somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রদ্ধা

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৩:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বয়সটা হয়তো ক্লাস সিক্স কি সেভেন। সেবা প্রকাশনীর বেশ ভক্ত তখন। তিন গোয়েন্দার সময়কাল। বাসায় ভাইয়া মাঝে মাঝে বাবার চোখ ফাঁকি দিয়ে রহস্য পত্রিকা আনতো সে সময়। একবার এক সংখ্যায় এক লেখকের লেখায় হঠাৎ ভিনদেশী এক মানুষের খোঁজ পেলাম। লেখাটা পড়ে এতটাই অবাক হয়েছিলাম, যে নিজেকে আর বোঝাতে পারিনি। কলম তুলে নিয়েছিলাম। মনের ভেতর জমে থাকা অনেক অনেক অজানা ভালবাসা উজাড় করে দিয়েছিলাম এক লেখায়। কিন্তু আমি তো লিখেছি বাংলায়। যেহেতু সে বিদেশী অবশ্যই আমাকে ইংরেজীতে অনুবাদ করতে হবে। এতো কঠিন ইংরেজীতো পারিনা তখনও। কতটুকুইবা বয়স তখন? দিলাম আমার আপুকে অনুবাদ করার জন্য। পেলাম ইংরেজী অনুবাদ। কিন্তু ভাবলাম হাতে লিখে দিবো? হাতের লেখার মূল্য তখনও ঠিক বুঝে উঠিনি। তাই গেলাম টাইপ রাইটার এর খোঁজ-এ।

ভাঙ্গা ভাঙ্গা ম্যানুয়্যাল টাইপ রাইটার না। আমার অনেক মূল্যবান লেখা। তখনও কম্পিউটার সহজলভ্য ছিলোনা। তাই শেষ পছন্দ ইলেক্ট্রিক টাইপ রাইটার। ঝকঝকে হরফে লেখা হলো সেই লেখা। কত যে মিনতি টাইপিস্টকে। “ভাই, এটা কেমন যেন লাগছে। একটু মুছে আবার লিখবেন?” অথবা, “ডাবল এস্ নাতো!!!” “একটা এস্ হবে শুধু”, আর সে কি বকা! আসলে লেখাটা একটা চিঠি। তাই শেষতক সাদা একটা খামে ভরে দিলাম পোস্ট করে। তখন সরকারী পোস্ট অফিসই ভরসা।

শুরু হলো আমার অপেক্ষার পালা। দিন যায়, সপ্তাহ যায়। মাস যায়। আমার চিঠির কোনো উত্তর আসে না। একদিন স্কুল থেকে ফিরে ব্যাগ রাখতে না রাখতেই আপু আসলো সামনে। হাতে একটা সাদা খাম। বলে কিনা আমার নামে চিঠি! দেখলাম, সেই মানুষটির নাম। যাকে আমি চিঠি লিখেছিলাম! একটা সাদা কাগজে প্রিন্ট করা অনেক আবেগ মেশানো লেখা চিঠি। সাথে একটা রঙ্গীন ছবি। অনেক বয়স তখন ওনার। গলায় ঝোলানো বীর প্রতীক পদক। বাংলায় লেখা পদকটিতে ‘বাংলাদেশ’।

সেই ব্যাক্তিটি হলেন, ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র বিদেশী খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। উইলহেলমাস এ এস্ ওডারল্যান্ড, বীর প্রতীক। এখন চিন্তাভাবনায় অনেক পরিনত হয়েছি ওই বয়সের তুলনায়। অনেক কিছু বুঝি। শুধু কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাইনা। একজন মানুষ কিসের তাড়নায় সম্পূর্ন ভিন্ন একটি দেশের মুক্তির জন্য লড়তে পারে? আর আমি এই দেশে জন্মে কতটা কি করতে পারছি বা করতে চাচ্ছি বা করছি?





* সেই সময়ও যে লেখালেখি করতাম, মনেও ছিলনা। ১৯৯৭-তে ইত্তেফাক-এ কঁচিকাঁচার আসরে প্রকাশিত হয়েছিল আমার একটা লেখা। ওনাকে নিয়েই। সেটাও দিলাম ছবি তুলে।


সেই চিঠি


এই ছবিটা কয়জনের কাছে আছে, জানিনা। ওয়েবে কোথাও দেখিনি এখনও।


আমার ঠিকানাটা আমার এনভেলপ থেকেই কেটে নি্যেছিলেন। আবার নিজের হাতে লিখেছেন, বাংলাদেশ।


কঁচিকাঁচার আসরের সেই লেখা।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:২৬
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×