somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কি বললেন ভাই? সিটিং না চিটিং সার্ভিস?

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকার এয়ার র্পোট থেকে যেতে হবে মতিঝিল। গাড়ীর গায়ে লেখা আছে সিটিং সার্ভিস, সিট খালি ভাই সিট খালী ডাকা ডাকিতে উঠলাম, উঠেই দেখি সিট আছে কিন্তু খালী নাই। কন্টাকটর সাহেবকে ডাক দিয়া বললাম ভাই, সিট তো খালী নাই। তিনি আমাকে বললেন, ভাই সামনে খালি হবে। যেই কথা সেই কাজ অগ্যতা দাড়ানো ছাড়া আর কোন পথ খালি নাই, কথায় আছে। খেয়া নৌকার মাঝির সাথে ঝগড়া করার মানেই নিজের ক্ষতি করা ছাড়া আর কিছুই না। খিলক্ষেত আসার পড় দুইজন নামলো আর আমরা দাড়িয়ে আছি ৬ (ছয়)জন। এক জন ভ্দ্রলোক অত্যান্ত ভদ্রতা রক্ষার করার জন্য বললেন, চাচা বসেন। দেখলাম আমার একটু ভদ্রতা দেখানো দরকার বললাম, না বাবা আপনী বসেন, মনে হয় আপনী অনেক দুর যাবেন। লোকটা বসে পড়লেন। দুটো সিটই পূর্ণ হল আমরা দাড়িয়ে আছি ৪ জন, আবার কমপক্ষে ১০জন লোক খিলক্ষেত থেকে উঠে পড়লো, হুরমুর করে। এখন দেখতেছি, দাড়িয়ে থাকার জন্য যে উপরের পাইপ ধরবো তারও কোন সুযোগ পাচ্ছিনা সিট তো দুরে থাক। বাদুর দোলা হয়ে আমরা কুড়িল ফ্লাইওভার পাড়ি জমালাম।

লোক জন স্বাভাবিক ভাবেই ডাইভার ও কন্টাকটরকে গালাগালি করছে, ছোটখাটো ঝগড়া যে হচ্ছেনা তা কিন্তু ভাবাই যাচ্ছে না। যখন বসুন্দরা পার হলাম তখন আমাকে একটি অল্প বয়সের একটি ছেলে বলতে লাগলেন, অংকেল আপনী বসেন, ছেলেটি উঠে দাড়াতে যত সময় লেগেছে কিন্ত অন্য একটি লোক বসে পড়তে সেইটুকু সময় লাগলো কিনা এটাই ভাবার বিষয়। মুহুর্তের মধ্যে কি ঘটলো বুঝে উঠতে আমার যথেষ্ট সময় লেগেছে, আমি বেকুব হয়ে গেলাম। এখন যে ছেলেছি আমাকে বসতে বললেন, সে এবার ক্ষেপে গেলেন, এবং ঝগড়া আরম্ভ হলো-

-আরে ভাই, আমি তো চাচাকে বসতে বললাম, আর আপনী বসে পড়লেন?
-আমি সিট খালি পাইছি তাই, বসে তো দোসের কিছু দেখছিনা? সিট খালি পাইলে বসা জায়।
-আমি তো নেমে যাইনি, চাচা বুড়ো মানুষ দাড়াইয়া আছে তাই্, একান্ত মানবিক কারণে সিট খালি করলাম আর আপনী এটা কি করলেন।
-আমি তো বেআইনী কিছু করি নাই। আপনী খালি করেছেন আর আমি পূর্ণ করলাম।
-আমি আপনার সাথে ঝগড়া করতে রাজি না। আমার সিটে আমাকে বসতে দিন।
-আমি তো বসে আমি কেন উঠবো? সিটে কি নাম লেখা আছে?
-আপনাকে দুটো থাপ্পর মেরে যদি উঠাইয়া দিই, তখন দেখতে পাবেন, নাম লেখা আছে কিনা। বুঝেছেন............

