somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উনিশ শতকের বাঙলার পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা, শিক্ষাবিদ প্যারীচরণ সরকারের ১৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নারী শিক্ষার অগ্রদূত, সমাজসংস্কারক এবং উনিশ শতকের বাঙলার পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা প্যারীচরণ সরকার। যিনি প্রথম বৃটিশ শাসিত বাংলার মানুষদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। তার পাঠ্যবই বাঙালির সমগ্র প্রজন্মকে ইংরেজি ভাষায় পরিচিত করেছে। তাঁর পাঠ্যবইসমূহ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে এবং অধিকাংশ ভারতীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বাংলায় নারী শিক্ষার অগ্রদূত ছিলেন প্যারীচরণ সরকার এবং এজন্য তাঁকে 'প্রাচ্যের আর্নল্ড' বলা হতো। তিনি তাঁর সময়কালে সুরাপান নিবারকরূপে সকলের দৃষ্টি ও শ্রদ্ধা আকর্ষণ করেছিলেন। বাঙালির ইংরেজি শিখবার তৎকালীন প্রবণতায় তাঁর রচিত 'ফার্স্ট বুক' বইটি বাঙলার সামাজিক ইতিহাসে অক্ষর-মূর্তি হয়ে আছে। অতি সহজ সরল ভাষায় ইংরেজি ভাষা উচ্চারণ বিধির একেবারে গোড়ার নিয়মকানুনগুলি লেখা আছে এই বইতে। অনেক গুণীজনের খুব পছন্দের ছিল এটি। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ নিজে ছোটবেলায় পড়েছেন এই বই। আজ এই শিক্ষাবিদের ১৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৭৫সালের আজকের দিনে তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। নারী শিক্ষার অগ্রদূত, সমাজসংস্কারক প্যারীচরণ সরকারের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

প্যারীচরণ সরকার ১৮২৩ সালেল ২৩ জানুয়ারি উত্তর কলকাতার চোরবাগানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম বৈরব চন্দ্র সরকার। প্যারীচরণ সরকার ডেভিড হেয়ারের পটলডাঙ্গার পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। ১৮৩৮ সালে হেয়ার সাহেবের স্কুল থেকে জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় মাসিক আট টাকা বৃত্তি লাভ করেন। অতপর হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। সেখানে সিনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় মাসিক চল্লিশ টাকা বৃত্তি লাভ করেন। ১৮৪৩-এ হিন্দু কলেজের শিক্ষা শেষ করেন। হিন্দু কলেজের শিক্ষা শেষ করে কিছুকাল হুগলী ব্যাংকে চাকরি করার পর হুগলী স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দেন। পরে তিনি বারাসতের গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধাণ শিক্ষকের দায়িত্ব পান। ১৮৪৬-১৮৫৪ পর্যন্ত তিনি এই স্কুলে কর্মরত ছিলেন। সেখানে কৃষি বিদ্যালয় স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।এরপর কুলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুলের প্রধান শিক্ষকরূপে আট বছর দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর চেষ্টায় স্কুলটির নাম পরিবর্তিত হয়ে হেয়ার স্কুল হয়। পরবর্তীতে ১৮৬৩ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের অস্থায়ী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন প্যারীচরণ সরকার।

প্যারীচরণ সরকার তার শিক্ষকতা জীবনে ছাত্রদের পড়াতে গিয়ে দেখেন, এদেশীয় ছাত্রদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ইংরেজি শেখার বই নেই। তখন তিনি নিজেই লিখে ফেললেন 'ফার্স্ট বুক অফ রিডিং ফর নেটিব চিলড্রেন'। পরে তিনি এর দ্বিতীয় ভাগ ও লিখেছিলেন। প্যারীচরণ সরকারের ফার্স্ট বুক হয়ত আজকাল আর কোন স্কুলে পড়ানো হয়না । কিন্তু তাঁর লেখা এই বই এর একটা কবিতা এখনো অনেকে মুখস্থ রেখেছেন, আর ছোটদের মুখস্থ করান। সেটা হল এইরকমঃ
Thirty days have September,
April, June and November,
February has Twenty -Eight alone,
And the rest have thirty-one.

প্যারীচরণ সরকার শুধু লেখেন নি, নিজে সেই বই ছাপাতেনও। উত্তর কলকাতায় এখনো রয়েছে তাঁর সেই বাড়ি এবং ছাপাখানা, যদিও জরাজীর্ণ অবস্থায়। ১৮৭৫সালের আজকের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন প্যারীচরণ সরকার। আজ এই শিক্ষাবিদের ১৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। নারী শিক্ষার অগ্রদূত, সমাজসংস্কারক প্যারীচরণ সরকারের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×