গতকাল জুমার নামাজে সালাম ফিরিয়ে দোয়া শেষ করা মাত্রই দাড়ি টুপিওয়ালা একলোক এসে চিৎকার করে বলতে লাগলেন,
"হে মুমিন ভাইয়েরা আমার, আমার আল্লাহ, রাসুল (সঃ), পীর মাষায়েকের নামে যারা কুৎসা রটাচ্ছে, কটুক্তি করছে, শাহবাগের সেই নাস্তিকদের বিরুদ্ধে এখন বিক্ষোব মিছিল হবে, আপনারা আমাদের সাথে মিছিলে যোগ দিন"।
মসজিদ থেকে বের হয়ে দেখলাম দুজন হুজুর হেফাজতে ইসলামীর ব্যানার ধরে দারিয়ে আছেন। ওদিকে নামাজ পড়ে সবাই যে যার মতো চলে যাচ্ছে। আমি দাড়িয়ে ব্যানারের লেখা গুলো পড়ে ব্যানার ধরে থাকা হুজুরদের দিকে তাকানো মাত্রইএকজন হুজুর হাত তুলে আমাকে কাছে যেতে ইশারা করলেন। আমি আর না দাড়িয়ে সোজা বাসার দিকে হাঁটা শুরু করলাম।পরে আব্বু বাসায় আসার পর জিজ্ঞেস করলাম মিছিলে মানুষ কেমন হয়েছিলো। আব্বু বলল মিছিল নাকি হয়নি। কেও যাচ্ছে না।হুজুরেরা কজন বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে ব্যানার ধরে দাড়িয়ে আছেন।
ভাবছি নাস্তিক হওয়াটা কত সোজা হয়ে গেলো!!! যাকে তাকে নাস্তিক বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। আল্লাহ রাসুলের (সঃ) নামে কুৎসা রটানো অবস্যই কোন মুসলিম সহ্য করবে না।আমিওতো মুসলিম, কই আমার তো কখনো মনে হয়নি শাহবাগে ইসলাম বিরোধী কথা বলা হয়েছে বা হচ্ছে...আল্লাহ রাসুল ( সঃ) তো আমিও মানি। তবে তারা কি সামথিং স্পেসাল?
শাহবাগ তথা তরুন প্রজন্মের দাবি তো একদম স্পষ্ট, পানির মত পরিষ্কার। রাজাকারদের দের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি।হেফাজতের হুজুরেরা এখানে নাস্তিকতার গন্ধ কোথেকে পেলেন আল্লাহ মালুম ।সবাই কে নাস্তিক বলার এই অধিকারই বা কে দিলো তাঁদের?
যাকে তাকে নাস্তিক বানানোটাও তো ধর্মানুভুতিকে আঘাত করা। আর কারো অনুভুতির কথা জানি না, আমার অনভুতিতে লেগেছে কারণ আন্দোলনে তো আমিও গিয়েছি। আমিতো নাস্তিক না।। যাকে তাকে নাস্তিক বানানোকে ইসলামের হেফাজত বলে না। ইসলাম এত ঠুনকো ধর্ম না যে দুই একটা নাস্তিকের কথায় উড়ে যাবে। নাস্তিক তো সব ধর্মেই থাকে, তাতে কি ধর্মের কিছু আসে যায়?
নাস্তিক যদি একজন হয় তো তার বীপরীতে আস্তিকের সংখ্যা কোটির চেয়েও অনেক বেশি…গুনায়ও পরে না। যদি হেফাজত করতেই চান তো যে কাওকে নাস্তিক বানিয়ে না, যে নাস্তিক তাকে বুঝিয়ে আস্তিক হতে বলেন।তখন আর এত ঝামেলা হবে না।
ব্লগের গুটি কয়েকজন স্বঘোষিত নাস্তিকদের বিরুদ্ধে আরো আগেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ ছিলো। মোটেও কঠিন কাজ ছিলো না। নাস্তিক হতে চাস তো হ, ব্যাক্তিগত ব্যাপার, কিন্তু আমার ধর্ম নিয়ে একটা বাজে কথাও কারো বলার অধিকার নাই।খোলা জায়গা পেয়ে যে যার মতো যা ইচ্ছা লিখে যাবে এটা মেনে নেয়া যায় না।নাস্তিকদের ঐ যুক্তি ফুক্তি আর যাই হোক, কোন মানুষের উপকারে আসবে না। বরং সংঘাত বাড়াবে।
অতীতে তসলিমা নাছরিনকে নাস্তিক বলে দেশ থেকে তাড়ানো হয়েছে, অথচ আজ কত ব্লগার তসলিমার চেয়ে শতগুন বেশি ধর্মানুভুতিতে আঘাত হানছে, এসব কি সরকার দেখেনা? তাদের বিচার হওয়া তো দুরের কথা, একটা তদন্ত কমিটিও সরকার গঠন করেনি এতদিন। আমি মনে করি এ বিষয়ে সম্পুর্ণ দোষ সরকারের। শুনলাম একটা কমিটি গঠিত হয়েছে। হাহ! তা এতদিনে বাদে কেন আপনাদের টনক নড়লো?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:০৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




