ব্লগিং করতে এসে মেলা নতুন মানুষের দেখা পাইলাম। নতুন মেলা অভিজ্ঞতা হইলো। সবচেয়ে আশার কথা বেশ কিছু প্রতিভার দেখা পাইলাম। আগে ভাবতাম সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্যক্তি ডক্টর আইজুদ্দিন। উনি একজন ব্লগার না শুধু রীতিমতো এক নিক ফ্যাক্টরি। কী অসামান্য ধৈর্য্, সময় ও অবসর থাকলে একের পর এক নিক খুলে এবং বার বার ব্যান খেয়ে ব্লগিং করা যায় তার অসামান্য উদাহরণ তিনি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো যে নামেই তিনি আসেন সে নামেই তাকে লোকে চিনে ফেলে। লেখার স্টাইলটার কারণে যদি মানুষ তাকে চিনে ফেলে তাইলে বুঝতে হবে তার একটা স্বকীয়তা আছে। যাই হউক, নানা লোকরে অযথাই ব্লগাররা আইজুদ্দিন বইলা সন্দেহ করছে। কিন্তু যতদূর বুঝি খুব কম লোকই তারে ঠিকমতো ট্রেস করতে পারছে। রীতিমতো ডিটেকটিভ জ্ঞানের অধিকারী এই ব্লগার সম্পর্কে ইদানিং আমার আগ্রহ কমতে শুরু করছে। কারণ আমারব্লগডটকমে তিনি সপ্তাহে সাতদিন আমারে নিয়া পোস্ট দেন। আমি যার ভক্ত তিনি আমারে নিয়া কথা বলা শুরু করলে তো আর ভক্ত থাকা যায় না। মানে ঘটনা দাঁড়াইতেছে এই যে, উনিই আমার ভক্ত হয়া গেছেন।
ব্লগের আরেক প্রতিভা হোসেইন। এটিম গঠনে তার ভূমিকার জন্য এনার নাম উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। বহুদিন এটিমের লিডিং পাওয়ার তার হাতে ছিল। রহস্যময় ব্যক্তি হিসাবে তিনি মেলাদিন আকর্ষণ ধরে রাখতে পারছিলেন। শুনা যায় ইনিও ছোটখাট নিক ফ্যাক্টরি। এটিমের ক্লোজড নেটওয়ার্কের মধ্যেও ইনি তিনখানা নিক পরিচালনা করেছিলেন। ফলে, কিছুদিন আগে এটিম থেকে ওনারে বহিষ্কার করা হয়। পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হোসেইনের সঙ্গে ইস্যু ভিত্তিতে আবার এটিম কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ব্লগের আরেক প্রতিভা লোকালটক। বাংলা ব্লগে কত লোকাল গ্লোবাল আসতেছে যাইতেছে। ঝাল-মিষ্টিও প্রচুর। তাই লোকালটকরে আমি চিনেই উঠতে পারি নাই। উনি অবশেষে আমার ক্যারিক্যাচার বানিয়ে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হলেন। (Click This Link)। তখন আমাকে অনেকে বলেছিলেন সামহয়ারে কমপ্লেইন করতে। আমি করি নাই। কারণ, আমার ছবি ফেসবুক থেকে নিয়া উনি অনেক মনোযোগ দিয়া কাজটা করছিলেন। তার এই অভিনিবেশ আমি উপভোগ করছিলাম। বলা যায় আমার ক্যারক্যাচার করার মধ্য দিয়াই লোকালটক আলোচনায় আসেন। আমি তার বিখ্যাত হওয়ার পথে বাধা হইতে চাই না। কিন্তু নিজের কৃতকর্মের কারণে তিনি লোকালটক নামে দুই মাসের বেশি চালাইতে পারলেন না।
