somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষিতার চিৎকার কি প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছাবে?

১০ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বনানীর ধর্ষক শাফাত পিস্তল তাক করে ছিলো প্রথম ভিকটিমের দিকে।হিস হিস করে বলে, “কিরে চিনস এইটা?” সেই সাথে চলছিলো ভয়ংকর রকমের গালি। বেশ্যা, মাগী আর অকথ্য সব শব্দ। নাঈম আশরাফ নামের ধর্ষকটি লাফিয়ে লাফিয়ে কিল ঘুষি চড় দিচ্ছিলো ভিকটিমদের। তাদের একটাই কথা, ওদের সাথে “সেক্স” করতে হবে।



তিনজন মেয়ে ছিলো আর একটি ছেলে। তারা এসেছিলো শাফাতের জন্মদিনের পার্টিতে। ওদের চারজনকে বলা হয়েছিলো প্রায় ১০০ জনের মত এক জন্মদিনের পার্টি। কিন্তু এসে দেখে কেউ নেই...কিছু নেই।
যেই মা ১০ মাস ধরে গর্ভ ধারন করলেন শাফাতকে, সেই মার পূত্র তার ২৬ তম জন্মদিন পালন করবে দুইটি নারীকে ধর্ষন করে। এই ছিলো শাফাত, নাঈম আর শাদমানের পরিকল্পনা। পুরো ঘটনায় দালালের ভূমিকায় ছিলো শাদমান।
এরা ছাড়াও ছিলো ধর্ষক শাফাত, ধর্ষক নাঈম আশরাফ, ধর্ষক শাদমান সাকিফ। ওই তিনজন মেয়ের সাথে যে ছেলেটি জন্মদিনের পার্টিতে এসেছিলো সেই ছেলেটি অনেকবার কাকুতি মিনতে করেছে ছেড়ে দিতে।
ধর্ষকরা ছেড়ে দেয়নি বরং ছেলেটিকে নিয়ে মজা করেছে। পা দিয়ে লাথি দিয়েছে, চড় দিয়েছে।

অভিযোগকারী দু’জন ভিকটিম ছাড়াও বাকী যে মেয়েটি ছিলো, ধর্ষকরা সেই মেয়েটিকে চেঁচিয়ে বলছিলো জামা কাপড় খুলতে। তারা তার অনাবৃত শরীরের নাচ দেখবে। নাঈম বলে, "না না নাচ না, গ্যাং রেইপ হবে আজ।" বাদিনী দ্বয়ের একজন শাফাত আর নাঈমের পায়ে ধরে কাঁদতে থাকে। ভাইয়া প্লিজ এই মেয়েটাকে ছেড়ে দেন বলে।

ধর্ষক নাঈম কি ভেবে ছেড়ে দেয়। বলে উঠে, “তাহলে তুই আয়”। এই বলে মেয়েটিকে ৭০২ নাম্বার রূমে গিয়ে নির্যাতন করতে থাকে। এদিকে শাফাত টেনে নেয় আরেক জনকে। সারা রাত ধরে নির্যাতন করে দুটি মেয়েকে। একটা পর্যায়ে দুটি পা চেপে ধরে শাফাতের। “ভাইয়া প্লিজ মাফ চাই আপনাদের কাছে...প্লিজ”

শাফাত গোংরাতে গোংরাতে পশুর মত চিল্লাতে থাকে। কুত্তার বাচ্চা, খানকী মাগী, বেশ্যা তোরা না বলছিলি শুবি না, আসবি না!!! দেখ কি করেছি তোদের। শাফাত এরই আগে বলে রাখে তার ড্রাইভার বিল্লালকে। বিল্লাল ঘুরে ঘুরে দুইটি রূমে ভিডিও করতে থাকে।
রেইনট্রি’র দুইজন কর্মকর্তা, বেয়ারা এসে খোঁজ নিয়ে যায় সব ঠিকমত চলছে কিনা। বাইরে দাঁড়ানো শাফাতের বডি গার্ড আবুল কালাম আজাদ।

ওদিকে শাফাত চিল্লাতেই থাকে, “আমার বাপ কি বাল ফালায়? সোনা বেচে...সোনা। এই দেশের এয়ারপোর্টের সব সোনা কই যায়? কইত্থেইকা আসে? সব আমার বাপের আন্ডারে। তোগো মতো এমন দুই একটারে কাইটা ভাসায়া দিলে কেউ টের পাইবো না”
অন্য রূম থেকে চিৎকার ভেসে আসতে থাকে। নাঈম আসরাফ পেটাচ্ছে আরেক ভিকটিমকে। চিৎকার...কান্না...আর্তনাদ। পুরো ঘটনার তদারকি করতে থাকে শাদমান সাকিফ।

