অবিবাহিত নারীপুরুষ একসাথে বসবাস করবে বাংলাদেশেও। আধুনিকতার দিকে বিরাট একধাপ এগয়ে গেলাম আমরা আদালতের এমন রায়ের ফলে। যে রায়ের ফলে অশ্লীলতায় নিজেকে ভাসিয়ে দেয়ার সুবিশাল সুযোগ তৈরী হলো। সুগম হলো রাস্তাঘাটে, ড্রেনে, হসপিটালে পিতৃমাতৃ পরিচয়হীন অসংখ্য শিশুপ্রাপ্তির পথ। লাভজনক এভরশন ব্যবসার সম্ভাবনাময় দ্বার উন্মুক্ত হলো। কনডম, পিল, ভায়েগ্রা উৎপাদন ও বিক্রি করে কোটিপতি হবার সুযোগ এখন নাকের ডগায়।
যাই হোক আমার আজকের প্রসঙ্গ কিন্তু ভিন্ন। ছবির ব্যক্তিদ্বয় নিয়ে কিছু কথা বলতে এসেছি। দুজনের একজন সালমান মোক্তাদির। তিনি বাংলাদেশী শীর্ষ ইউটিউবারদের একজন। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় যাকে বলা হয় আইকন অফ ইয়ং জেনারেশন। তার ভক্তরা সংখ্যায় অগণিত। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই সালমান মোক্তাদির অল্প বয়সে সাফল্যের চূড়ায় অবস্থান করছেন মানুষকে বিনোদন দেয়ার মাধ্যমে ইউটিউব কিংবা টিভি চ্যানেল ও বিভিন্ন মাধ্যমে। তাইবলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভাবে নিজেকে উপস্থাপনা করার যৌক্তিকতা কতটুকু? তার ভক্ত অনুসারীরা কি গ্রহন করবে এসব থেকে সেটাই মূল জিজ্ঞাসা কিংবা তিনিই বা এসব করে কি মেসেজ দিতে চাচ্ছেন?
এবার দ্বিতীয়জনের প্রসঙ্গে সামান্য আলাপ করা যাক। নানা ঘটনা রটনার জন্ম দিয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত প্রথম মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নির্বাচিত জেসিয়া হচ্ছেন দ্বিতীয়জন। ভাবতে অবাক লাগে তিনিই বর্তমানে দেশবিদেশে বাংলাদেশের সেরা সুন্দরীর খেতাব নিয়ে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করছেন।
মাঝখানে দুইটি কথা যোগ করে নিচ্ছি আমি। কোনো প্রফেশনাল মানুষের ব্যক্তিজীবন নিয়ে আমি কখনো মাথা ঘামাইনা যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যক্তিজীবনের বিতর্কিত কিছু প্রকাশ্যে না ঘটে। যেমন একজন লেখক ব্যক্তিজীবনে চোর না ডাকাত, নাস্তিক নাকি সেটা আমি অনুসন্ধানে যাইনা স্রেফ তার লেখা ভালো লাগলে পড়তে থাকি। কোনো অভিনেতা ব্যক্তিজীবনে ধর্ষক না পিশাচ তাতেও আমার আগ্রহ নেই কারণ আমি তার অভিনয় দেখে বিনোদিত হতে চাই। সালমান কিংবা জেসিয়া নিয়ে এতো কথা বলার কারণ তাদের ব্যক্তিগত নস্টামি পাবলিকলি উপস্থাপন করে তারাই সেটাকে ব্যক্তিগত শব্দের অনেক বাইরে নিয়ে এসেছে যা নিয়ে কথা বললে প্রতিবাদ করার কিছুই আমি দেখিনা।
যাই হোক পাবলিকলি ছবি দিতে গেলে এদেশে এখনো স্বামী স্ত্রীরাও সামান্য দুরত্ব বজায় রাখে। এমনটাই বাংলাদেশি মানুষের রক্ষণশীলতা বলে পরিচিত। যারা বেলেল্লাপনা করে তাদের কথা বাদ কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ পাবলিকলি এখনো রক্ষণশীল হিসেবেই নিজেকে প্রকাশ করতে পছন্দ করে। অথচ জেসিয়া সালমানদের কর্মকাণ্ড আমাদের এখনি ভয়াবহ ভাবনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে যে ভাবনাটা কোর্টের সম্প্রতি একটি সমালোচিত রায় নিয়ে। যে রায়ে অবিবাহিত নারীপুরুষকে একসাথে থাকার বৈধতা দেয়া হয়েছে। একেতো মিডিয়ায় কাজ করা প্রতিটা মেয়েকেই মানুষ খারাপ চোখে দেখে তারউপর এদের নোংরামির ফলে ভবিষ্যতে কোনো ভদ্র পরিবারের নারী মিডিয়া পাড়ার দিকে পা বাড়াতে পারবেনা পরিবারের বাধ্যবাধকতা পেরিয়ে।
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে কাজ করে সামান্য খ্যাতি পেলেই আমাদের দেশের অধিকাংশ মিডিয়া কর্মী মাটিতে পা ফেলতে চাননা। যার পেছনে আমাদের মতো দর্শকরাই দায়ী যারা তাদেরকে অতিরিক্ত মূল্যায়ন দিয়ে, স্বপ্নের পুরুষ, স্বপ্নের নারীর আসনে বসিয়ে পূজা করি। শুধু সালমান মোক্তাদির আর জেসিয়াই নয় এমন নোংরামীর তালিকায় আরো অসংখ্য আছেন যাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে মানুষ বিনোদন চায় কিন্তু এরম প্রকাশ্য অশ্লীলতা, বেলেল্লাপনা অবশ্যই কারো কাম্য নয়। যারা এরকম চরিত্র ব্যক্তিজীবনে প্লে করে মানুষ তাদেরকেও বর্জন করার পক্ষে। গার্লফ্রেন্ড,বয়ফ্রেন্ড নিয়ে চুম্মাচাটি, নস্টামি করার জন্য বাসাবাড়ি, হোটেল, রিসোর্ট অনেক আছে পাবলিক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো যেন পর্ণ ওয়েবসাইটে রূপান্তরিত হয়না বাংলাদেশে সে বিষয়ে আমাদেরকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিশেষে অশ্লীলতাহীন মিডিয়া, অশ্লীল মিডিয়া কর্মীমুক্ত মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমের প্রত্যাশায় শেষ করছি।