somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার ব্লগ যে কারণে দাঁড়াবে এবং তারপরও আমি যে কারণে সেইখানে লিখবো না

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লোকালটক আমার ব্লগে একটা পোস্ট দিছিলেন 'যে কারণে আমার ব্লগ দাঁড়াবে না' শিরোনামে। পোস্টটা উনি সামহয়ারইনেও দিছিলেন।(Click This Link)। পোস্টটা আমি আমার ব্লগে দেখার পর সঙ্গত কারণে সেইখানে একটা প্রতিক্রিয়া লেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। সঙ্গত কারণটা হইলো, নির্মিয়মাণ প্রথম আলো ব্লগ প্রসঙ্গ। যাই হউক, সেইখানে (http://amarblog.com/mahbubmorshed/9300) আমি বিষয়টা পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে গতকালের পোস্টের পর অনুভব করছি আমার ব্লগে আমি কেন লিখতে পারবো না। সেই কারণটা আমার ব্লগে করা পোস্টের বিবরণের নিচে দিলাম।
.......................................................................................
লোকালটকের লেখা পইড়া টাসকি খায়া গেলাম। সেরের ওপর সোয়াসের যোগ করছেন আমার ব্লগের অ্যাডমিন। উনি ফিচারড আইটেম হিসাবে লোকালের পোস্ট ঝুলাইছেন ওপরে। প্রথম যুক্তি হইলো, এইরকম উদারতার কারণেই আমার ব্লগ দাঁড়াইবে। স্যরি আমার ব্লগ যে জায়গায় আসছে তাতে দাঁড়ানোর চিন্তা নাই আর। অলরেডি দাঁড়ায়া গেছে। ফলে, আমার ব্লগ আরও সফল হবে কেমনে সেই আলোচনা করা যায়।
সামহয়ার দাঁড়াইছে তিলে তিলে। নানা শীতলতা ও উত্তাপের ভেতর দিয়া সামহয়ার এখন একটা স্থিতিশীল অবস্থায় দাঁড়াইছে। সামহয়ার নিয়া আর কথা বইলা লাভ নাই। সামহয়ার ইজ সামহয়ার। এইটা পাইওনিয়ার। এইটারে শুদ্ধ, সংশোধন, পরিমার্জন এইগুলা করার চিন্তা আর না করাই ভাল। আমি নিজে বহু পোস্ট দিছি। গালিগালাজ, দলবাজি এইগুলার বিরুদ্ধে কথা কইতে গিয়া সুশীল উপাধি খাইছি। এখন গালি কিছু কমছে। তবে অস্থিরতা কমে নাই। মাঝে মাঝে পেজের পর পেজ উল্টাইতে গেলে মেজাজ মর্জি ঠিক রাখা কঠিন হয়া দাঁড়ায়। ভাগ্য ভাল আমি কুম্ভরাশি। তাই, রাশিগতভাবে মাথায় ঠাণ্ডা থাকে।
সচলায়তন নিয়া আমার ক্ষোভকে অনেকে শুধু ব্যক্তিগত মনে করেন। ব্যক্তিগত ক্ষোভের বাইরেও সচলায়তনের বিরুদ্ধে আমার সামষ্টিক ক্ষোভও আছে। সচলায়তন করার সময় যারা গেছিলেন সেইখানে তারা সামহয়ারে থাকদের ব্লেম করে, ভিক্টিমাইজ করে গেছিলেন। এইটা আমার পছন্দ হয় নাই। আমি প্রথম থেকে সচলায়তনের বিরুদ্ধে বলতেছি, তাদের ফ্যাসিস্ট চরিত্রের কারণে। এতদিনে আমি খুব জোর গলায় বলতে পারি আমি সঠিক অবস্থানে আছিলাম। আশার কথা সচলায়তনের যে কোনো কেলেঙ্কারিতে সবার অধমের কথা মনে হয়।
