জানা আপাকে আন্তরিক ধন্যবাদ যে তিনি আমাদেরকে একটি ওপেন ডায়েরী দিয়েছেন যাতে আমরা আমাদের মনের কথাগুলো বলতে পারি, মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখতে পারি না বলা কথাগুলো। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে অনেকেই সামুতে লিখতে লিখতে ভাল মানের কবি / লেখক হয়ে উঠেছেন, অনেকেই মানুষের কল্যানে এগিয়ে আসছে-- এতো জানা আপুর আন্তরিক উদ্যোগের জন্যই সম্ভব হয়েছে।
সেই কবে সামু’র সাথে যোগ দিয়েছি আর এখন ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস। দিন যায়, মাস যায় সেইসাথে বছরও পার হয়ে যায়- ধীরে ধীরে বাড়ছে ব্লগারের সংখ্যা, কেউ খুব ভাল, কেউ ভাল, কেউ মোটামুটি আবার কেউবা সবেমাত্র শুরু করেছেন- সবচেয়ে বড় কথা হলো লিখছে। সবাই লিখতে লিখতে কখন যে সামুকে মনের অজান্তে ভালবেসে ফেলেছে তা কেউ বলতে পারে না। সেই ভালবাসার শেকড় অনেক গভীরে চলে গিয়েছে আর ভালবাসার ডালপালাগুলো এখন ছায়া দেয় । আর তাইতো এই সামু পরিবারের কারো কোন বিপদ হলে কেউ ঠিক থাকতে পারে না। মনের টানে ছুটে যায়। অন্যের বিপদেও পাশে দাঁড়ায়। সামু আমাদের নতুন প্রজন্মকে মাদককে না বলে পড়ার আসরে বসিয়েছে, লিখতে শিখিয়েছে মন খুলে- মনের চাওয়া সামু বেঁচে থাক প্রজন্ম হতে প্রজন্ম ---আমার দিক হতে সামু’র দীর্ঘজীবি হওয়ার জন্য কিছু কৌশল-
১. প্রথম পেজ ঃ প্রথম পেজের উপরে সাহিত্য বা গল্প/কবিতা/ছড়া, আন্তর্জাতিক, বিনোদন, মুক্তিযুদ্ধ, দেশীয় বিষয় এবং বিবিধ থাকতে পারে, বিবিধতে ক্লিক করলে খেলা, সংগীত, পরিবেশ, ছবিব্লগ, ভ্রমন,একান্ত অনুভূতি, ছবি বা বুক রিভিউ, নাকট ইত্যাদি বিষয়গুলো পাওয়া যাবে। যেখানে শুধুমাত্র একটা ক্লিক করলেই পাঠক/ব্লগারগণ নিজের পছন্দমত বিষয়গুলো বাছাই করে পাঠ করতে পারবে
২. ডিকশেনারীঃ সামু অনেক নতুন কিছু সংযোজন ঘটিয়েছে আর তার জন্য সাধুবাদ জানাই। প্রত্যাশা সামু একটা বাংলা হতে ইংরেজী, ইংরেজী হতে বাংলা, বাংলা হতে বাংলা (কবিতা, গল্প লেখার জন্য দরকার) সফ্ট কপি ডিকশেনারীর ব্যবস্থা করবে- এতে পাঠক এবং লেখকগণ উপকৃত হবে। এটা প্রথম পেজের কোন একটা কোনে থাকতে পারে--
৩. নিরপেক্ষ ও কৌশলী হওয়া ঃ আমরা সবাই কোন না কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক। কিন্তু প্রকাশ্যে কোন দলের সমর্থক হওয়া থেকে বিরত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। সরকার আসবে-সরকার যাবে কিন্তু সামু মাথা উঁচু করে আত্মসম্মান নিয়ে সব সময় কাজ করে যাবে। তাই কারো অনুভূতিতে আঘাত না করাটাই উত্তম- এর বিপত্তি হলে সামু বন্ধ হওয়ার হুমকিতে পরতে পারে- তাই কৌশল অবলম্বন করাই ভাল
৪. ব্লগারদের সহনশীল হওয়া ঃ ব্লগারদের আরো সহনশীল হওয়া উচিত। এখানে আমরা লিখছি- অন্যের লেখায় আমাদের মতামতগুলো দিচ্ছি। কিন্তু যদি ক্রমাগত আক্রমণাত্মক মতামত দেওয়া হয় তবে ব্লগের পরিবেশ নষ্ট হযে যাবে-ব্লগের গৌরব ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে
৫. রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন না করা ঃ কেউ তার রাজনৈতিক মতাদর্শন হতে কোন লেখা দিতেই পারে কিন্তু উচিত হবে অন্য দলকে হেয় প্রতিপন্ন করে আক্রমন না করা । আবার যারা আমরা মন্তব্য দিব তাদেরও উচিত হবে বাজেভাবে উল্টাপাল্টা মন্তব্য দেয়া হতে বিরত থাকা
৬. আস্তিক নাস্তিক ঃ এটা যার যার মতাদর্শিক ব্যাপার। যার যার বিশ্বাসের স্থান হতে তিনি তা চর্চা করতে পারেন। কিন্তু তাইবলে ধর্মীয়ভাবে কোন ধর্মের প্রতি আঘাত করা ঠিক হবে না। কারন সে উক্ত বিশ্বাসটি পারিবারিক, সামাজিকভাবে পালন করে আসছে। তাই কেউ কারো প্রতি কাদাছুড়াছুড়ি না করে ইতিবাচকভাবে মন্তব্য করলে অন্যান্যরা ব্লগে লিখতে আরো উৎসাহিত হবে
