উৎসর্গ -(আগের মিক্স প্যাকেজটা ব্লগার মশিকুর রহমান মামুন ভাইয়ের কল্যাণে উপভোগ করেছিলাম।অনেকদিন ধরেই ব্লগে মামুন ভাই অনিয়মিত। দেখি উৎসর্গ জাদু মেরে উনাকে ফিরিয়ে আনা যায় কিনা। মামুন ভাই - আপনাকে,অনেক ভালবাসা সহ।)
অণুগল্প
১) মজা
মজা ছাড়া মানুষ বাঁচে না । সাধন হয় না । মজা পেতে এক বালক পুকুরে ঢিল ছুড়ে । ব্যাঙ বলে - মারেন ক্যান , আমরা মইরা যাইতেছি, ছাইরা দেন ছাইড়া দেন ।
বালক বলে - আমরা মজা করি । গল্পের মোরাল হচ্ছে - কারো পৌষ মাস , কারো সর্বনাশ !! পাঠক বলে - তথাস্তু । এই শিখলাম।এই শিক্ষা পাঠকদের পীড়িত করে ।
পীড়ন দূর করার উদ্যোগ নিতে তারা ব্যাঙের পা ইউরোপে রপ্তানি করে । ৬০ টি ব্যঙ্গের পা ১ কেজি । কেজিতে কেজিতে ব্যাঙ যায় । ওখান হতে আসে মনসান্টো , সিনজেন্টা , বি এ এস এফ এর মত সম্মানী কোম্পানিরা । হাতে কীটনাশক নিয়ে । তাদের কীটনাশকে ফসল ভাল হয় । ধনেধান্যে ভরা বাম্পার দেশ হয় । ভাত খেকো পানজুমিয়া খাসিয়ারা লাউয়াছড়া বনে ব্যাঙ খোঁজে ।
- খুজেন ক্যান ?
ওরা অবাক হয়ে তাকায় । আমরা চাষা - ব্যঙ্গের লগে আমাগো দোস্তি । ব্যাঙ যে ডাকেনা - বৃষ্টি হইব ?
হবে হবে , এত জাননের কাম নাই । বৃষ্টি আইলে এমনি ই দেখবেন । - আমরা নগরের মানুষরা আশ্বাস দেই ।
বৃষ্টি আসে । সরকারী কাগজ ও আসে । বনমানুষেরা তারপর ব্যাঙ হবার অপেক্ষায় থাকে ।
অনেক দিন পর আমুদে মানুষেরা ইকোপার্কে বেড়াতে যায় । মজা মারতে ।
২) সেরা
খ্যাতিমান লেখকের জন্মদিন।৮০ বছর পূর্তি।
ফুলেল শুভেচ্ছায় আচ্ছাদিত হতে হতে লেখকের মনটা
নীল হয়ে গেল।কয়েক বছর ধরেই এমনটা হচ্ছে। কেউ,
কেউ কিছু বুঝতে চাইল না।
আপনার কাছে আপনার সেরা লেখা কোনটি?- এক সাক্ষাতকার
প্রার্থী জানতে চাইল। সেরা? হ্যা- লেখক কিছুক্ষণ আনমনে বিড়বিড় করে বলে উঠল -আমার সেরা লেখারা ....... ঐ উত্তর দিকে।
বলা মাত্রই উত্তর পাশের বুক সেলফে কিছু ভক্ত হামলে পড়ল।
হুড়াহুড়ি করে বই নিল।
একটু পর প্রত্যেকের নত হওয়া চেহারায় মৌনতা।
তাদের হাতে ধরা বইগুলোর পৃষ্ঠারা সাদা।
৩) অ্যাবস্ট্রাক্ট রিয়েলিজম
জীবন জানালার কার্নিশে বসে থাকা চুড়ুই পাখিটা বাস্তব কিংবা অবাস্তব। কেননা চোখের সামনের সামিয়ানাটা ঝিরিঝিরি।ফলতঃ বিভ্রান্ত চক্ষু। দেহ মূর্ত, হৃদয় বিমূর্ত। কাজেই মুখনিঃসৃত ভাষা দ্বন্দ্বমুখর।
''পৃথিবীর ইতিহাসে কিন্তু অ্যাবস্ট্রাক্ট রিয়েলিজম বলতে কোনও কিছু নেই। শব্দটা আমিই উদ্ভাবন করেছি। ''-জনৈক শিল্পীর
অর্বাচীন উচ্চারণে তাই বিস্মিত নই। মানুশ মাত্রই বিমূর্ত বাস্তবতা জানেনা শিল্পীর বোধি।
চৌধুরী জহুরুল হকের চোঙ্গাগল্প
* মুখে কথা নেই *
ঘরে পর্দা দিতে হবে, দরজা-জানালা সব খালি, বললেন স্ত্রী।
স্বামী চিন্তিত। মুখে কথা নেই।
স্ত্রী বললেন: কী, কথা বলছো না যে?