প্যাঁচালি কেন জানি আমারে টানে নাই। আমি নিয়মিত প্যাঁচালি পড়ি না। শুনছি একজন ব্যক্তি ওই সাইট চালান। তার যে খুব হিট হওনের বাসনা তাও না। চলছে চলুক, এই।
আমার ব্লগের সঙ্গে আমার শুরুটা খারাপভাবে হইছে। আমার ব্লগের উদ্বোধনের আগে পিছে এটীমের কিছু অতিউৎসাহি ব্লগার আমারে ইরিটেট করতে থাকলে আমি একটা পোস্ট দিছিলাম সামহয়ারে। সেইখানে আমার ব্লগরে এটীম ও আওয়ামী টীমের লগে সম্পর্কিত কইরা এর টেস মারার ধান্দা করছিলাম। পরে, ঘটনাচক্রে আমার ব্লগে যোগ দিয়া বুঝলাম, এইখানে আওয়ামী লীগ থাকতে পারে, এটীম থাকতে পারে। কিন্তু যারা চালাইতেছেন তারা এটীম আওয়ামী লীগের চাইতে ম্যাচিউরড। তারা সিরিয়াসলি ব্লগ করতে চান। এবং এই ব্যাপারে তারা কনফিডেন্ট। এইটা আমার পছন্দ হইছে। কয়টা পোস্ট আমি আমার ব্লগে দিছে। কেঠা জানি একবার গালিও দিছে। কিন্তু আমার মনে হইছে, এই ব্লগের প্রাণশক্তিরা আমারে ঐতিহাসিক কারণে নিতে পারেন নাই। তাই একটু কমই আসছি এইখানে। আর অডিয়েন্সের দিকে তাকায়াও সামহয়ারের লোভ সামলাইতে পারি নাই। ডুয়াল পোস্টিং ইচ্ছা কইরা তেমন করি নাই। কারণ, আমরা আর মামুরা দুইবার পোস্ট দেখলেই বা কী, এক বার দেখলেই বা কী?
আমার ব্লগের তিনটা ভার্সন চোখে দেখলাম। সব কয়টাই ভাল। কিন্তু পরিচালকরা একটায় স্থির থাকতে পারতেছেন না দেইখা একটু কষ্ট লাগছে। তবে প্রথম থেকেই যে তারা বিজ্ঞাপন ও আয়ের চিন্তা করছেন সেইটা ভাল লাগছে। আর পাবলিসিটির জন্য গুগলে বিজ্ঞাপনের আইডিয়াও আমার পছন্দ হইছে।
গালিগালাজ পছন্দ হয় নাই। তবে আওয়ামী লীগ, এটীমের পাশাপাশি অন্যান্য দলের ব্লগাররা আসছেন সেইটা ভাল লাগছে। তাদের বিরুদ্ধে তর্ক, গালাগালি ইত্যাদি হইছে। কিন্তু এইটা স্পষ্ট আমার ব্লগ থেকে কেউ কাউরে তাড়ায়ে দিতেছে না।
সচলায়তনের অনেকেরে এইখানেই দেইখা ভাল লাগছে। তাদের উপস্থিতি থেকে বুঝছি আমার ব্লগকে অনেকে থার্ড অপশন হিসাবে নিছেন। বলাবাহুল্য এই সংখ্যাও কম না।
আমার ব্লগ টেকি বিষয়গুলারে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়া নিছে। এইটাও ভাল লাগছে। তবে, ওয়ার্ড প্রেসের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীলতা ভাল লাগে নাই। ড্রুপাল, কোডইগনিটর এইগুলায় এর থেকে ভাল হইতো বইলা শুনছি।
টেকনিকাল আর যেসব সমস্যার কথা লোকাল বলছেন সেইগুলা আমার কাছে সঠিক মনে হইছে।
আওয়ামী লীগ হওয়াটা সমস্যা না। সমস্যা হইলো দলীয় ফ্যাসিজমে আক্রান্ত হওয়া। সেইটা আমার ব্লগ হইতেছে না, এইটা স্পষ্ট।
পার্সোনাল পেজের ধারণাও তারা দ্রুত ইন্ট্রোডিউস করতে পারছেন এইটা আরেকটা সাফল্য।
ফলে, আমার ব্লগ সফল হবে এ বিষয়ে আমার তেমন কোনো সন্দেহ নাই।