এর পর কয়েকটা নামে উনি গঠনমূলক কিছু উদ্যোগ নেন। সেইগুলা ভাল না লাগায় ফিউশন ফাইভ নামে আসেন। বেশ কিছু নিকের অধিকারী এই ব্লগার। তার নানা নিকের নানা স্টেটাস নিয়ে পোস্টও দিছেন। (Click This Link)। এনার টাইপটা অদ্ভূত। কিছুদিন এলোমেলো কিছুদিন গোছানো। আবার এলোমেলো। একব্লগ থেকে আরেক ব্লগে। এক নিক থেকে আরেক নিকে ঘোরাফিরা করতে পছন্দ করেন। ফিউশন নাম থাকতে থাকতেই টিম সেভেনেটিন নামে আইলেন। এবার ভাল কাজ। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংকলন তৈরি। সংকলনটা বের হইছিল। ভদ্রলোকের মেকাপ সেন্স ভাল, লেখা কম্পাইল করার খাটনি দিছেন ভাল। সব মিলায়া কাজটা সবাই পছন্দ করছে। (Click This Link)।
যাই হউক। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এই সংকলন করার সময় তার সাথে আমার যোগাযোগের সূচনা। লিস্টে আমার নাম দেইখা অবাক হইছিলাম। এটিমের কাজ ভাইবা লেখা দিতে মন চাইতেছিল না। এইসময় একদিন মেইল আইলো। লোকাল বলছেন, অনুমতি দেন। এইটার সাথে এটিমের সম্পর্ক নাই। আমি বললাম বেশ। নেন। লোকালটক কেঠা। কী তার পরিচয় এইটা নিয়া আমার আগ্রহ ছিল না। তার অ্যাসোশিয়েশনটা বুঝতে পারতেছিলাম। একটু আনপ্রেডিক্টেবল, পল্টি বিশেষজ্ঞ এইটা বুঝতে পারতেছিলাম। তাই কথা বাড়াই নাই। ফিরে দেখা ৭১ করার আগে পরে আমি প্রথম আলোতে আসছি। তখন লোকাল বললেন, উনি প্রথম আলোর শুরু থেকে আছেন। প্রথম আলোতে আইসা ওনারে কইলাম, আসেন একদিন দেখা করি। উনি রাজি হন না। তাই আমিও আর আগ্রহ দেখাই নাই।
লোকালটক তখন আমার ব্লগে। (http://amarblog.com/localtalk)। নামকরা ব্লগার। ব্লগ লিড দেয়। আমার ব্লগের অনেকেই জানেন, উনি প্রথম আলোর কর্মী। লোকালটক একজন ব্লগার। ছদ্মনামে লেখেন। কিন্তু মানুষজনরে বলে বেড়ান উনি প্রথম আলোর কর্মী। এইটার মর্তবা কী? আপনে নিজের নাম কইতে পারেন না। কিন্তু দেশের বড় একটা মিডিয়ার কাজ করেন এই পরিচয় দিতে সাচ্ছদ্য বোধ করেন। বাহ!
আমার ব্লগের ব্লগাররা একটা বিষয়ে এখন মোটামুটি নিঃসন্দেহ যে লোকলটক আসলে প্রথম আলোর কেউ নন। উনি জাস্ট প্রথম আলোর পরিচয় ব্যবহার করে সহব্লগারদের সমীহ আদায় করতে চান।
আবার কেউ কেউ মনে করেন উনি প্রথম আলোতে কাজ না করলেও ভেতরের অনেক খোঁজখবর রাখেন। আমাকেও অনেকে জিজ্ঞেস করছেন। কোনো কোনো কলিগের নাম উল্লেখ করেও জানতে চেয়েছেন যে তাদের কেউ লোকালটক কি না।