স্বামী বললেন: ঠিক আছে পর্দাই তাহলে কিনি। এ মাসে আর-
: কী? স্ত্রী জিজ্ঞাসু।
স্বামী বললেন: তোমার শাড়িটা আর কেনা হল না।
স্ত্রী চিন্তিত। মুখে কথা নেই।
* ধারাবাহিক স্বপ্ন *
ভাবি বললেন, তিনি প্রতিদিন স্বপ্ন দেখেন। নতুন নতুন স্বপ্ন নয়- একটি স্বপ্ন। যার স্পষ্ট একটা শুরু আছে, ক্রমধারা আছে। অর্থাৎ স্বপ্ন দেখছেন তিনি ধারাবাহিক উপন্যাসের মতো, ক্রমশ। ভাবি আরো জানালেন, যেভাবে তিনি স্বপ্ন দেখছেন এবং যে সব দেখেছেন, তাকে সাজিয়ে-গুছিয়ে নিলে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ এর মতো বড়োসড়ো একটি উপন্যাস হয়ে যেতো।
অবাক বিস্ময়ে প্রশ্ন করলাম: আজও স্বপ্ন দেখেছেন?
: হ্যাঁ, গতকালও দেখেছি। আদৌ সংগতিহীন নয়। আগে যা দেখেছি, ঠিক তারপর থেকে- একটু থেমে বললেন উন- আমি যদি লেখক হতাম-
বললাম: আচ্ছা, আপনি প্রথম থেকে সব বলতে পারবেন?
: পারবো।
একটা আকাঙ্খা জেগে উঠলো।
বললাম: একটা কাজ করতে পারবেন ভাবি?
: কী?
: ভয় পাবেন না। তেমন কিছু নয়। এতোদিন যে সব স্বপ্ন দেখেছেন সেগুলো আমাকে একটার পর পর একটা বলবেন। আর প্রতিদিন সকালে বলবেন পূর্বরাত্রির স্বপ্নের কথা। আমি লিখে যাবো। যতোদিন আপনার স্বপ্ন দেখা শেষ না হয় আমি এখানে থাকবো। আমার মনে হয়, একটা অসাধারণ শিল্প সৃষ্টি হতে পারে- আপনি কি বলেন ভাবি? কী, চুপ করে রইলেন যে? আমি বেশিদিন থাকলে আপনাদের অসুবিধে হবে, তাই না?
: না, না, কীসের অসুবিধে? তুমি থাকলে বরং আনন্দে দিন কাটবে আমাদের।
সেই রাতটা ভয়ানক উত্তেজনায় কাটলো।
সকালে ভাবির মুখোমুখি হতেই জিজ্ঞেস করলাম: স্বপ্ন
দেখেছেন?
: হ্যাঁ।
: কী দেখলেন?
: আজ একটা ভিন্ন রকম।
: কী রকম?
