somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক মিনিটের গল্পঃ দাঁত

৩০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন অতি কৌশলি ঝানু অসৎ ব্যবসায়ী আটলান্টার এক ডেন্টিস্ট ক্লিনিকে ফোন করে ডেন্টিস্টের সাথে আলাপ করছেন।
দাঁতে প্রচন্ড ব্যথা, একটা দাঁত তুলে ফেলতে হবে। আপনারা কত টাকা চার্জ করবেন।
আমাদের রিগুলার ফি হলো ৩০০ ডলার।
কিন্তু ব্যবসায়ী'দের জন্য কি আপনারা একটু ডিসকাউন্ট দিবেন না?আমরা যে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখি।
আচ্ছা ঠিক আছে, ২৮০ ডলার।
২৮০ ডলার একটু বেশী হয়ে গেলো। ২৮০ ডলার কেন লাগবে, প্লিজ যদি একটু বুঝিয়ে বলেন।
জ্বি বলছি। প্রথমে যে দাঁত তুলতে হবে, সে জায়গাটা এ্যানস্থেসিয়া করতে হবে। সেটার জন্য ফী টা একটু বেশী।
ও আচ্ছা। তাহলে একটা কাজ করুন। কোনোরকমের অবশ করানোর দরকার নাই। একেবারে সরাসরি তোলে ফেলবেন। তাহলে কত চার্জ করবেন।
না, এটা একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। এভাবে কি সম্ভব। এতে রোগীর প্রচন্ড কষ্ট হবে। আচ্ছা, আপনি ২৫০ ডলার দিবেন।
২৫০ ডলার। এখনো একটু বেশী মনে হচ্ছে। আমি কি আপনাকে বেশী বিরক্ত করছি।
না না। তা হবে কেন? ধৈর্যের সাথে রোগীর সব প্রশ্নের জবাব দেয়া আমাদের পেশা'র অন্তভূর্ক্ত। এটা আমাদের নৈতিক কাজ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ডাক্তার। আমি কি আরেকটি প্রশ্ন করতে পারি?
জ্বি বলুন।
আচ্ছা, দাঁতটা ওঠাবে কে?
কেন আমি নিজেইতো ওঠাবো।
আপনাদের কোনো ট্রেইনি নেই । যে সবেমাত্র ডাক্তারি পাশ করে ইন্টার্নি করছে এরকম কেউ।
জ্বি আছে ।কিন্তু কেন বলুনতো?
যদি মনে করেন , ওনাদের দিয়ে কাজটি করান, তাহলে কি আরেকটু কম হবেনা।
জ্বি। তা অবশ্য হবে। কিন্তু, এতে আপনি পুরো প্রফেশনাল সেবাটা পাবেন না।
না, না । অতো প্রফেশনাল দরকার নাই। কাজ হলেই হবে।
ঠিক আছে। তাহলে ১০০ ডলারেই হবে।
১০০ ডলার। জ্বিনা ডাক্তার। বেশীই মনে হচ্ছে। আর কোনো অপশন নেই।
ডাক্তার এবার একটু বিরক্ত। অল্প রেগে গিয়ে-জ্বিনা আর কোনো অপশন নেই।
আপনি কি রাগ করছেন?
ডাক্তার মনে মনে বলছেন- না রাগ করবো কেন? তুই তো আমার বড় মহব্বতের দুলাভাই। তুই একবার কাছে আয়। ডলার বাঁচানোর খায়েশ হয়েছে না, প্রফেশনাল দরকার নাই। কাগজে সাইন করবেন শুধু দুলাভাই। তারপর তোর দাঁত একটা না, মাগনাই সবকটা তোলে দিবো।প্লাস দিয়ে ধরবো আর টান দিবো।
এবার ডাক্তার আরো বিনয়ী হয়ে। না রাগ করবো কেন? বলুন। আর কি কি জানতে চান?
আচ্ছা। আপনাদের কি কোনো ট্রেনিং শেসান নাই। যেখানে নতুন কোনো ছাত্র কাজ করবে -আর বাকি সবাই দেখে শিখবে।

ডাক্তার এবার আরেকটু কৌতুহলি হয়ে। জ্বি জ্বি । সেরকমতো হয়। তবে ঐ রকম রোগীতো পাওয়া যায়না। যদি পাই মাঝে মাঝে তখন রোগীকেই আমরা বরং একটা সম্মানি বিল দিয়ে থাকি।

এবার ব্যবসায়ী খুব খুশী হয়ে -ডাক্তার আপনি তাড়াতাড়ি এ্যাপয়ন্টমেন্ট দিন। বলুন কবে আসবো।

আপনি কাল সকালেই চলে আসুন। আর আপনি সম্মানি হিসাবে ১০০ ডলার পাবেন।

ডাক্তার এবার ফোন ছেড়ে দিয়ে মনে মনে বলছেন। সারাজীবন অসৎ ব্যবসা করে টাকা আয় করেছি। এবার একটু সুযোগ এসেছে সৎ হওয়ার।
শালা রাজনীতিবিদ। দেশের মানুষের রক্ত চুষে টাকা আয় করো বলেই, কোনো মায়া নাই। সামান্য দাঁতের ব্যথায় ইউরোপ -আমেরিকা সিংগাপুরে উড়াল দাও। ৪৩ বছরে একটা ভালো হসপিটাল বানাতে পারলিনা। যেখানে নিজেরাই অন্তত চিকিৎসা নিতে পারিস। এই দাঁত নিয়ে অনেক দাঁতালো করেছিস। সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছিস বছরের পর বছর। এবার বাগে পেয়েছি বাছা। রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করলে জনগণ কি যন্ত্রণায় ভুগে তা প্রফেশনাল বাদ দিয়ে অপ্রফেশনাল দিয়ে দাঁত ওঠালে কেমন যন্ত্রণা হয় তার সামান্য একটা নমুনা পাবি। আর ফিরে যাওয়ার সময় যাবি মালেশিয়া হয়ে। সেখানে মাহাথিরের কিছু গু খেয়ে যাবি।

ব্যবসায়ী এবার নিজের অতিথি রুমে এসে বললেন-
স্যার, কাল সকাল দশটা বাজে এ্যপয়ন্টমেন্ট নিয়েছি। কোনো চিন্তা নাই স্যার। ওরা অনেকেই একসাথে থাকবে। শুধু কাগজে সাইন করলেই হবে।
আপনাকে কিছুই বলতে হবেনা। গম্ভীর হয়ে বসে থাকবেন, এতে আপনার ব্যক্তিত্ব আরো উজ্জ্বল হবে স্যার। শুধু হা করে থাকবেন, যা করার ওরাই করবে।


(C) আরিফ মাহমুদ।
(একটা কৌতুক অবলম্বনে)







সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২৩
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×