৭. নির্বাচিত পোস্টঃ নিবাচিত পোস্টগুলোর ব্যাপারে আরো যত্নশীল হওয়া উচিত। অনেক সময় দেখা যায় কোন ব্লগার খুব ভাল লিখেছেন কিন্তু তার পোস্টটি নির্বাচিত পাতায় আসে নাই কিন্তু অন্য ব্লগার তেমন একটা ভাল লেখেন নাই অথচ তার লেখাটা চলে নির্বাচিত পাতায় এসেছে- এতে যে ভাল লিখলো তার লেখার আগ্রহ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা তিনি বিকল্প কিছু খোঁজ করতে পারে -। আমরা চাই না কোন ব্লগার সামু হতে চলে যাক- আমরা চাই সকলেই সুখে দুখে একই পারিবারিক বন্ধনে মিলেমিশে থাকবো
৮. নতুনদের পোস্টঃ নতুনরা যাই লিখুক না কেন কিছু মন্তব্য করা উচিত। আর তা না হলে তারা আর লিখবেই না। মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের কালো থাবা আনাচে কোনাচে বিস্তার ঘটিয়েছে। তারা যেন কোন কিছুতেই হতাশাগ্রস্থ হয়ে অন্য কোন অন্ধকার জগতে প্রবেশ না করে। লিখলে মনের কষ্ট অনেক দূর হয়। মন্তব্য পেলে মনটা আরো খুশি লাগে। তাই প্লিজ মন্তব্য করুন ছোট্ট হলেও
৯. ছাগু আর ভাদা ঃ কথায় কথায় ছাগু আর ভাদা (ভারতীয় দালাল) কিংবা আমেরিকার দালাল এই সব বলা বন্ধ করা উচিত। আমরাতো ইতিবাচকভাবেও যুক্তি দিয়ে কিংবা প্রমাণসহ কৌসুলী মন্তব্য করতে পারি । আমাদের কথার যাদুতেই অনেকের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হয়ে যেতে পারে।
১০. দিনে একজনের একাধিক পোস্টঃ দিনে একজনের একটার বেশি পোস্ট না দেয়াটাই ভাল
১১. জেন্ডার বিষয়ঃ ব্লগে নারী পুরুষ সকলেই লিখছে। নারীরা যাতে ভাল একটি পরিবেশ পায় সেদিকে খেয়াল করা। তাদেরকে কোন অবস্থাতেই বাজে মন্তব্য যাবে না, এতে তারা বিব্রত হয়ে ব্লগ ছেড়ে চলে যেতে পারে
১২. অবজ্ঞা না করা ঃ কোন লেখাকেই অবজ্ঞা না করা। অনেকেই মন্তব্যের ঘরে লিখে দেন-- লেখাটা ভাল লাগে নাই । এই লেখাটাকে একটু ঘুরিয়েও লেখা যায়, যেমন- ভালো হয়েছে তবে আরো লিখুন । প্রথমে ইতিবাচকভাবে বলে নিন তারপর নেতিবাচকটিও ইতিবাচকভাবে বলার চেষ্টা করুন
১৩. সম্মান ঃ প্রত্যেক ব্লগারেরই সম্মান আছে- হয়তো কেউ আগে এসেছেন বা একটু পরে এসেছেন। তাই মন্তব্য করার সময় তার উপর সম্মান রেখেই মন্তব্য করা উচিত
১৪. মন্তব্যঃ এমন অনেকে আছেন যে খুবই ভাল লিখেছেন কিন্তু তার লেখায় মন্তব্য তেমন একটা নেই বা অনেকক্ষেত্রে শুন্যও দেখেছি। আবার কেউ তেমন একটা লিখে নাই কিন্তু তার লেখায় অনেক মন্তব্য দেখা যায়। এটা অবশ্য যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু যে ভাল লিখলো তার মনটা খারাপ হয়ে যেতে পারে এবং ব্লগ বিমুখ হয়ে যেতে পারে - তাই একটু আন্তরিকতার ছোঁয়া নিয়েই লেখাটা পড়ে মন্তব্য করা উচিত
১৫. ছবিঃ গল্প বা কবিতায় এমন কোন ছবি সংযোজন করা উচিত নয় যা অন্যদেরকে বিব্রত করে। অনেকেই নগ্ন বা অর্ধনগ্ন ছবি দিয়ে বলেন যে এটা শৈল্পিক- কিন্তু মনে রাখতে হবে যে এই সামুতে শুধুমাত্র আপনি ভ্রমন বা লিখছেন না- এখানে শিশুরাও ভ্রমণ করছে, তারা পড়ছে – শিশুরা অতি উৎসাহী- তাই ভেবেচিন্তে বিষয়টার সাথে মিলে যায় এমন ধরণের যৌক্তিক ছবি সংযোজন করা উচিত
১৬. মন্তব্যে এডিট সুবিধা ঃ আমরা যারা পাঠক তারা যে কোন বিষয় পড়ে মন্তব্য করি। অনেক সময় মনে হয় যে মন্তব্যটা তেমন ভাল হয়নি। তাই একটু এডিট করা দরকার। এডিট সুবিধাটার কথা কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় আনতে পারেন
ইদানিং ফেসবুকে সামান্য দু’লাইন লিখে শত শত লাইক এবং কমেন্ট পাচ্ছে, অনেকে এখন রীতিমত ফেবুতে লিখছে। সামুর পাশাপাশি ফেবুতে লিখুক কিন্তু সামু বিমুখ হয়ে নয় ---তাই আর দেরি নয়- আসুন আমরা সকলে মিলে ব্লগের পরিবেশ ভাল করি
আরো কোন পরামর্শ থাকলে প্লিজ আপনারা দিন --- সামুর পাশে আছি এবং থাকতে চাই । সামু বাঁচুক আর আমাদের শৈল্পিক মনও বাঁচুক ---