: দেখলাম, একটা কালো বোর্ডে সাদা অক্ষরে লেখা, ‘অনিবার্য কারণবশত অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্বপ্ন প্রদর্শন বন্ধ রইল’।
* হাত না দেখে *
এক অফিসে দুই মহিলা পাশাপাশি বসে কাজ করেন। একজন বাককৃপণ- প্রয়োজনীয় কথা ছাড়া মুখই খোলেন না, অন্যজন বাক বিলাসী- কাজ করতে করতে অকারণে এতো বেশি বক বক করেন যে, ভদ্রমহিলা কথা বন্ধ করলেই সবাই চোখ তুলে তাকান। নিত্যকার মতো সেদিনও ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছিল এবং বাইরে থেকে আসা এক হস্তরেখাবিদ সেটা লক্ষ করছিলেন। এক সময় তিনি তাঁর বন্ধুকে বললেন: ভদ্রমহিলা দেখছি বিরামহীন ভাবে কথা বলতে পারেন।
: বিরামহীন ভাবে কাজও করতে পারেন। শুধু মুখ চলে না, সঙ্গে সঙ্গে কাজও চলে।
: আর্শ্চয।
: আর আর্শ্চয, প্রয়োজনে বিদ্যুৎ গতিতে হাতও চালাতে পারেন।
: সেটা কী রকম?
: জুডো-কারাত এবং বক্সিং-এও ভদ্রমহিলা পারদর্শী।
: এক অঙ্গে এত রূপ!
: আগামী মাসে ওর বিয়ে হবে। বর খুব বড়োলোকের ছেলে। তুমি ওর হাতটা দেখে বলবে, ওদের সংসার জীবন কেমন চলবে?
: হাত না দেখেই বলতে পারি, এক তরফা ভাবে।
: তার মানে?
: ওর স্বামীর কপালে দুঃখ আছে।
কবিতা
৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া একটি মেয়ের কবিতা
আমার স্বপ্ন বড় হয়ে যাব অনেক দূরে
যেখানেতে নেই নিয়ম -কানুন
যেখানেতে নেই বাঁধা
যেখানেতে সবুজ শ্যামল
যেখানেতে সাদা,
যেখানেতে রঙেরা
করে শুধু খেলা ।
আমি যাব -
আমি বড় হলে যাব
অনেক অনেক দূর।।
এ কবিতাটি ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া একটি মেয়ের।। আমি তাকে একটি ডায়েরী দিয়েছি কবিতা লিখার জন্য। সে বেশ কয়েকটি কবিতা লিখে আমাকে দেখাল। এ কবিতা টি পড়ে মনটা উদাস হয়ে গেল। দুঃখ – যন্ত্রনায় ঘুরপাক খাওয়া মানুষ সব ছেড়ে – ছুঁড়ে অনেক দূরে চলে যেতে চায়। অনেক দূর নামক কল্পিত স্থানে গেলে তার মুক্তি, কিছুই আর তাকে স্পর্শ করবে না। বাস্তবে ”অনেক দূরে ‘যাওয়া সম্ভব হয় না। সংসার নামক মায়াজালে তাকে আটকে থাকতে হয় ।
১) অতৃপ্তি
কুত্তাও আউলিয়া
যা পায় তা খায়
মানুষের তৃষ্ণা সীমাহীন
যদিও সাগর তার পায় ।।
২) খোঁজ
শহরটা গোল চক্কর
যেদিকে যাই সেদিকে ঠোক্কর
কুত্তা - কাউয়া ডাস্টবিন দেহি মেলা
তাগো মাঝে খুইজ্জা বেড়াই
জগত বন্ধুর খেলা ।।
৩) নিঃস্ব
লিখখা খুজতে যায়া বর্ণমালা
বড়ই ফাপড়ে পড়ি
যারেই ধরি হের সাগরে
আমি হাতড়াইয়া মরি ।
চিন্তার ভিটামাটি কাইড়া হেরা
নাঙ্গা কইরা ছাইড়া দেয়
জগতের তামাম মহান লেখক
আমার আমি চুইষসা নেয় ।
কবিতা - শান্তি
সুখ শান্তির জন্য পৃথিবীর সব শুভ – অশুভ কর্মকাণ্ড ভাগাড়ে জড়ো হয়।
শুভ বল তুমি
অশুভ বলি আমি।
প্রতিটি সাধু – প্রেতাত্মা সুখ – শান্তির জন্য বিশ্বসংসার ফালাফালা
করে ফেলে।
তন্ন তন্ন করে টোকাই প্রতিটা ডাস্টবিনে শান্তি খুঁজে বেড়ায়।
অপঘাতে মরে মেঘনাদ।
ছলে – নাট্যে বেজন্মা বীরের খাতায় নাম লিখে লক্ষন।
রামের বেদিতে সুখ কিনে নেয় দশ মাথা রাবন।
ওম শান্তি !
