঘরে ঢুকতে দিবে না।

কি আর করা আমার বালিকা বাসর ঘরে আমার জন্য অপেক্ষা করছে তাই দেরী না করে 500 টাকা
দিলাম।

এ কি! ওরা 500 নেয় না! কি করা দিলাম আরো 500 অবশেষে ওরা আমাকে বাসর ঘরে ঢুকতে দিলো

বালিকা ঘুমটা দিয়ে বসে আছে! বালিকার পাশে বসলাম। কি বলবো বুঝতে ছিলাম না। প্রেমের বিয়ে হলে না বুঝলেও চলতো কিন্তু পারিবারিক বিয়ে। তাই একটু আনইজি লাগছে। কি আর করা যা বলার আমাকেই তো বলতে হবে। বালিকা তো আরো বলবে না।

বালিকার ঘুমটা একটু সরিয়ে দিতেই বালিকার চাঁদ মুখ টা ভেসে উঠলো! লজ্জায় বালিকা যেন মরেই
যাবে!

-কেমন আছো?

-বালিকা: খুব নিচু সুরে বললো ভালো। আপনি?

-আমি তো মহাভালো। তবে আপনি নয় তুমি চাইলে তুমি করেও বলতে পারো।

-আচ্ছা ঠিক আছে!

-তোমাকে কিছু কথা বলবো। তুমি কি শুনবে?

-জ্বি বলেন।

-দেখো আজ থেকে আমাদের একটা নতুন জীবন শুরু হলো। গতকাল ও তুমি ছিলে কারো
মেয়ে। আজ আমার স্ত্রী। কারো পুত্রবধূ কারো ভাবী।
কারো মামী ইত্যাদি। অল্প ব্যবধানেই কত পরিবর্তন
তাই না?
-
-তোমার বাবা মা তুমি সবার ইচ্ছাতেই আমাকে বিয়ে করেছো। তার মানে তুমি আমাকে অপছন্দ করো না। তবুও যেহেতু আমার সম্পর্কে তোমার আগে তেমন কোন জানা শোনা নাই তাই কিছুটা ভয়ে থাকা অস্বাভাবিক কিছু না। দেখো আমরা এক সাথে বাকী জীবন কাটাবো। তাই পরস্পরের প্রতি ট্রাস্ট সম্মান ও ভালবাসা থাকা জরুরী। তাহলে হয়তো আমরা সুখী হতে পারবো। আমি সবসময় ই চাইবো তোমার কাছে অনেস্ট থাকতে। কিছু কথা না বললে তুমি কখনো ই জানবে না। তবে বিবেকের কাছে আমি ছোট ই থাকবো। তাই যার সাথে নতুন
একটা জীবন শুরু করতে যাচ্ছি তাকে বলার প্রয়োজনবোধ করছি।

প্রতি টা মানুষের জীবনেই দুই টা ভাগ থাকে। বিবাহিত ও অবিবাহিত। আমার বিবাহিত জীবন তোমাকে সাথে নিয়ে শুরু হলো। কিন্তু আমার অবিবাহিত জীবনে একজন কে আমি ভালোবাসতাম। মেয়েটি ছিলো অনেক রূপবতী। তার পারিবারিক অবস্থাও ভালো ছিলো। তার দৃষ্টিতে আমি তার একদম ই অযোগ্য ছিলাম। আমার অনেস্টি পারসনালিটি শিক্ষাগত যোগ্যতা সব কিছু ই মূল্যহীন ছিলো কারণ আমি লুকিং স্মার্ট না। ফর দ্যাট রিজন সে আমাকে রিজেক্ট করে। সে অনেক টাকাওয়ালা স্মার্ট ছেলে কে বিয়ে করে ধীরে ধীরে আমার থেকে দূরে চলে যায়। কষ্ট হলেও আমি মেনে নেই। এরপর আর কখনো কাউকে নিয়ে ভাবি নি। নিজেকে গড়েছি। স্টাডি শেষ করেছি। প্রতিষ্টিত হয়েছি। এরপর মা বাবার পছন্দে তোমাকে বিয়ে করেছি।

আমি কিন্তু চাইলেই সব তোমার কাছে লুকিয়ে যেতে পারতাম। তুমি কখনোই এসব জানতে না। কিন্তু আমি চাই তুমি আমাকে জানো আমাকে বুঝো। আমি খারাপ থাকলে আমাকে ভালো পথে নিয়ে আসো। আমাকে সুন্দর কিছু স্বপ্ন নিয়ে বাঁচার প্রেরনা দাও। আমি বিশ্বাস করি তুমি আমাকে গ্রহণ করবে।

এ কি! তুমি কাঁদছো কেন? কি হলো আমি খুব খারাপ তাই না ?

