somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সকলের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের ৮৬তম জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা

০৯ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি ও আওয়ামীলীগের আদর্শে বিশ্বাসী রাজনীতিবীদ মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান। তিনি আওয়ামীলীগের একজন উঁচুস্তরের নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন বহু মানবিক গুণের অধিকারী। আওয়ামীলীগের নেতা হলেও তিনি ছিলেন সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ও শ্রদ্ধার পাত্র। শুধুমাত্র একটি উপাদানের জন্য তিনি সকলের শ্রদ্ধাভাজন হন নাই। তিনি তৃণমূল হতে কাজ করে উচ্চাসনে উপবেশন করেছিলেন। তিনি দেশ-জাতি ও তাঁর দলের জন্য ছিলেন ঝড়ের রাত্রে নির্ভিক-দক্ষ-দৃঢ়-নিষ্ঠাবান কুশল কাণ্ডারি। সততা, মেধা, পরিশ্রম, প্রজ্ঞা, স্বীয় আদর্শে অবিচলতা, পরমতসহিষ্ণুতা তিনি হয়েছিলেন আদর্শ রাজনীতিতে আইকন। সকলের রাষ্ট্রপতি ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের জন্মদিন আজ। ১৯২৯ সালের আজকের দিনে জিল্লুর রহমান কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ৮৬তম জন্মদিন। বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের ৮৬তম জন্মদিনে আমাদের শুভেচ্ছা।


জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের একটি অভিজাত বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাসে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৬ সালে সিলেট রেফারেন্ডামে কর্মী হিসাবে তিনি যখন সিলেটে গিয়াছিলেন তখন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাখে তাঁর পরিচয় ঘটে। প্রথম সাক্ষাতে জিল্লুর রহমান বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনুগত হয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধুর ও আওয়ামী লীগের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা, ভালবাসা ও আনুগত্য এক মুহূর্তের জন্য চির ধরে নাই। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এ যাবৎ দেশের সবকয়টি আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছাড়াও জিল্লুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ বিভিন্ন সময় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনসহ '৭৩, '৮৬, '৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর-ভৈরব আসন থেকে জিল্লুর রহমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। '৯৬ এর আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তিনি এলজিআরডি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


জিল্লুর রহমান সম্পদশালী ছিলেন। তবে ভোগের প্রাচুর্যে তিনি নিমগ্ন থাকেন নাই। অর্থ ও ক্ষমতা তাঁকে কোন দিন প্রলুব্ধ করতে পারে নাই। তিনি ছাত্রজীবন হতে রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে পড়েন। তাঁর স্ত্রী আইভি রহমানও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জিল্লুর রহমান তার সহধর্মিনী ও মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী আইভি রহমানকে হারান। পারিবারিক জীবনে তিনি এক পুত্র ও দুই কন্যার জনক।


বঙ্গবন্ধুর জীবৎকালে তিনি যেমন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর, তিরোধানের পরে বঙ্গবন্ধুর তনয়া শেখ হাসিনার কাছেও তিনি ঠিক তেমনি ছিলেন। জহুরি যেমন রত্ম চিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তেমনি এই মহাত্মাকে চিনেছিলেন। বিপদে বন্ধুর পরিচয় হয়, এই সুপ্রাচীন নীতিবাক্যের তিনি ছিলেন জ্বলন্ত উদাহরণ। ২০০৬ সালের ১১ জানুয়ারি ফখরুদ্দীন আহমদের তত্তাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিলে যখন শেখ হাসিনা গ্রেফতার হন তার পর থেকেই জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। নবম জাতীয় সংসদে জিল্লুর রহমান সংসদ উপনেতা নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন এবং ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতাম সংগঠক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর, মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান গতবছর ২০ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে বিকেল চারটা ৪৭ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর মধ্যদিয়ে দায়িত্ব নেয়ার তিন বছরের মাথায় জীবনাবসান ঘটে দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তাঁর মৃত্যুতে স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রীর শোক প্রকাশ করেছিলেন এবং দেশে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছিলো।


আগামীদিনের প্রজন্মের চেতনা, প্রেরণা, দেশ সেবার প্রতীক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের আজ ৮৬তম জন্মদিন। বহু মানবিক গুণের অধিকারী সকলের রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের জন্মদিনে আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:১০
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×