পরকীয়ায় অনুক্ত শব্দের নাম , অত্যুজ্জ্বল দ্রোহের নাম শান্তি।
আমরা আমাদের সাথে পরকীয়া করি।
রাষ্ট্র আমাদের সাথে পরকীয়া করে।
মত্ত উল্লাসে রাষ্ট্র যার তার সাথে পরকীয়া করে বেড়ায়।
কেউ দেখে না , শোনে না , কেউ বোঝে না।
বিপ্লব স্পন্দিত বুকে প্রত্যেকে জাতিসংঘ মহাসচিব বনে যায়।
নিন্দা – প্রস্তাব করে করে আজীবন পার করে দেবে।
অদ্ভুত
এত কিছু হয়
তবু বিস্ময়
রাজার হস্ত
করে সমস্ত
ডাকাতির মত
চুরি ,
সব সস্তায়
লাশ বস্তায়
তবু ;
আলেয়ার পিছে -
ঘুরি ।
'' নাহজ আলা বালাগা'' নামক গ্রন্থ থেকে নেয়া হজরত আলী(রাঃ)এর বাণী -
১)সব চাইতে অসহায় সেই ব্যক্তি যার কিছু ভাতৃপ্রতিম বন্ধু নেই,কিন্তু আরো অসহায় সেই ব্যক্তি যে বন্ধুত্ব হারায় ।
২)মানুষের সাথে দেখা হলে এমন আচরণ করবে যেন তোমার মৃত্যুতে তারা কাঁদে এবং তুমি বেঁচে থাকলে তারা তোমার দীর্ঘায়ু কামনা করে ।
৩) জ্ঞানীদের বক্ষ তার গুপ্ত বিষয়ের সিন্দুক,প্রফুল্লতা বন্ধুত্বের বন্ধন,কার্যকর ধৈর্য সকল দোষ - ত্রুটির কবর ।
৪)ভয়ের ফলাফল হল হতাশা এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা হল নৈরাশ্য, সুযোগ মেঘের মত বয়ে যায়,কাজেই উত্তম সুযোগের সদ্ব্যবহার কর।
৫) হে আমার পুত্র ! আমার কাছ হতে ৪ টি জিনিস জেনে নাও - ক) বুদ্ধিমত্তা - সর্বোত্তম সম্পদ,খ)মূর্খতা - সবচাইতে বড় দস্যুতা, গ)আত্মগর্ব হল সবচাইতে বড় বর্বরতা এবং ঘ)নৈতিক
চরিত্র সর্বোত্তম অবদান। হে আমার পুত্র ! মূর্খ লোকের সাথে বন্ধুত্ব কর না। কারণ সে তোমার উপকার করতে গিয়ে
অপকার করে ফেলবে। কৃপণের সাথে বন্ধুত্ব কর না কারণ তুমি তার প্রয়োজন অনুভব করবে তখন সে দৌড়ে পালাবে। পাপী লোকের সাথে বন্ধুত্ব কর না কারণ সে তোমাকে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দেবে । মিথ্যেবাদীর সাথে বন্ধুত্ব কর না কারণ সে তোমাকে দুরের জিনিস কাছের আর কাছের জিনিস দুরের বলবে ।
৬) মূর্খের হৃদয় মুখে আর জ্ঞানীদের জিহ্বা হৃদয়ে।
৭) সম্পদ থাকলে বিদেশ ও স্বদেশ বলে মনে হয় আর দুর্দশাগ্রস্থ হলে স্বদেশ ও বিদেশ বলে মনে হয় ।
৮) জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা যত বাড়বে বক্তব্য ও তত কমবে ।
৯) চরমভাবে অবজ্ঞা অথবা অতিরঞ্জিত করা ছাড়া কোন অজ্ঞ লোক দেখবে না।
