somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিগ ব্যাং, বিগ ক্রাঞ্চ এবং আল-কোরআন

১৪ ই জুন, ২০১১ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত মহাবিশ্ব সম্পর্কে সারা পৃথিবীতে এ ধারনা প্রচলিত ছিল যে, এই মহাবিশ্ব অসীম এবং চিরস্থায়ী এবং সবসময়ই তা এমন থাকবে। এই মতবাদটি ‘ Static Universe Model’ নামে পরিচিত যাতে বলা হয়েছিল এই মহাবিশ্বের কোন শুরু বা শেষ নেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে এই মডেল ভুল প্রমাণিত হয়। বর্তমান ২১ শতকে পৃথিবীর প্রখ্যাত কিছু বিজ্ঞানী এবং গবেষকের অক্লান্ত পরিশ্রম, পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং গানিতিক গণনার ফলশ্রুতিতে আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি এই মহাবিশ্বের একটি শুরু আছে। এটি শূন্য থেকে তাৎক্ষণিক এক মহাবিস্ফোরণের ( Big Bang) মাধ্যমে সৃষ্টি। আমারা আরও জানতে পারি যে এই মহাবিশ্বের একটি শুরু যেমন আছে তেমনি এর শেষও আছে। এটি স্থায়ী স্থির নয়। এটি ক্রমাগত সম্প্রসারণশীল, পরিবর্তনশীল এবং একটি নির্দিষ্ট গতিতে গতিশীল।


Fig: বিগ ব্যাং

মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে কোরআনে বলা আছে “যারা (নবীর কথা মেনে নিতে) অস্বীকার করেছে তারা কি চিন্তা করে না যে, এসব আকাশ ও পৃথিবী এক সাথে মিশে ছিল, তারপর আমি তাদেরকে আলাদা করলাম এবং পানি থেকে সৃষ্টি করলাম প্রত্যেকটি প্রাণীকে। তারা কি (আমার এ সৃষ্টি ক্ষমতাকে) মানে না? আল-কোরআন ( ২১:৩০) “ কোরআনের এই কথাটি বৈজ্ঞানিকদের প্রাপ্ত তথ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর থেকে ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করেছেন যে যখন মহাবিশ্বের সর্বমোট ভর একটি নির্দিষ্ট সীমাতে পৌঁছাবে তখন মহাকর্ষীয় আকর্ষণের কারনে এই সপ্রসারনের সমাপ্তি ঘটবে এবং এটি নিজের ভেতর সঙ্কুচিত হতে থাকবে। তারা ধরনা করছেন এই সংকোচনশীল মহাবিশ্ব পরিশেষে প্রচণ্ড তাপে পরিণত হবে। অর্থাৎ ভর পরিবর্তিত হয়ে তাপে বা শক্তিতে পরিণত হবে। এই থিউরি কে বলা “ Big Crunch”.


Fig: বিগ ক্রাঞ্চ

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর Renata Kallosh এবং Andrei Linde বিষয়টিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেন “ এই মহাবিশ্ব ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে একসময় শূন্যে মিলিয়ে যাবে। আমাদের মহাবিশ্বের সবকিছু সংকুচিত হয়ে একটি প্রোটনের চেয়ে ক্ষুদ্র বিন্দুতে পরিণত হবে। তখন কিছু ডার্ক এনার্জির সৃষ্টি হতে পারে যা ক্রমান্বয়ে ঋণাত্মক হতে থাকবে এবং মহাবিশ্বকে অস্থিতিশীল করবে এবং একসময় সংকুচিত করবে। আমরা এখন মহাবিশ্বকে যেমনটা দেখছি তাতে ধারণা করা যায় আমরা মহাবিশ্ব সৃষ্টি এবং ধবংস চক্রের মাঝামাঝিতে আছি। “
বিজ্ঞানীদের এই অনুমিত Big Crunch থিউরি সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে
সেদিন, যখন আকাশকে আমি এমনভাবে গুটিয়ে ফেলবো যেমন বাণ্ডিলের মধ্যে গুটিয়ে রাখা হয় লিখিত কাগজ, যেভাবে আমি প্রথমে সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম ঠিক তেমনিভাবে আবার তার পুনরাবৃত্তি করবো, এ একটি প্রতিশ্রুতি, যা আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত এবং এ কাজ আমাকে অবশ্যই করতে হবে।আল-কোরআন ( ২১:১০৪)

Big Crunch অনুযায়ী এই মহাবিশ্ব প্রথমে ধীর গতিতে সংকুচিত হতে থাকবে। ডার্ক এনার্জি যত বাড়তে থাকবে তত এই সংকোচন গতিও বাড়তে থাকবে। এই প্রক্রিয়ার শেষে এই মহাবিশ্ব প্রচণ্ড শক্তিতে পরিণত হবে। এই বিগ ব্যাং এবং বিগ ক্রাঞ্চ থিউরি যা কিছু দিন আগে আবিষ্কৃত হলো কোরআন এ সম্পর্কে বলেছে ১৪০০ বছর আগে। কারন কোরআন হচ্ছে মহান আল্লাহতায়ালার বাণী।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১১ রাত ১১:১৭
১০টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×