somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)ও তাঁর দুই সাথির কবর যিয়ারতের আদব

২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




1. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর পবিত্র কবরের সামনে এলে আদবের সাথে দাঁড়ান। দাঁড়ানোর সুযোগ না পেলে চলমান অবস্থাতেই রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর প্রতি সালাম পেশ করুন, বলুন—‘السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيَّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ—আপনার ওপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকতসমূহ বর্ষিত হোক হে আল্লাহর নবী’, রাসূলুল্লাহর গুণাবলির সাথে সংগতিপূর্ণ আরো কিছু শব্দ বাড়িয়ে দেয়া যাবে। বলা যাবে—
السَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا خَلِيْلَ اللهِ ، وَأَمِيْنَـــهُ عَلَى وَحْيِهِ ، وَخَيْرَتَه مِنْ خَلْقِه ، أَشْهَدُ أَنَّكَ قَدْ بَلَّغْتَ الرِّسَالَةَ ، وَأَدَّيْتَ الأَمَانَـــــــةَ ، وَنَصَحْتَ الأُمَّـــــــــــــــةَ ، وَجَاهَدْتَ فِيْ اللهِ حَقَّ جِهَادِه .
-আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক হে আল্লাহর বন্ধু! তাঁর ওহির বিশ্বস্ত পাত্র, ও তাঁর সৃষ্টির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। আমি সাক্ষী দিচ্ছি, আপনি নিশ্চয়ই রেসালত পোঁছিয়ে দিয়েছেন। আমানত আদায় করেছেন। উম্মতকে নসিহত করেছেন। ও জিহাদ করেছেন আল্লাহর বিষয়ে সত্যিকারের জিহাদ)।
1. এরপর সামনের দিকে এক গজ পরিমাণ এগিয়ে যান। এখানে আবুবকর সিদ্দীক (রাঃ) এর প্রতি সালাম পেশ করুন। বলুন—
السَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا أَبَا بَكْرٍ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا خَلِيْفَةَ رَسُوْلِ اللهِ فِيْ أُمَّتِه ، رَضِيَ اللهُ عَنْكَ وَجَزَاكَ عَنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ خَيْرًا.
-আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক হে আবু বকর, আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক হে রাসূলুল্লাহর খলিফা তাঁর উম্মতের ভেতর। আল্লাহ আপনার ওপর রাজি হোন। উম্মতে মুহাম্মদির পক্ষ থেকে আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন।
1. এরপর আরেক গজ সামনে আগান। এখানে ওমর (রাঃ) এর প্রতি সালাম পেশ করুন। বলুন—
ا لسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا عُمَرُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا أَمِيْرَ المُؤْمِنِيْنَ، رَضِيَ اللهُ عَنْكَ وَ جَزَاكَ عَنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ خَيْرًا .
-আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক হে ওমর, আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক হে আমিরুল মুমিনিন। আল্লাহ আপনার ওপর রাজি হোন। উম্মতে মুহাম্মদির পক্ষ থেকে আপনাকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন।
এরপর বাইরে চলে আসুন। কেবলামুখী হয়ে বা কবরের দিকে মুখ করে দোয়া করবেন না। ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, ‘কবরের কাছে দোয়া করতে দাঁড়ানো আমি শুদ্ধ মনে করি না। তবে সালাম দেবে, ও চলে যাবে যেমনটি করতেন ইবনে ওমর (রাঃ)। ইমাম ইবনুল জাওযি বলেন, ‘দোয়া করতে কবরে যাওয়া মাকরুহ। ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ একই মন্তব্য ব্যক্ত করে বলেন, ‘দোয়ার উদ্দেশ্যে কবরে যাওয়া মাকরুহ। দোয়ার জন্য কবরের কাছে দাঁড়ানোও মাকরুহ।[1] তাই রাসূলুল্লাহ (সাঃ)ও তাঁর সাথীদ্বয়ের (রাঃ) কবরের কাছে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানো ও নিজের জন্য দোয়া করা উচিৎ নয়। সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে কেউই কবরের কাছে দাঁড়িয়ে নিজের জন্য দোয়া করতেন বলে ইতিহাসে নেই। সাহাবাগণ, বরং, মসজিদে নববির যে কোনো জায়গায় দোয়া করতেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর হুজরা মুবারকের কাছে এসেও তাঁরা দোয়া করতেন না।
ইমাম মালেক (রহ.) মদিনাবাসীদের জন্য, যতবার মসজিদে প্রবেশ করবে ততবার, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর কবরে আসা ভালো মনে করতেন না। কেননা সালাফে-সালেহীনদের কেউই এরূপ করতেন না। তাঁরা বরং মসজিদে নববিতে আসতেন। আবুবকর, ওমর, উসমান ও আলী (রাদি আল্লাহু আনহুম) এর পেছনে সালাত আদায় করতেন। সালাতের মধ্যেই রাসূলুল্লাহর প্রতি সালাম পেশ করতেন। বলতেন, السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيَّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ সালাত শেষে হয়তো বসতেন অথবা বের হয়ে চলে যেতেন। সালাম পেশ করার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর কবরে আসতেন না। কেননা তাঁরা জানতেন যে সালাতের মধ্যে যে দরুদ ও সালাম পেশ করা হল তা অধিক উত্তম ও পূর্ণাঙ্গ। [2]
সাহাবাগণ যখন নিজের অভাব অনটনের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে চাইতেন, কেবলামুখী হয়ে মসজিদের ভেতর দোয়া করতেন। যেমনটি করতেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর জীবিত থাকা কালে। দোয়া করার জন্য হুজরা মুবারকের কাছে যেতেন না, কবরেও প্রবেশ করতেন না। সাহাবাগণ দূরদূরান্ত থেকে খুলাফায়ে রাশেদিনদের সাথে দেখা করতে এলে মসজিদে নববিতে সালাত আদায় করতেন। সালাতের ভেতর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করতেন। মসজিদে প্রবেশ ও মসজিদ বের হওয়ার সময়ও সালাত ও সালাম পেশ করতেন, বলতেন,
بِسْمِ اللِه، والصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ .
কবরের কাছে এসে সাধারণত সালাম পেশ করতেন না। কেননা এরূপ করতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)নির্দেশ করেননি। হাঁ, ইবনে উমর (রাঃ) সফর থেকে ফিরে এলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)ও তাঁর সাথি-দ্বয়ের কবরে এসে সালাম পেশ করতেন। তবে অন্যান্য সাহাবা এরূপ করতেন না।


সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১:০৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×