১০) হীনতম জ্ঞান জিহবায় থাকে এবং উচ্চমানের জ্ঞান কর্মের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
১১ ) যে ব্যক্তি বন্ধুদের তিন সময়ে রক্ষার চেষ্টা করে না সে বন্ধু নয়।এ সময়গুলি হল তার অভাবের সময়,তার অনুপস্থিতিতে ,
তার মৃত্যুকালে।
১২ ) ছোট পরিবার আরামদায়ক জীবন যাপনের অন্যতম উপায় ।
১৩) আত্মশ্লাঘা প্রগতির পথ রোধক ।
১৪ ) যে ব্যক্তি বিভিন্ন লোকের মত গ্রহণ করে সে চোরা গর্তের
ফাঁদ বুঝতে পারে।
১৫ ) যখন কোন কিছুতে ভয় পাবে সোজা তার গভীরে প্রবেশ করবে।কারণ তুমি যতটুকু ভয় পাও তার অনেক বেশি হল
তা থেকে দূরে থাকার প্রবণতা ।
১৬) ঈর্ষা না থাকলে শারীরিক সুস্থতা অর্জিত হয় ।
১৭) জ্ঞানীদের কথা যদি যথার্থ হয়,তবে তা সমাজের
ব্যাধির ঔষধ স্বরূপ,কিন্তু তাতে যদি ভ্রান্তি থাকে তবে সমাজ রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে ।
১৮) তোমার বন্ধু হল ৩ জন,শত্রু হল ৩ জন । বন্ধুরা হল -
তোমার বন্ধু , বন্ধুর বন্ধু এবং শত্রুর শত্রু ।
শত্রুরা হল - তোমার শত্রু , তোমার বন্ধুর শত্রু , এবং তোমার
শত্রুর বন্ধু ।
১৯) যে বেশি কথা বলে সে বেশি ভুল করে।যে বেশি ভুল করে সে নির্লজ্জ হয়ে পড়ে। যে নির্লজ্জ হয় সে আল্লাহকে কম ভয় করে।যে আল্লাহকে কম ভয় করে,তার হৃদয় মারা যায় ।
২০)যতটুকু প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য তার অধিক প্রশংসা পাওয়াই মোহেসাবি এবং যতটুকু প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য তার কম করা হল - হয় প্রকাশ ক্ষমতার অভাব না হয় শত্রুতা ।
২১)ঐটাই সবচেয়ে বড় পাপ,যেটি করে পাপী তা নগণ্য মনে করে ।
২২)ক্ষমা ও ধৈর্য জমজ এবং এ দুটি উচ্চ স্তরের সাহসের ফল ।
২৩)দুধরনের ব্যক্তি কখনো তৃপ্ত হয় না।এদের একজন হল
জ্ঞান অন্বেষণকারী অপরজন হল দুনিয়া অন্বেষণকারী ।
২৪) জ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়ে নিরবতায় কোন কল্যাণ
নেই যেমন মঙ্গল নেই অজ্ঞদের কথা বলাতে।
২৫) কিছু লোক আছে যারা পুরুস্কারের আশায় আল্লাহর ইবাদত করে,নিশ্চয়ই সেটা ব্যবসায়িদের ইবাদত। কিছু লোক ভয়ে আল্লহর ইবাদত করে সেটা দাসদের ইবাদত। এরপরও কিছু লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ইবাদত করে এটা স্বাধীন মানুষের ইবাদত।
আউলা মনের বাউলা কথন
১)আমি আপনার মত করে লিখতে আসিনি।