ধর্ষন শেষ হয়ে ক্লান্ত ধর্ষক এবার ওদের সাথে আশা ছেলেটিকে ইচ্ছেমত লাথি দেয়। বলে, “যা তুইও ওই ঘরে গিয়ে করে আয়”। ছেলেটি অপমানে আর কষ্টে ঘরের একটি কোনে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে।
মেয়েটি আমাকে বলে, ভাইয়া এই ঘটনার পর কতবার মনে হয়েছে মরে যাই। কতবার ভেবেছি সব কিছু ছেড়ে পালাই। কিন্তু পারিনি ভাইয়া। ভাইয়া একটা সময় মনে হয়েছে হলি আর্টিজানের জঙ্গীরাও ওদের থেকে ভালো। আমি প্রতিটি রাতে দুঃস্বপ্ন দেখি আর কাঁদি। কাউকে বলতে পারিনা। দুই বান্ধবী মিলে ফোনে কথা বলি আর কাঁদি।

এর মধ্যে আমাদের সেদিনের ভিডিও ওরা ছেড়ে দিয়েছে বলে আমাদের ফোন করে জানায়। বলে, “তোরা হইলি এখন আমাদের কেনা মাগী। যখন ডাকমু আসবি”
একদিন এক ভিকটিমের বাসায় শাফাতের দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ যায়। ভয় পেয়ে যায় বাসার সবাই। আস্তে আস্তে জানাজানি হতে থাকে। হয় নাঈম আর শাফাতের সয্যা সঙ্গী হও, তা না হয় ভিডিও ভাইরাল।
একটা পর্যায়ে ওরা সিদ্ধান্ত নেউ ধর্ষকদের সাথে সমোঝোতা করবে। সেই কথা মত ধর্ষক নাঈম আর শাফাতের দুই বড় ভাইকে ধরে ভিকটিম মেয়েরা। দুই বড় ভাই বোঝায় ধর্ষকদের। ধর্ষক নাঈম আর শাফাত দাঁত বের করে হাসে। শাফাত বলে, “তাইলে বেইবী আমাদের বিয়া করবা?” এই বলে হাসতে থাকে সেই বড় ভাইদের সামনেই। কোনো সমঝোতা-ই হয়না আর।
দুই ভিকটিমদের একজন হঠাৎ করে সমস্ত ক্রোধ নিয়ে জ্বলে ওঠে। আরেক ভিকটিমকে বলে, আমরা পুলিশের কাছে যাব। যা থাকে কপালে। সব বলব। এইভাবে বেঁচে থাকা অসম্ভব।

পুলিশে জানাবার আগে একজন ভিকটিম জানতে পারে শাফাতের ওয়াইফ আছে। সিদ্ধান্ত নেয় তাঁকে জানাবে সব প্রথমে। শাফাতের প্রথম স্ত্রী পিয়াসা কে খুঁজে বের করে একজন কিন্তু জানা যায় পিয়াসার সাথে ৮-ই মার্চ শাফাতের ডিভোর্স হয়ে গেছে।
পিয়াসার কাছে অনুনয় বিনয় করে ভিকটিমদের একজন। বলে, আপু প্লিজ আমাদের সাথে একটু থানায় চলেন। পিয়াসা প্রথম দিন যায় অসহায় দুইটি মেয়েকে দেখে কিন্তু তিনি বার বার সতর্ক করে দেন যে এই ছেলেদের যতটা খারাপ সে দেখেছে তার থেকেও দিগুন খারাপ তাদের বাবা। বিশেষ করে শাফাতের বাবা দিলদার। নগরের সবচাইতে বড় সোনা চোরাচালানকারী।
পিয়াসা শুধু প্রথম দিন তাঁদের সাথে থানায় যায়।
এর পর গুনে গুনে তিন দিন থানার ওসি ফরমান আলী আর তদন্ত কর্মকর্তা মতিন তাদের ঘুরায়। এইসব কইরা কি হইবো, বাসায় যাওগা, জানাজানি হইলে বিয়া হইবো না, এরা প্রভাবশালী, এই বয়সে বিপদে পড়লে কিন্তু আর উঠতে পারবা না...এইসব বলতে থাকে ওসি ফরমান।
একটা পর্যায়ে নাছোড়বান্দার মত থানায় পড়ে থাকে ভিকটিম আর তাঁদের মা’রা। থানা মামলা নেয়। ফরমান আর তদন্ত কর্মকর্তা মতিন যথাসাধ্য চেষ্টা করে মামলাটা শেষ করে দিতে।

এখন লন্ডনে রাত বাজে চারটা। আমি ঘুমাইনি। ঘুমাতে পারিনি। আমার স্মৃতিতে, মজ্জায় শুধু মিশে আছে মেয়েটার হু হু কান্নার শব্দ। ভাই...প্লিজ...প্রধানমন্ত্রীকে একটু বলবেন। উনিতো মেয়ে...উনি বুঝবেন...
আমার চোখ ভেসে যায়...আমি বুঝতে দেইনা। ভাইয়ের চোখের জলে বোন যদি আরো ভেঙ্গে পড়ে...
আমি সন্তর্পণে কান্না লুকাই...

- Nijhoom Majumder ভাই এর পেজ থেকে!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:৪০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×