somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবে থেকে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ শুরু

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভালোবাসা দিবস বা ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকে পালিত হচ্ছে। দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপন হয়। যদিও অধিকাংশ দেশে দিনটি ছুটির দিন নয়। প্রাচীন রোমে ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ রোমান দেব-দেবীর সম্মানে ছুটির দিন বলে গণ্য হতো। রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘বিবাদ দিবস’ হিসেবে পালিত হতো।



১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হতো ‘লুপার্সালিয়া’ উৎসব। সে সময় তরুণ-তরুণীদের মেলামেশা সহজ ছিলো না। তবে ‘লুপার্সালিয়া’ উৎসবে তরুণীরা একটি মাটির পাত্রে নিজের নাম লেখা চিরকুট রাখতেন। অপেক্ষমাণ তরুণরা ওই মাটির পাত্র থেকে একটি চিরকুট উঠিয়ে নিতেন। চিরকুটে যে মেয়েটির নাম উঠে আসত, সেই মেয়েটিই উৎসবের দিনগুলোতে ছেলেটির পার্টনার হিসেবে বিবেচিত হতেন। এভাবেই তরুণ-তরুণীরা পরস্পরের কাছে আসার সুযোগ পেতেন। যে জোরার মধ্যে ভালোবাসা গড়ে উঠত, তাদের উৎসবের পর বিয়ে দেওয়া হতো।



সম্রাট দ্বিতীয় ক্লাউডিয়াসের সময়ে রোম রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও জনবিরোধী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সম্রাট ক্লাউডিয়াস বিশাল সৈন্য বাহিনী গড়ে তুলতে ইচ্ছে পোষণ করেন। কিন্তু রোমানরা কেউই স্ত্রী-পুত্র-কন্যা-পরিজন ত্যাগ করে সৈন্য বাহিনীতে যোগ দিতে ইচ্ছে প্রকাশ করেননি। এতে সম্রাট রাগান্বিত হয়ে রাজ্যে বিয়ে বন্ধের আইন জারি করেন। সম্রাট ভেবেছিলেন, বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ না হলে হয়ত অনেকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে উৎসাহ বোধ করবে। কিন্তু হলো বিপরীত। তরুণ-তরুণীরা ও রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ এক অংশ গোপনে বিদ্রোহ করলো। সম্রাটের অযৌক্তিক আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এগিয়ে এলেন ‘সেইন্ট ভেলেন্টাইন।’



‘সেইন্ট ভেলেন্টাইন’ তরুণ-তরুণীদের ইচ্ছে পূরণে গোপনে বিয়ের ব্যবস্থা করেন। একটি ছোট কক্ষে, মোমবাতির আবছা আলো-আঁধারে শুধু বর ও বধূ এবং সেইন্ট ভেলেন্টাইনের অনুচ্চারিত কণ্ঠে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে বিয়ে অনুষ্ঠিত হতো। সেইন্ট ভেলেন্টাইন কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করতেন, যেন মন্ত্র উচ্চারণেও শব্দ না হয় বা ঘটনা রাজার কানে না পৌঁছায়। কিন্তু একদিন কাঠের সিঁড়িতে পদশব্দ শোনা গেল। বিয়ে বন্ধনে আগত একজোড়া তরুণ-তরুণী পালাতে সক্ষম হলেও ভেলেন্টাইন পারলেন না, রাজপ্রহরীর হস্তে বন্দি হলেন। সেইন্ট ভেলেন্টাইনকে কারাগারে নিক্ষেপ ও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। সম্রাট কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড পেয়েও ভেলেন্টাইন সর্বদা হাসি খুশি থাকার চেষ্টা করতেন।



রাজ্যের তরুণ-তরুণীরা কারাগারে এসে তাকে উৎসাহ যোগাতেন। ভেলেন্টাইনকে ফুলে ফুলে সাজিয়ে দিতেন। কারাগারের কারারক্ষী অস্টারিয়াসের মেয়েটিও সাক্ষাৎ করতে যেতেন। কারারক্ষী অন্ধ কন্যাকে ভেলেন্টাইনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি দিয়েছিলেন। ভেলেন্টাইন তার অবসর মূহূর্তে মেয়েটির সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলাপ করতেন। এভাবেই কারারক্ষীর কন্যার সঙ্গে ভেলেন্টাইনের হৃদ্যতা গড়ে উঠে। আর মেয়েটিও এক সময় অন্ধত্ব থেকে পান। মেয়েটি উৎসাহ যোগান, সম্রাটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ভেলেন্টাইন ঠিক কাজই করেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহই তো করা উচিত।



কারারক্ষীর মেয়ের মাধ্যমে সেইন্ট ভেলেন্টাইন তার অনুরাগীদের এক চিরকুট পাঠালেন, স্বাক্ষর করলেন। চিরকুটটি তিনি লিখেন ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৬৯ এ. ডি। ওই দিনই রাজা ভেলেন্টাইনকে শারীরিক নির্যাতন ও শিরচ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন। সেইন্ট ভেলেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও ভালোবাসা থেমে থাকেনি। তার মৃত্যুর দিনটি সারা বিশ্বে ‘ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×