২)লেখকের লেখার প্রথম বাক্য তার যতটা বন্ধু
তারচেয়ে বেশি শত্রু।
৩) লেখক কারো সাথেই আপোষ করতে পারেন না ।
এমনকি কখনো কখনো নিজের রুচির সাথেও না ।
৪) প্রকৃতপক্ষে সাহিত্যের কোন সংজ্ঞা বা তত্ত্ব নেই ।
সৃজনশীল লেখক মাত্রই তার মত সংজ্ঞা বানিয়ে নেন ।
৫) কল্পনা হচ্ছে স্রষ্টার পক্ষ হতে মানুষকে দেয়া সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার ।
৬) মানুষ এমন এক হাস্যকর জন্তু যাকে ডেবিট ও ক্রেডিট
দুদিকেই বসানো যায়। লাভ লোকসানের বাইরেও জীবনকে নিয়ে যেতে পারে কয়জন ?
৭) মানুষের মনের মত লিখিত শব্দও বিভ্রান্তিকর।
তারা নানান কথা বলে।
৮) আসলে জীবনে ভুল - শুদ্ধ বলে কিছু নেই।জীবন জীবনই।
একটি স্টেডিয়াম।তার ভেতর নানারকম খেলা।জয় - পরাজয়।
গ্যালারিতে দর্শক।তারপর শূন্যতা।আর শুন্যেই পূর্ণতা।
৯) মানুষ প্রকৃতির সবচেয়ে হিংস্র প্রাণি ।
১০) লিখলেই লেখক হওয়া যায় না । যার লেখা পড়লে মননশীল পাঠকের মনে হবে তিনি লেখক, তিনিই প্রকৃত লেখক।
১১)ধ্বংস না করলে সৃষ্টির মাহাত্ম্য বোঝা যায় না। সৃষ্টির
মূল্য ধ্বংসে।
১২ ) নিজের ও চারপাশকে উপলব্ধির জন্য সাহিত্যচর্চার প্রয়োজন আছে।
১৩) সাহিত্য এমন এক প্রান্তর যাতে সকল বিষয়ের চাষ করা
যায় ।
১৪) মানুষের স্বার্থসিদ্ধির জন্য জরুরি সবার সমর্থন ও গ্রহণযোগ্যতা,আর গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে হলে প্রয়োজন তাদের ইচ্ছাকে কোন নৈতিক -দার্শনিক রুপ দেয়ার।
লেখক হল সেই হাতিয়ার যে চেতনে -অবচেতনে সেই তত্ত্বের
প্রচারক হিসেবে কাজ করে,জনতার মনোভূমিতে তত্ত্বের ইমারতের স্থপতি তিনি ।
১৫) সত্যিকার অর্থে দর্শন সবার ভেতরে থাকে।
কারোটা মস্তিস্কের,কারোটা হৃদয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত।
১৬) জীবনের পদে পদে কাঁচকলা,ফাঁকে ফাঁকে মাধুরীলতা।
১৭)লেখক মানেই যে বিরাট কিছু তা কিন্তু না । লেখক বিচারক
নন।
১৮) সবসময়েই মনে হয়েছে লিখতে গেলে নিজেকে ফিরে পাব
অন্য একটা স্টেজে নিজেকে দেখতে পাব,
একটা আচ্ছন্নবোধ আমাকে জড়িয়ে রাখবে ,
আমি সুখ পাব আমি দুঃখ পাব আমি শব্দের ভালবাসা পাব।
আমি আমি আমি এই আমি লিখে লিখে মারা যাব ।
যাবার আগে সাধ্যমত লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যাব ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ২:১২