somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি (অপ) মানপত্র(১৮+)

২৩ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটি একটি যৌথ ব্লগ। আমার সহ ব্লগার এবং সহপাঠী অদ্রোহের সাথে ব্রেনস্টর্মিংয়ের ফসল, ২০০৪ ব্যাচের সিনিয়র ভাইদের বিদায় উপলক্ষ্যে পেশ করা একটি অপূর্ব শোক(!)গাঁথা। আজ আমাদের ফ্লোর বিদায় উপলক্ষ্যে এই ঐতিহাসিক মানপত্রটি পাঠ করে অদ্রোহ। ব্যাপক প্রশংসিত এই মানপ্ত্রটির রস আস্বাদনে কেউ ব্যর্থ হলে তার জন্য কোনভাবেই লেখকেরা দায়ী নয় ;)








’০৪ ব্যাচের বিদায়লগ্নে একটি (অপ)মানপত্র

হে বিদায়ী ভাইয়েরা,


আজকের এ দিনে মনে পড়ছে কেবল তোমাদেরই সাথে কাটানো সেসব স্মৃতির কথা। তোমাদের পদচারণায় চার চারটি বসন্ত মুখরিত ছিল আমাদের প্রাণপ্রিয় আহসানউল্লাহ হলের দোতলা। এই চারটি বছরে যতবার শৌচাগারে তোমাদের পদচিহ্ন পড়েছে ততবারই দূর থেকে টের পাওয়া গেছে সেখানে তোমাদের মূল্যবান উপস্থিতি। সেখানে গিয়ে পেয়েছি তোমাদের ফেলে যাওয়া মূল্যবান নিদর্শন। তখন মনে মনে তোমাদের উদ্দেশ্যে বর্ষণ করেছি কত না কটুবাক্য। কিন্তু আজ হায়, বিদায়ের এ অন্তিমক্ষণে তোমাদের কথা মনে পড়বার সাথে সাথে মনে পড়ছে তোমাদের ফেলে যাওয়া
পুঁতিগন্ধময় সেসকল স্মৃতির কথাও যা বহুদিন ধেও আমাদের ঘ্রাণশক্তিকে আলোড়িত করে গেছে।


হে আঁতেল সম্রাটেরা,


কি নিদারুণ যন্ত্রণাতেই না পার করেছ তোমরা চার চারটি বছর! চোথার অভিশাপ ছিনিয়ে নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় তোমাদের জীবনের সকল রসকষ। আমরা যখন মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়ে বেড়াতাম তখন তোমাদেরকে দেখাযেত পাঠাগারের এক কোণায় পর্বতপ্রমাণ বইয়ের আড়ালে মুখ গুঁজে বসে আছো। কিন্তু হায়! ভাগ্যেও কি নির্মম পরিহাস! প্রকৌশলী হওয়ার যে স্বপ্ন নিয়ে বুয়েটে পা রেখেছিলে - আজ সে স্বপ্নে জল ঢেলে তোমরা হতে চলেছ সামান্য বেতনের মাস্টার মাত্র। তোমাদের এ দুঃখের দিনে আজ আমরাও আন্তরিকভাবে দুঃখিত।


হে প্রেমিক পুরুষেরা,


মোবাইল কোম্পানিগুলো যদি ঘুণাক্ষরেও জানতে পারতো তোমাদের কথা তাহলে তোমাদের হয়তো আজীবন সম্মনননা পদকে ভূষিত করতো। কারণ মোবাইল নামক তুচ্ছ এ যন্ত্রটির পেছনে তোমরাা যে অতুলনীয় শ্রম, অমূল্য সময় আর অপরিমেয় অর্থ ব্যয় করেছ তা অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে। সকালে-বিকালে, ক্ষণিকের অবসরে তোমাদের পাওয়া যেত আউলার করিডোরে। কতই না বিনিদ্র রজনী তোমরা পার করেছ ****(একটি স্বনামধন্য মহিলা কলেজের নাম) কুখ্যাত ললনাদের সাথে খোশগল্পে। তোমাদের এই বাকযুদ্ধের স্পৃহাকে স্যালুট জানাই, এবং আশা করি আমরাও হতে পারব একসময় এ যুদ্ধের সফল সৈনিক।


ওহে নারীরূপী পুরুষেরা,


সারাটা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন জুড়ে তোমাদেও গায়ে সেঁটে ছিল ”হাফ লেডিস” তকমা। কি নারী পুরুষ সকলেই তোমাদেও হেয় প্রতিপন্ন করবার জন্য সবসময় ছিল তৎপর। পুরুষত্ব নামক বস্তুটি ছিল তোমাদের জন্য সোনার হরিণ। কিন্তু জ্ঞানীরা বলেছেন "নো বডি ইজ পার্ফেক্ট” - এ মহাসত্য মেনে নিয়ে তোমাদেও আজ বরণ করে নিলাম।


ওহে লম্পটেরা,


স্বরস্বতী পুজার দিন দেখা যেত তোমাদের আসল রুদ্ররূপ। শাড়ী পড়া বঙ্গললনাদের দেহবল্লরীর প্রতিটি খাঁজে খাঁজে বাঁকে বাঁকে অবাধে বিচরণ করতো তোমাদের তৃষ্ণার্ত দুটি চোখ। তাদেও দেখে তোমাদের মুখ হতে অবাধে লালা ঝরতো কিনা জানি না, জানি না তাদের দেখার পর তোমরা গোসলখানায় ছুটে গিয়ে "সেল্ফ হেল্প ইজ বেস্ট হেল্প” মটোটির যথার্থ প্রয়োগ করতে কিনা। আজ বিদায়বেলায় হয়তো তোমরা নিসঙ্গ, কিন্তু চিরকাল মনে রেখ - থাকিতে আপন হস্ত হব কেন নারীর দ্বারস্থ।


হে বিদায়ী কুয়োর ব্যাঙেরা,


নাওয়া নেই খাওয়া নেই - তোমরা পড়ে থাকতে তোমাদের মান্ধাতা আমলের পিসির সামনে। পড়াশোনা, খেলাধুলা, খাওয়াদাওয়া পারলে প্রকৃতির ডাকেও সাড়া দিতে তোমরা ঐ সংকীর্ণ গৃহকোণে বসে। জানি না হয়তো প্রাপ্তবয়স্ক ছবির কল্যাণেই তোমাদের রুম থেকে ভেসে আসতো যন্ত্রণাকাতর শীৎকার। তোমাদের এ নির্লজ্জ বেহায়াপনায় বিস্মিত হতাম আমরা সকলেই, এই বিদায়বেলায় তোমাদের কাছে একটাই দাবী - তোমাদের এই চার বছরের সঞ্চিত ৫০০ গিগার ভান্ডার আমাদের মুক্ত হস্তে দান করে যাও।


আজ এই বিদায়বেলায় তোমাদের সকল নচ্ছারপণা, কৃপণতা, বাতুলতা, লাম্পট্য আর বেহায়াপনার পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি পাও এই আশায় বুক বেঁধে আউলার পবিত্রভূমি থেকে উৎখাত করছি আমরা একদল অপোগন্ড।

আউলার দোতলার অভাগা অনুজেরা

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৭
৯৬টি মন্তব্য ৭৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×