somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিশুক ভাই বাড়ী নেই, মিশুক ভাই আর বাড়ী ফিরবে না কোন দিন

১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাতা ঝরা চারপাশ, হিম বৃষ্টির ছাঁটে প্রকৃতি যেনো জন্ডিস আক্রান্ত মৃত্যু পথ যাত্রী। বছরের এই সময়টা বড়ো ভয়ানক! ফোনটা হাতড়ে হাতড়ে নাম্বারটা ডায়াল করলাম, মঞ্জুলীদি দি আমি হেলাল।
ও হেলাল, কেমন আছিস ভাই?
আমি আছি মঞ্জুলীদি, আপনার বিল্ডিং এর নিচে দাড়িয়ে আছি।
বাজার নাম্বারটা যেনো কত...

এগারো তলায় উঠে দরোজায় টোকা দেবার সময় ১৩ নম্বরটায় চোখের পাতাটা স্থির হলো। দরোজাটা খুলে সুহৃদ দাড়িয়ে আছে,
কেমন আছো সুহৃদ?
কথাটা বলে নিজেই অপ্রস্তুত হয়ে রইলাম। মঞ্জুলীদি হেটে এসে বললেন, আয় ভেতরে আয়।
ঘরের ভেতর আলোটা ও কেমন...
এ বাড়ীতে কখনো এমন করে আসিনি! টরন্টো গেলেই কেমন করে যেনো মিশুক ভাই ও শহরে থাকতেন। হৈ চৈ আনন্দ ছাড়া কখনো ওই বাড়ীর কোন স্মৃতি আমার জানা নেই। লিভিং রুমে মঞ্জুলীদি'র জমানো আড্ডা। রান্নার চামচ হাতে কিচেনটা মিশুক ভাইএর দখলে। ডাইনিং স্পেসে চলত তুমুল তরল আড্ডাবাজি। আর বেলকনিটা খোলা নারী পুরুষ নির্বিশেষে সিগারেটবাজী।

জানিস হেলাল, ও আমাকে বলেও যায়নি। সুহৃদ হসপিটালে ছিল। রাতে মিশুক থাকত দিনে আমি। রাতে বাসা থেকে বের হবার সময় পিঠে হাত রেখে বলল, ভালোবাসি। চলে গেল, আর দেখা হয়নি। সকালে বেরিয়ে যায় আমাকে বলেও যায়নি... জলি বলছিল, এক সেকেন্ডের দশ ভাগের এক ভাগে ঘটে গেছে সব...

আমি এখনো ওর নাম্বারে ফোন করে শুনি, এই মুহুর্তে টেলিফোনটা বন্ধ আছে... অপেক্ষা করি প্রতি রাত দুটায় হয়তো একটা ফোন আসবে! হেলাল, আমাকে ও'র মুখটা দেখতে দেয়নি কেউ সুহৃদকে ও না...

আমি আর তাকাতে পারি না। আমি আর কিছুই বলতে পারি না। আমি সুযোগ খুজি কেমন করে বেরিয়ে আসবো! আমি পলাতক মানুষ। আমি এমন কষ্টের মুখোমুখি হতে পারি না।

নিচে নেমে নয়নকে বলি, একটা সিগারেট দে। পকেট হাতরে সাদা লাইটারটা বের করি। বাইরে হিম শীতল বৃষ্টি'র ফোঁটা।
তেরো তারিখ তেরোটার সময় বৃষ্টি ছিল সেদিন। মহাসড়কের পাশে কাঁদা জল মাটিতে উপুড় করে শোয়ানো সে ছবি আমি মন থেকে মুছে ফেলতে পারি না কেন!

মিশুক ভাই বাড়ী নেই, মিশুক ভাই আর বাড়ী ফিরবে না কোন দিন।

(October 6, 2011 at 7:25am)

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৫০
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×