আমার পুর্ববর্তী পোষ্ট “ধর্ম বিষয়ে জানতে চাই -১” এ আমি ইসলাম ধর্ম নিয়ে কয়েকটা প্রশ্ন করেছিলাম। কিন্তু কেউই আমাকে যৌক্তিকভাবে তার সদুত্তর দিতে পারেন নি। আমি আমার সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর যুক্তিসংগতভাবে আপনাদের সম্মুখে উপস্থাপন করছি। মেনে নেয়া বা না নেয়া সম্পূর্ন আপনাদের উপর নির্ভর করছে।
১. ইসলাম ধর্মের সব নবী-রাসূল এর জন্মস্থানই আরব ও তদসংলগ্ন এলাকায় কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে কোনো নবী-রাসূলেরই জন্ম হয়নি, কেনো?
--- ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কোরআন অনুসারে পৃধিবীতে বিভিন্ন সময়ে যে লক্ষাধিক নবীর উদ্ভব হয় তার মধ্যে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) ও হযরত আদম (আঃ) ছাড়া আর কারোই বিশ্ব ইতিহাসে অস্তিত্বই নেই। কোরআনে যে সমস্ত নবীদের উল্লেখ আছে তাদের সবারই জন্মস্থান আরব ও তদসংলগ্ন অঞ্চলে। এটা ঠিক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) খুবই বিচক্ষন, সুচতুর এবং জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি তার জ্ঞান ও বিচক্ষনতা দিয়ে তার আশেপাশের মানুষজনকে তার ধর্মে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। এবং তার নিজস্ব জ্ঞান দিয়েই কোরআন নামক ধর্মগ্রন্থের সূচনা ঘটান। যার ফলশ্রুতিতে, এই গ্রন্থের মাধ্যমে লক্ষাধিক নবীকে স্বীকৃতি এবং নিজেকে সবর্শ্রেষ্ঠ ও শেষ নবীতে ভূষিত করেন। আর কোরআনে উল্লেখিত নবীদের সবাইকেই তার নিজের জন্মস্থান আরবের বলে চালিয়ে দেন। কারন আরব অঞ্চলের বাইরেও যে বিশাল ভূ-খন্ড আছে (অবশ্য চীন ছাড়া) তা সম্পর্কে তিনি মোটেই অবহিত ছিলেন না। যার ফলশ্রুতিতে কোরআনে উল্লেখিত নবীদের উদ্ভব আরব এলাকা বলেই চালানো হয়।
২। ইসলাম ধর্মের সব ধর্মগ্রন্থই কেন আরবি ভাষায় হলো অন্য ভাষায় নয় কেনো?
--- কারন হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মাতৃভাষা আরবি ছিল এবং তিনি আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষা মোটেই জানতেন না।
৩। ইসলাম শান্তির কথা বলে অথচ এই ধর্মের সৃষ্টিলগ্ন থেকেই যুদ্ধ, হানাহানি বেশি হয়েছে, কিন্তু কেন?
--- যে কোন কিছুই প্রতিষ্ঠা করতে গেলেই জোর খাটাতে হয়। আর নতুন কোন মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে গেলেতো শক্তি প্রদর্শন ও জোর দুটোই চরমভাবে খাটাতে হয়। যার দরুন ইতিহাস ঘাটলেই আমরা দেখি- মোহাম্মদ (সাঃ) এর ইসলাম প্রচারের নামে তার অনুসারী ছাড়া বিরোধীদের প্রতি জেহাদ ঘোষনা করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে- বদর, ওহুদ, খায়বার সহ অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ নিহত হয়। যুদ্ধে আটককৃতদের দাস বানানো হয় এবং নিহতদের অর্থ সম্পদ, স্ত্রী-মেয়েদের গনীমত এর মাল হিসেবে তিনি তার অনুসারীদের মাঝে বন্টন করে দেন। সুতরাং ধর্মতো যুদ্ধ আর হানাহানি ঘটাবেই।
৪। ইসলাম ধর্মে বেহেশত এর নামে চিরন্তন সুখ-শান্তি-হুর-আরাম-আয়েশ-সুরা প্রভৃতির প্রলোভন দেখানো হয়েছে, কিন্তু কেন?
--- কারন বেহেশত এর প্রলোভন না দেখালে কেউই ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট হবেনা। তাই মানুষদের ধর্মে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে বেহেশত নামক চিরস্থায়ী সুখ ও বিনোদনের অলীক কল্পিত স্থানের অবতারনা ঘটানো হয়েছে। এবং বেহেশত কে হুর-গেলমান, সুরা, পানীয়, আরাম-আয়েশ এর অফুরন্ত ভান্ডার হিসেবে অলংকৃত করা হয়েছে।
৫। ইসলাম ধর্মের সূচনা হয় মাত্র ১৪০০ বছর আগে অথচ পৃথিবীতে মানব বিবর্তন হয় কয়েক লক্ষ বছর আগে তাহলে ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠার পূর্ববর্তী লোকদের পরকালে বিচার কিরূপে সাধিত হইবে?
--- ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কোরআন অনুসারে ইসলামের সূচনা ঘটে মাত্র ১৪০০ বছর আগে। অথচ এই ধর্মগ্রন্থ মতেই পৃথিবীর উষালগ্ন থেকেই নবী প্রেরিত হয়েছে। তাই যদি হয় তাহলে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কিভাবে হলেন হলেন? তার আগে প্রেরিত নবীরা মানুষকে কোন ধর্মের দাওয়াত দিতেন? তাহলে ১৪০০ বছর আগের লোকদের বিচারও বা কিরুপে সাধিত হবে?
৬। ধর্ম শুধুমাত্রই অন্ধবিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল যার কোন সুদৃঢ় ভিত্তি নাই কিন্তু কেন?
--- ধর্ম হচ্ছে একপ্রকার দর্শন। যুগে যুগে বিভিন্ন মনীষী বিভিন্ন ধর্মের অবতারনা ঘটান। তারা তাদের সৃষ্ট ধর্মকে মানুষের মাঝে প্রসার ঘটানোর জন্য বিভিন্ন কল্পিত কাহিনী, মিথ প্রভৃতির আশ্রয় নিয়ে তাদের প্রবর্তিত ধর্মকে আকর্ষনীয় করার প্রচেষ্টা করেন। যার দরুন ধর্মের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিই দেখা যায়না। এগুলো শুধুইমাত্র চোখ-কান বন্ধ রেখে শুধুমাত্র অন্ধদের মত বিশ্বাস করেই যেতে হয় যুগ-যুগান্তর।
====================
যারা যারা লেখাটির মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পেয়েছেন আমি তাদের কাছে করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ইসলাম মানুষকে ক্ষমার শিক্ষা দেয়। সুতরাং ক্ষমা করে দেয়াই শ্রেয়, নয় কি?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০০৭ রাত ১১:২৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