আমার কথা একটাই। এই ধরনের ঘোড়ার ডিম টাইপ ব্লগার নিয়া আমার কোনো আগ্রহ নাই। যে কেউ লোকালটক হইতে পারে। আবার যে কেউ তা নাও হইতে পারে। তবে ব্লগ নিয়া তার বেশ একটা অভিজ্ঞতা হইছে। উনি সচলায়তনে ব্যান খাইছিলেন। আমার ব্লগ তারে গুরুত্ব দেয় নাই বইলা আমার ব্লগ ছাইড়া দিছিলেন। সহজ হিসাবে আমি একটা জিনিশ বুঝি। লোকালটকরে লোকালটক নামে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নাই। গুরুত্ব দিতে হইলে একটা পরিচয় লাগে। একটা নাম লাগে। কথাবার্তা হওয়া লাগে। আমার ব্লগ সেই পরিচয় পায় নাই বইলা গুরুত্ব দিতে পারে নাই। ফলে লোকালটক প্রথমআলোব্লগে গুরুত্ব পাওয়ার জন্য উদ্যোগ নেন। (http://amarblog.com/localtalk/9082)। আমি দেখলাম বিব্রতকর পরিস্থিতি। ব্লগ নিয়া বিভ্রান্তি তৈরি হইতে পারে। তাই আমি লিখলাম এইটা। (http://amarblog.com/mahbubmorshed/9300)। এবং লেখাটাকে বর্ধিত করলাম এই আকারে : Click This Link
প্রথম আলো ব্লগ চালুর পর লোকাল নানাভাবে যোগাযোগ করতে থাকেন মেইলে। পরামর্শ, উপদেশ, হুমকি, আদেশ আসতে থাকে। কিন্তু লোকালটক নামে একটা লোক আপনারে কী কইতেছে এইটা নিয়া মাথা ঘামানোর সময় আপনের থাকবে? যদি আপনের মাথায় ঘিলু থাকে?
আমি তার মেইলে তেম সাড়া না দিলে তিনি ব্লগিং করতে শুরু করেন প্রথম আলো ব্লগে। লোকালটক নামটা অন্য কেউ নিয়ে নিছে বইলা ফিউশন ফাইভ নামে ব্লগাইতে শুরু করেন। প্রথমে একটা ইতিবাচক পোস্ট দেন। পড়েন : Click This Link । আর কয়দিন পরে পল্টি মাইরা লেখেন আরেকে পোস্ট (Click This Link )।
দুই পোস্টের আকাশ পাতাল ফারাকের কারণ কী?
ওনারে আমি উপযুক্ত গুরুত্ব দিতে পারি নাই। সেইটা কারণ হইতে পারে। কিন্তু তার চেয়ে বড় কারণ ওনার পোস্ট থেকে নীতিমালার কারণে একটা ছবি মডারেট করা হইছিল। কেউ গালি না দিয়া যে কোনো কোম্পানির সমালোচনা করতে পারে। তথ্য তুলে ধরতে পারে। কিন্তু গালি, লোগো বিকৃতি, নাম বিকৃতি এইগুলা প্রথম আলো ব্লগের নীতিমালা অনুসারে অনুমোদন করা যায় না। তাই তার এই ছবিটি মডারেট হইছিল (Click This Link)। আর দুইদিন আগে ক্রিকেটারদের নিয়ে আলোচনা করতে গিয়া অশালীন গালি দেয়ায় তাকে সাময়িক ব্যান করা হয়েছে। এই কারণে উনি খুব ক্ষেপছেন। নতুন লোগো ছাড়ছেন।
কামার বানাবে ব্লগ লেখায় ওনার মূল মাথা ব্যথায় কারণ যেটা বোঝা যাইতেছে সেটা হইলো প্রথম আলো ব্লগে গ্রামীন ফোনের বিজ্ঞাপন। এই বিজ্ঞাপনটা বন্ধ হউক এইটা উনি মনে প্রাণে চান। আরেকটা জিনিশ উনি চান। সেইটা হইলো অ্যালেক্সার রেটিং কইমা যাক। প্রথম আলোতে এইরকম অসূয়াগ্রস্ত কেউ কাজ করে বলে চাক্ষুস দেখি নাই আমি। শুনিও নাই।
ফলে আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে চাই যে, লোকালটক/ ফিউশন ফাইভ ইত্যাদি নামে ব্লগিং করেন এবং প্রথম আলোতে চাকরি করেন বইলা পরিচয় দেন এই ব্লগার আসলে আমাদের কলিগ না। উনি পত্রিকায় কাজ করেন এই পরিচয় দিয়া ধাপ্পা ও পল্টিবাজিটাই অব্যাহত রাখতে চান।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:১৬