-ছিঃ কি বলছেন এটা। আমাকে কি কিছু বলতে দিবেন?

-এই রাত টি প্রতি টা মেয়ের ই স্বপ্নের একটা রাত। এই রাত নিয়ে যেমন অনেক আকাঙ্খিত থাকে তেমনি অনেক আতংকিত ও থাকে। আমিও ছিলাম, এই রাতে যে পুরুষ টি জীবনে আসে সে আমার জীবন টা কে ফুলশয্যা ও বানিয়ে দিতে পারে আবার বিভীষিকাময় ও করে তুলতে পারে। আর আপনাকে যেহেতু আমি আগে থেকে জানি না তাই একটু বেশী ই আতংকে ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা টা আপনি। যেখানে একটা মেয়ে নিজেকে সবচেয়ে নিরাপদ ভাবতেই পারে। আমি হয়তো পৃথিবীর
সৌভাগ্যবান মেয়েদের একজন হয়ে জন্মেছি তাই আপনাকে স্বামী হিসেবে পেয়েছি।।।

-এতটা নিশ্চিত হলে কিভাবে?

-প্রতি টি কোন নারী ই তার স্বামী কে চিনতে ভুল করে না। আমি ও করিনি। আর যেসব কথা বলেছেন আমি মোটেও কষ্ট পাই নি কিংবা আপনাকে খারাপ ও ভাবি নি। বরং খুশি ই হয়েছি। আপনি যে কথা গুলো চাইলেই গোপন করে যেতে পারতেন তা আমার শেয়ার করেছেন। যা অনেকেই করে না। এজন্য আপনি প্রথমেই আমার বিশ্বাসের বড় একটা জায়গা দখল করে নিয়েছেন। কারো সাথে ভালো থাকার জন্য ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠার জন্য বিশ্বাস টা খুব ই জুরুরী। আর সেই মানুষ টি যদি হয় সারা জীবনের সাথী তবে তো আরো বেশী জরুরী।

আর কিছু অতীত থাকে যা বর্তমান কে নষ্ট করে দেয়। ঐ রকম অতীত কে বর্তমানে না টানাই ভালো। আপনার জীবনে এখন আমি আর আমার জীবনে আপনি। এটাই বর্তমান। আর এই বর্তমানেই আমাদের ভালো থাকার সব কিছু আছে। চাইলেই আমরা একটা স্বর্গ রচনা করতে পারি।

আর ঐ মেয়ে টি কে একটা ধন্যবাদ। যে আপনাকে ছেড়ে অন্য কাওকে বিয়ে করেছে!

-কেন?

-কারণ সে আপনাকে ছেড়ে না গেলে আমি কখনোই আপনাকে পেতাম না। পৃথিবীর যে কোন মেয়েই আপনার মত একজন ভালো স্বামীর জন্য অপেক্ষা করে। আমি চেষ্টা করবো আপনাকে ঐ মেয়ে থেকে সুখী করতে। আমি হয়তো তার মত সুন্দরী না। তবুও..

-দেখো তো পাগলী টা বলে কি! আমার চোখে তুমি এখন সবচেয়ে রূপবতী।

-তুমি কি কখনো আয়নার সামনে যাও না? না গেলে আয়নার সামনে যেও তুমি নিজেই তোমাকে দেখে অবাক হয়ে যাবে। সৃষ্টি কর্তা তোমাকে এত সুন্দর করে বানিয়েছে যা অবর্ননীয়। আর তোমাকে যে আমার জন্য বানিয়েছে এজন্য নিজেকে এখন রাজকুমার মনে হচ্ছে। সত্যি ই রাজকুমারের ও হয়তো এত সৌভাগ্য হয় না।

বালিকা লজ্জাবতী হয়ে মৃদু মুখের হাসিতে নিচের দিকে চেয়ে আছে! আমি বালিকার কপালে অলতো করে একটা চুমু এঁকে
দিলাম!! ..........

(এক বড় ভাইয়ের লিখা)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:১৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×