এক পরজায় হাতা হাতির রুপ নিল। ঝগড়া দেখলাম প্রায় আধা ঘন্টা, বড় ক্লান্ত লাগতেছিল, এমন সময় রাগ আর ধরে রাখতে পারলাম না। এই বার মুখ খুললাম, বেয়াদপ লোকটাকে বললাম আপনীই বসুন, তবে কিছু কথা শুনুন, হয়তো জীবনে কাজে আসতেও পারে, কিন্তু চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। সে রকম হলো। সে বসে আছে আর আমি তাকে বুঝাতে লাগলাম।

এক পর্যায়ে বললাম আপনার বাবার সাথে যদি কেউ এরুপ আচারন করতো তখন আপনী কি করতেন?
ঠিক সেই সময় ঐ নিশ্চুপ ছেলেটি সিটে বসা ছেলেটিকে, জোড়ে একটি লাথি মারলেন, আমার মনে হয় লাথির ওজন এতই ছিল যে, গাড়ীর সিট ভেঙ্গে লোকটা মাঝখানে কাথ হয়ে পড়ে গেল। এখন এলাহী কারবার যে যেভাবে পারছেন, ঠিক সে সেইভাবেই লোকটাকে লাথির পর লাথি মারতে দেখে আমি জোড়ে চিৎকার করলাম।

এবার সবাই থেমে গেলেন,
বুঝাতে চেষ্টা করলাম, আমরা কি এই পৃথিবীতে মারা-মারির জন্য এসেছি। এই লোকটি ময়লা কাপড় চোপড় নিয়ে আমর পার্শ্বেই দাড়িয়ে আছে এবং রাগে ফুলতেছে। কিন্তু কিছুই করার উপায় নাই। গাড়ীর সবাই এই লোকটার বিরুদ্ধাচন করিতেছেন, যে ছেলেটি তাকে মেরেছে সে সম্পূর্ন রুপে কায়দায় ফালাইয়া মাইরছে। এবার যত রাগ পড়লো গিয়া গাড়ীর ষ্টাপদের উপর, এটাই স্বাভাবিক কন্টাকটর কিছু উ্ত্তম-মাধ্যম খেল। ড্রাইভার গাড়ী থামাইয়া দিল।মুহুর্তের মধ্যে কোথায় হাওয়া হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। পাবলিক খেপেছে, কিছুই করার নাই, ড্রাইভার যে কোথায় ভাগলো বুঝতেই পারলাম না। আসলে এজন্য তারাই দায়ী। বেশী লাভের আশায় এই অপকর্মগুলো ড্রাইবার ও হেলপার মিলে করে থাকে। সবাই কন্টাকটরকে পেয়ে বসেছে, ভাড়া ফেরৎ দাও এর পালা, কে কত ফেরৎ নিবে এই মহড়া চলছে। আমি তাদের দলে যোগদান করলাম, উপায় নাই, মতিঝিল তো যেতে হবে। দিতে দিতে এক সময় দেখলাম ওর হাতে আর টাকা নাই, টাকা পরিশোধের কাতারে আমিই শেষ ব্যক্তি, এখনও ১০ জন বাকি আছে, টাকা ভাংতি নাই বলে কোথায় যেন হাওয়া। কি আর করা, বাধ্য হয়ে গাড়ী থেকে নেমে অন্য একটা লোকাল গাড়ীতে গেলাম। অনেক কষ্টে শিষ্টে যুদ্ধ যুদ্ধ করতে করতে মতিঝিলে পৌছলাম।

মাঝে মাঝে ভাবি এই দেশটা কখন সুন্দর ও সাবলিল হবে। আশা করি এই দিন মনে হয় বেশী দুরে নয়। মেট্রো-রেল চালু হলে হয়তো এই বিরম্ভনা দুর হতে পারে। বাসে গাড়ীতে আমরা যারা ভ্রমন করি, তারা এই রকমই কোন না কোন বিরম্ভনা শিক্ষার হই। আমার এই ঘটনাটা লিখে কাউকে ছোট বা লজ্জা দেওয়ার ইচ্ছা নাই ঘটনা সত্যি তাই ঠিক মন থেকে আপনাদেরকে একটু শেয়ার করলাম। এই আর কি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×