somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাবানা এখন ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসারী

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢালিউডের বিউটি কুইনখ্যাত জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা এখন ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসারী। বড় পর্দার শাবানার সাথে বাস্তবের শাবানার এখন কোনো মিল নেই। ফুলহাতা কামিজ ও হিজাব সেই শাবানাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছে। এখন তার দেখা পাওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে তো বটেই, কোনো সাংবাদিকের পক্ষেও প্রায় অসম্ভব। স্বামী ওয়াহিদ সাদিক, দুই মেয়ে সুমী ও উর্মি এবং একমাত্র পুত্র নাহিনকে নিয়ে তিনি এখন বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে। গুণী এই অভিনেত্রী এখন অনেকটাই লোকচুক্ষুর আড়ালে। এখন তিনি আত্মীয়স্বজন ছাড়া কারো সাথে দেখা দেন না, কথাও বলেন না।
কোটি দর্শকের স্বপ্নের নায়িকা হিজাবপরা শাবানাকে এখন দেশে-বিদেশে দেখলে তার পরিচিতরা অবাক হন। একজন শীর্ষস্থানীয় নায়িকা হঠাৎ পর্দার অন্তরালে নিজেকে এভাবে লুকিয়ে রাখবেন এটা তারা ভাবতেও পারেন না।
শাবানা তার ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছেন, হজ করার পর তিনি আর ছবি না করে পর্দা করার সিদ্ধান্ত নেন। তাছাড়া এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে সাধারণ জীবন-যাপন তার খুব ভালো লাগছে। এই দূর প্রবাসে সংসার, সন্তান, নাতি-নাতনি নিয়েই একান্ত সময় কেটে যায় শাবানার। তিনি এখন প্রবাসে একটা বুটিক হাউস দেয়ার চিন্তা করছেন।
শাবানার আসল নাম রত্না। মাত্র ৯ বছর বয়সে ১৯৬২ সালে ‘নতুন সুর’ ছবিতে ছোট্ট মেয়ের চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে শাবানার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। তার পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে। তার বাবা ফয়েজ চৌধুরী একসময় চিত্র পরিচালক ছিলেন। এরও আগে তার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় মেয়েকে ফিল্মে দিয়ে এবং নিজে চলচ্চিত্রে জড়িয়ে ভাগ্য গড়ার চেষ্টা চালাতে থাকেন। একদিন তার সে আশা পূরণ হয়েছিল। শাবানা তখন রত্না নামে ‘নতুন সুর’ ছবিতে অভিনয়ের পরে তালাশ, সাগর, ভাইয়াসহ আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করলেন।
১৯৬৬ সাল থেকে তার উত্থান ঘটতে শুরু হয়। সে বছরই ‘আবার বনবাসে রূপবান’-এ সুলতানা জামানের কন্যা সোনাভানের চরিত্রে অভিনয় করে নায়িকা হিসেবে রত্না প্রথম দর্শকের মন কাড়লেন। এরপর ‘জংলি মেয়ে’ এবং ‘চকোরি’ ছবি দুটিতে প্রধান নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করার পর শাবানাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি।
শাবানা তার অভিনয়ের প্রথম দিককার সম্পর্কে একবার বলেছিলেন, ১৯৬৭ সালে ‘চকোরি’ রিলিজের পর থেকে আমার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল ঢাকার বাইরে লাহোর ও করাচিতে। ১৯৬৮ সালে নায়িকা হিসেচে চাঁদ আওর চাঁদনি, ভাগ্যচক্র এবং কুলিতে; ১৯৬৯ সালে-দাগ, মুক্তি; ১৯৭০ সালে ‘পায়েল, সমাপ্তি, ছদ্মবেশী, বাবুল, মধু মিলন ও একই অঙ্গে এত রূপ’-এ অভিনয় করলাম। রাজ্জাক-সুচন্দা জুটির অসম্ভব জনপ্রিয়তার সময় কাজী জহিরের ‘মধুমিলন’-এ অভিনয় দেখে দর্শক প্রশংসা শুরু করল আমাকে নিয়ে। দ্বৈত অনুরাগের সংঘাত ও পরিণতির ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এ ছবি দর্শকের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। আমার তো মনে হয়, ‘মধু মিলন’ ছবিতে সম্ভবত প্রথম হৃদয়স্পর্শী অভিনয় দেখাতে সক্ষম হয়েছিলাম।
স্বাধীনতার পর আবার ছবি নির্মাণ শুরু। শাবানা আগের জনপ্রিয়তা নিয়ে ১৯৭২ সালেই ৮টি ছবির নায়িকা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি ‘ওরা এগারো জন’ আর কাজী জহিরের ‘অবুঝ মন’ করে সারা বাংলাদেশে জানান দিলেন ঢাকার ফিল্মে শাবানার তুলনা হয় না। অন্যান্য ছবি যেমন- সমাধান, ছন্দ হারিয়ে গেল, এরাও মানুষ, মুন্না আওর বিজলি, চৌধুরী বাড়ি আর স্বীকৃতিও সফল হয়েছিল।
শাবানা মোট ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি প্রথম এই পুরস্কার পান ‘জননী’ সিনেমার জন্য। এরপর ১৯৮০, ১৯৮২, ১৯৮৩, ১৯৮৪, ১৯৮৭, ১৯৯০, ১৯৯১, ১৯৯৩ এবং ১৯৯৪ সালেও তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। তার অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে আছে ১৯৯১ সালে প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, ১৯৮২ ও ১৯৮৭ সালে বাচসাস পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে নাট্যসভা পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে কামরুল হাসান পুরস্কার, ১৯৮২ সালে নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে ললিতকলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সায়েন্স ক্লাব পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে কথক একাডেমী পুরস্কার এবং জাতীয় যুব সংগঠন পুরস্কার।
শাবানা ১৯৭৩ সালে ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন। তখন সাদিক ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। শাবানার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এস এস প্রোডাকশনের দেখাশোনার ভার তার স্বামীর ওপর পড়ে। ১৯৯৭ সালে শাবানা দীর্ঘ ৩৪ বছর কাজ শেষে হঠাৎ চলচ্চিত্র-অঙ্গন থেকে বিদায় নেয়ার ঘোষণা দেন। এরপর তিনি আর নতুন কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি। ২০০০ সালে তিনি সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
১৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×