ঘটনা_১ : ২০০৫ সালের আগষ্ট মাসে বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় বোমা হামলা চালায় জেএমবি । তার ৮ মাস পরেই অজি রা বাংলাদেশ সফরে এসে নিরাপদে টেষ্ট,ওয়ানডে খেলে গেছে ।
ঘটনা_২ : ২০১৪ সালে পেট্রোল বোমার আঘাতে কয়েকশত মানুষ দগ্ধ হয়ছে । সেই সময় বাংলাদেশে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে প্রায় সব গুলো দেশ উপস্থিত ছিল । কোন সমস্যা হয় নাই।
দেশে দুই নেত্রী নাই, হরতাল নাই, অবরোধ নাই, ঈদ গেলো আন্দোলন নাই, গরুর হাট নাই, মালিবাগের জ্যাম নাই, শাহাবাগের মঞ্চ নাই, হেফাজতের মিছিল নাই,
তবুও, অষ্ট্রেলিয়া নিরাপত্তার অজুহাত দেখায় আসবে না এইডাই মাথায় ঢুকে না!
এর প্রধান কারন হলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং তার সরকারের কিছু মন্ত্রীর বেফাঁস বক্তব্য। মূল কারন বলার আগে একটা গল্পশুনুন।
এক লোকের বিয়ের কয়েক মাস পর হইছে যক্ষা। কিন্তু সে গ্রামের সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে তার এইডস হইছে। তার বউ তাকে বলল কি ব্যাপার তোমার হইছে যক্ষা তুমি সবার কাছে এইডস হইছে বলো কেনো?
তখন সে বলল আমি ত মরেই যাবো কিন্তু মরার পর যেন তুমি বিয়া করতে না পারো সে ব্যাবস্থা করে যাচ্ছি।
কিছু দিন পর লোকটা চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হলো কিন্তু তার কিছুদিন পর তার বউ মারাগেল। এখন লোকটা নতুন বিয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করল কিন্তু কেউই তার কাছে মেয়ে দিতে রাজি হচ্ছে না। কারন আগেই সে বলেছে তার এইডস হইছিলো। তাই ভয়ে কোন মেয়ে তাকে বিয়ে করছে না যদি তাদেরও এইডস হয়। বেচারা বউর জন্য খোড়া গর্তে নিজে পরছে।
গত কিছুদিন আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রী গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন ইংল্যান্ডের নাগরিকরা বা ইংল্যান্ড থেকে নাকি বাংলাদেশের জঙ্গিদের সহায়াতা করছে। মানে হলো বাংলাদেশে জঙ্গি আছে! যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত স্বীকার করলেন তাও আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী একটি গণমাধ্যমে!! যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে শ্বীকার করেন তার দেশে জঙ্গি আছে সেখানে অস্ট্রেলিয়ানদের বলার কি আছে? আর সাথে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা তার প্রমান হিসাবে কাজে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী জামায়াত ইসলামিকে চাপে রাখার জন্য এই বক্তব্য দিয়েছিলেন,কিন্তু এখন উল্ট সেই চাপ তার এবং তার সরকারের উপরেই আসছে। গুলশানে ইতালীয় নাগরিককে গুলি করে হত্যা এবং ব্রিটিশ হাইকমিশন কতৃক তাদের নাগরিকদের চলাচলে সতর্কতা জারি করা সেই চাপে নতুন মাত্র যোগ করল।
সরকারের দুজন মন্ত্রী। হাসানুল হক ইনু এবং হাসান মাহমুদ। ইনারা মাইক পালেই জঙ্গি আর পেট্রোল বোমা ছাড়া কিছুই বুঝেন না। তাদের দুজনকে যদি কুরবানীর গরু নিয়া কিছু বলতে দেন সেখানেও তারা জঙ্গি আর পেট্রোল বোমা খুঁজে বের করবেন।
আমাদের দেশটা কিন্তু এখন আর বিচ্ছিন্ন কোন দ্বীপ না। সমগ্র বিশ্বকে ধরা হয় গ্লোবাল ভিলেজ হিসাবে। সেই ভিলেজের একটা অংশ আমাদের দেশ। আজ এখানে যা হচ্ছে মহুর্তের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পরছে সারা দেশে। এখন আমাদের নীতিনির্ধারকরা যদি অন্যকে বিপদে ফেলার জন্য মিডিয়ার সামনে এভাবে কথা বলেন তবে এর থেকে বড় কোন ঘটনা ঘটলেও অবাক হবার মত কিছু হবে না।
উপরের দুটি ঘটনার পরেও কিন্তু অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে এসেছিল। কারন তখন কেউই স্বীকার করে নাই বাংলাদেশে জঙ্গি আছে। কিন্তু এবার তেমন কিছুই হলো না কিন্তু আমাদের সরকার থেকে স্বীকার করা হচ্ছে দেশে জঙ্গি আছে তাও খোদ প্রধানমন্ত্রীর মুখে। আর প্রমান হিসাবে বিভিন্ন ঘটনা ত আছেই।
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটদল এবার কিছুটা জামেলা করছে । ঠিক একই জামেলায় যদি বিদেশী বিনিয়োগ কারিরা না আসে?? আর বিদেশী বিনিয়োগ ব্যাতিত ডিজিটাল বাংলাদেশ আকাশ কুশুম কল্পনা মাত্র। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নয়,দেশের সম্মান,দেশের উন্নয়নের জন্য হলেও আমার দেশের রাজনৈতিক নেতাদের আরও বেশি ডিপ্লোম্যাটিক হওয়া দরকার। মিডিয়ার সামনে বেফাস মন্তব্য করা থেকেও বিরত থাকা দরকার।