'আমি কোমর বন্ধনী দিয়ে প্যান্টের ভেতর শার্ট গুজে ফিটফাট বাবু সেজে 'বসুন্ধারা সিটি'র এয়ার কন্ডিশন শোরুমে বসি। স্যরি বসার কথাটা মিথ্যা। একটানা ১১ ঘন্টায় দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করি। আর দিন শেষে বেতন পাই দৈনিক ২০০ টাকা। এ জন্য আমাকে টানা ৩০ মিনিটও বসতেও দেয়া হয় না। আমি অনার্স পাশ করে ঢাকা শহরে একটা চাকুরির সন্ধানে যখন ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম ঠিক তখুনি এই চাকুরিটা পাই।'
কথাগুলো একজনের মুখ দিয়ে বের হলেও এই কথাগুলোই হাজার তরুণের/তরুণীর বুকের ভেতরে্র আর্তনাদ এর শব্দ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে বসুন্ধরা সিটি সহ অসংখ্য ছোট ছোট শপিংমল গুলোর সেলসম্যানদের বেতন কাঠামো খুবই নিম্ন মানের। এইসব শপিং মলের শোরুম প্রতিদিন ২০০টাকা ভিত্তিক অথবা মাস শেষে ৫ হাজার কিংবা বায়ান্ন'শ টাকা বেতন দেয়া হয়। যে যোগ্যতা চাওয়া হয় তাতেই এই বেতনের অর্ধেক টাকা চলে যায়। মলগুলোতে চাকরী যারা করে তাদের স্মার্ট হতে হয়, শার্ট কুচকানো থাকলে সমস্যা, শরীরে ফ্র্যাগ্রান্ট থাকা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আবশ্যিক।
এবার আসি কাজের সময়ের কথায়, রাজধানীর শপিং মলগুলোর মোবাইল এক্সেসরিস, প্রসাধন সামগ্রী, কাপড়, লেদার এক্সেসরিস, প্যান্ট শার্টের শোরুম এ যারা কাজ করে তাদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শো রুমে দাড়িয়েই কাজ করতে হয়। এই ব্যাপারটা বেশি লক্ষ্য করা যায় ফ্যাশন ডিজাইনের শোরুম গুলোতে। ঢাকা্র অনেক নামীদামী ফ্যাশন ডিজা্নের প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের আলোঝলমলে শোরুম গুলো্তে নিয়োগ দেয় অসংখ্য স্মার্ট ছেলেমেয়েদের। আর এদের বেতন সেই নামের বেতন। অথচ এইসব ছেলেমেয়েদের খাটিয়ে নেয়া হয় ১১ ঘণ্টার উপরে। যে ছেলেমেয়েরা মে দিবসের মহান শিক্ষা নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে আসছে কিংবা উচ্চতর পড়াশোনা চালাচ্ছে তারা বাধ্য হয়েই সেই শিক্ষা বিসর্জন দেয়। যেখানে প্রয়োজন কজের-সেখানে একটা কাজ পেলেই যথেষ্ঠ ভেবে নিরবে কাজ করে যায় এই সকল ছেলেমেয়েরা। আর সেই সরল সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে কোটিপতি হয় প্রতিষ্ঠান গুলো। কখনো কোন গণমাধ্যমের চোখে পড়ে না এই ভদ্রোচিত নির্যাতনের ছবি।
আমাদের সমাজের উচ্চঘরের মানুষদের শপিংয়ের ব্যাগের ভেতর চলে যায় তথাকথিত চাকুরের আর্তনাদ। চোখে পড়ে না না পড়ারই কথা। সামনে আসছে মে দিবস। মে দিবস কে নিয়ে সোচ্চার হবে সংগঠন গুলো। তাদেরও চোখ এড়িয়ে চলে যাবে ঢাকার বিপনীবিতান গুলোর এইসব হাজার হাজার চাকুরেদের।
পুরো ১১ঘন্টা দাঁড়িয়ে কাজ করি, বেতন দৈনিক দুই'শ টাকা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩১টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।
কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।