সামহয়ারের পর যত ব্লগ দেখলাম, সবাই সামহয়ারের তেল দিয়া মাছ ভাজার চেষ্টা করতেছেন। মানে রেডি ব্লগার নিয়া কাজ চালাইতেছেন। নতুন জায়গায় নতুন ব্লগার এক্সপ্লোর করার উৎসাহ খুব কম উদ্যোক্তাই দেখাইছেন। এই জায়গাটা থেকে বের হওয়া দরকার। আমার ব্লগ যদি একটা চেষ্টা নেয় তাইলে ভাল হবে।
সামহয়ার ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপন দিছে, সেইটা থেকেও নতুন ব্লগার আসতে পারে।
লোকাল প্রথম আলো ব্লগের কথা তুলছেন। প্রথম আলো ব্লগ এখনও মাতৃক্রোড়ে। এইটা নিয়া বড়াই করার সময় আসে নাই। প্রথম আলো বড় মিডিয়া, রিডারশিপ বেশি, অনলাইন ইউজারও বেশি। সো সেইখানে কিছু মানুষ আসবেনই। কিন্তু আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হইলো একই সঙ্গে কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটি এনশিওর করা। আবার বিজনেস কনসার্ন হিসাবেও সেইটারে সফল করা। আবার বৃহত্তর পাঠকের দিকে তাকায়া ভাষা, কনটেন্ট এইগুলা মাথায় রাখতে হবে। প্রথম আলোর স্টাবলিমমেন্ট একটা বড় বিষয়। ফলে পার্সপেক্টিভটা আলাদা হয়া যাইতেছে। সো, প্রথম আলো ব্লগ কার্যক্ষেত্রে কারো প্রতিদ্বন্দ্বি হবে বলে আমার মনে হয় না।
আমি বরং আমার ব্লগের সাফল্য কামনা করি।
আর সামহয়ার আরও বড় হউক এইটা চাই।
একই সঙ্গে সচলায়তনের আশু ধ্বংস কামনা করি।
.....................................................................
পোস্টা আমার ব্লগে আসার পর, সচলায়তনের অন্যতম নীতিনির্ধারক চোর ওরফে অচ্ছুৎ বালাই আমাকে অশ্লীল আক্রমণ করেন। সচলায়তনের ভক্তদের এরকম কাণ্ড অতীতেও দেখা গেছে। আক্রমণটা নতুন না। নতুন হইলো আমার ব্লগে সেই আক্রমণের ধরন। সামহয়ারে এ ধরনের আক্রমণ হইলে একটা সামাজিক প্রতিরোধ তৈরি হয়। এইখানে মেলা বিবেকবান ব্লগার আছেন যারা অচ্ছুৎ বালাইয়ের মতো লোকের নোংরা প্রতিবাদের জবাব দিতে জানেন। আবার আমাদের দীর্ঘ দিনের সচতেনতামূলক ক্যাম্পেইনের কারণে সামহয়ারে গালিবিরোধী নীতিমালা প্রয়োগ করা শুরু হইছে। এ ধরনের অশ্লীল ও নোংরা ব্যাপার এইখানে তেমন আর দেখা যায় না।
কিন্তু আমার ব্লগে দেখলাম, অদ্ভূত ব্যাপার। সেইখানে অচ্ছুৎ বলাইয়ের নোংরামির প্রতিবাদ করতে কাউরে দেখা গেল না। ওনারা অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ ব্যবস্থা নেন না। তাই সেই দাবিও আমি করি নাই। কিন্তু যেখানে ব্লগ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিবেন না, আবার কোনো সামাজিক সচেতনতাও নাই নোংরামির বিরুদ্ধে সেইখানে কীভাবে লেখা সম্ভব এইটা নিয়া ভাবলাম। ভেবে আমি সিদ্ধান্ত নিছি, আমার ব্লগে আর লিখবো না। মানে লেখা কঠিন সেইখানে। লিখতে পারা সম্ভব না।
৪৬টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×