somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অন্তু নীল
মস্তিষ্কের ভিতর আমার এই ক্ষুদ্র জীবনটিকে আরো অনেক বেশি সুন্দর রুপে যাপন করি। স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি, আর ভালোবাসি স্বপ্ন দেখাতে । জীবন উপভোগই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য।

ঘুরে এলাম বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে কারখানা......।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে কারখানাটি অবস্থিত দেশের উত্তরের জেলা নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে। অনেকেই হয়তো জানেন যে, সৈয়দপুর শহরকে বাংলার চায়না টাউন বলা হয়। কারণ বাঙ্গালিদের পক্ষে কপি (নকল) করার মত যত ধরণের পন্য দেশে পাওয়া যায়, তার অধিকাংশই এই শহর হতে সাপলাই করা হয়। শুনে একটু অবাক হলেন তো? কিন্তু সত্য এটাই। এখানে প্রায় সব ধরণের সিগারেট, বিদেশী ছোট্ট যন্ত্রাংশ, বিদেশী সাবান, লোশন, ইন্ডিয়ান সাইকেল, ইন্ডিয়ান অন্যান্য দ্রব্যাদি এবং আরো অনেক দামী দামী বিদেশী পন্যের হুবোহু ডুপ্লিকেট কপি তৈরী করা হয়। সুতরাং সাবধান!

তবে রেলওয়ে কারখানাটি একেবারেই ইউনিক। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রিটিশদের আমলে ১৮৭০ সালে। আজ হতে দেরশত বছর আগে। প্রায় ১৩০ একর জায়গা জুরে এই বিশাল কারখানাটি অবস্থিত। এখানে মোট কারখানা ঘরের সংখ্যা ২৮টি। যাতে বিভিন্ন ধরেনের কাজ হয়ে থাকে। এর বাইরে আরো অনেক স্থাপনা রয়েছে। আমরা যারা কারণে অকারণে ব্রিটিশদের গালিগালাজ করে থাকি, এই কারখানাটি ঘুরে দেখলে তাদের কিছুটা হলেও তাতে ছেদ পরবে।

বর্তমানে এই কারখানাটিতে প্রায় ২৮০০-৩২০০ কর্মকর্তা কর্মচারী বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছেন। তাদের কেউ কেউ পার্টটাইম আবার কেউ ফুল্টাইম কর্মচারী। সাধারণত এই কারখানার কাজ হয় দুটি শিফট এ। সকাল সারে সাতটা হতে সারে এগারোটা এবং দুপুর সারে বারোটা হতে প্রায় পাঁচটা পর্যন্ত।

জনসাধারণের কারখানাটিতে প্রবেশ নিশিদ্ধ। তবে যদি কেউ উর্ধতন কোনো কর্মকর্তার রেফারেন্স নিয়ে আসেন কিংবা ভিতরে পরিচিত কেউ থাকে তাহলে কোনো সমস্যা নেই। বুঝেনই তো এটা বাংলাদেশ। যাইহোক, এবার শুরুকরা যাক একেবারে প্রধান গেট থেকে।


এটি হল কারখানার প্রধান গেট। প্রবেশ করার আগে ভিতরে কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে আলাপ করে নিতে হবে।

প্রবেশ করতেই হাতের ডানপাশে চোখে পরবে একটি ছোট্ট বাগান এবং ঐতিহ্যবাহি রেলের ঘন্টা।

আরেকটু এগোলেই নবনির্মিত "অদম্য স্বাধীণতা" স্থাপনা



প্রশাসনিক বিল্ডিং এর সামনে চোখে পরবে বহু পুরোনো কিছু ট্রেনের ইঞ্জিন এবং কো্চ







কারখানার ওয়ার্কশপগুলো ঘুরে দেখতে হলে সাথে অবশ্যই একজন গাইড লাগবে। সাধারণত কারখানা কতৃপক্ষ এ ব্যাবস্থা করে দেন। গাইড ছারা সবগুলো ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখা সম্ভব নয়। তালগোল পাকিয়ে ফেলবেন। কারণ ভালোমত প্রতিটি ওয়ার্কশপ দেখতেগেলে প্রায় সারাটাদিন লেগে যেতে পারে।
প্রথম ওয়ার্কশপ







চলছে কোচ বিল্ডিং এর কাজ। এই কারখানায় সাধারনত পুরাতন কোচ এবং বগিগুলোই মেরামত করা হয়।





সকালের সিফট এ কাজে ব্যাস্ত কর্মচারী বৃন্দ



এসব বুঝি লোহার হাট-বাজার





প্রতিটি ওয়ার্কশপের উপরের ছাউনিগুলো ঠিক এরকম



বিশেষ কোনো রকম নিরাপত্তা ব্যাবস্থা ছারাই ঝুকিপুর্ণ বগি ঝালাইয়ের কাজ করছেন একজন শ্রমিক



এসব শুধু নিয়মেই সীমাবদ্ধ



অত্যান্ত ঝুকিপুর্ণ লোহা গলানোর কাজ চলছে। ভয়ানক তাপমাত্রা যেন জাহান্নামের আগুনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। পুরো কারখানার মধ্যে সবথেকে ঝুকিপুর্ণ কাজ এটি। অথচ শ্রমিকদের তেমন কোনো নিরাপত্তার ব্যাবস্থা নেই।





জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে কাজ করছেন একজন শ্রমিক





বড় বড় মেশিনে চলছে যন্ত্রপাতি তৈরীর কাজ





যেসব খুচরো যন্ত্রাংশ তৈরী হয় এই কারখানার একটি শপে







বড় বড় আজব মেশিনের কারখানা









দশকের পর দশক ধরে হাজার হাজার যাত্রী পারাপারে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত ট্রেনের চাকাগুলো অলস বিশ্রামে





এ যেন চাকার সমাধি ক্ষেত্র





চলছে কোচ মেরামতের কাজ







এত যন্ত্রের তান্ডবের মাঝেও কিছু হার না মানা সবুজ মাথাচারা দিয়ে উঠে





ছেরে যাবার অপেক্ষায়





এদিক ওদিক কিছু ঘুরোঘুরি
যন্ত্রও করে মানুষের মন চুরি









অবশেষে ঘরে ফেরা। শত শত শ্রমিক, কর্মকর্তা- কর্মচারী গেটে অপেক্ষারত।। কারখানা ছুটি হওয়ার পর পুরো সৈয়দপুর শহরে এর ঢেউ লক্ষ করা যায়।





আমি যখন ফিরছিলাম তখন কারখানা প্রায় শুন্য। গেটের কাছে আসতেই এই ফুলটি আমারদিকে কেমন ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়েছিল। বিদায় জানাতে হয়তো..........


সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২৩
২৪টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×