১৯৫৭ সালের ৪ঠা অক্টোবর মহাকাশে পাঠানো হয় মানুষের তৈরি প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘স্পুটনিক ১’। এটা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে একটি অনন্য ঘটনা, যা নাড়া দিয়েছিল সমস্ত বিশ্ববাসীকে। কিন্তু ওয়েষ্ট ভার্জিনিয়ার কয়লা উৎপাদন নির্ভর কোলউড গ্রামের একজন কিশোর হোমার হিকাম’কে এই ঘটনাটি প্রভাবিত করেছিল একটু অন্যভাবে। যার ফলাফল হিসেবে পরবর্তীকালে সে হয়ে উঠতে পেরেছিল নাসা’র একজন ইঞ্জিনিয়ার। এই সত্য ঘটনাটি নিয়েই নির্মিত হয়েছে ‘অক্টোবর স্কাই’ মুভিটি।
রেডিওতে যখন বলা হল, যে সূর্যাস্তের এক ঘন্টা পরে আর সূর্যোদয়ের এক ঘন্টা আগে খালি চোখেই স্পুটনিক দেখা যাবে, হোমার হিকামও আর সবার মত আগ্রহ নিয়ে সেটা দেখল। এবং সেটাই বদলে দিল তার জীবন। সে ঠিক করল যে সে রকেট বানাবে, যেটার শুরু সে করল তার বাড়ির কাঠের বেড়া উড়িয়ে দিয়ে। সে তার তিন বন্ধুকে নিয়ে একটি দল গঠন করল এবং চালাতে লাগল নানারকম পরীক্ষা।
তাদের সবার স্বপ্ন হয়ে দাঁড়াল বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহন করার কিন্তু পদে পদে ছিল প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু তার মার গভীর বিশ্বাস ছিল তার প্রতি। শত প্রতিবন্ধকতা পাড়ি দিয়ে সফল হওয়ার এক লড়াকু কাহিনী বর্ণিত হয়েছে এই মুভিটির প্রতিটি মূহুর্তে। এছাড়া তার বাবার সাথে তার সম্পর্কের রসায়নটাও হৃদয়ে নাড়া দেবার মত, কারণ তার বাবার ইচ্ছা ছিল যে তার ছেলে তার মতই কয়লা খনিতে কাজ করবে যেটা এই এলাকার ঐতিহ্যবাহী কাজ। আর এই গ্রাম থেকে বিজ্ঞানী হবার স্বপ্ন দেখাকে তার অর্থহীন বলে মনে হয়। এদিকে ছেলেও নাছোড়বান্দা রকেটের ব্যাপারে, ঐ ব্যাপারেই তার যত উৎসাহ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বাবার ভালবাসারই জয় হয় ছেলেকে তার খারাপ সময়ে সাহায্য করার মধ্য দিয়ে।
এই মুভিটির সাথে স্টিভ জবস্ এর একটি কথা মিলে যায়- ‘তোমাকে খুঁজে বের করতে হবে যে তুমি কি করতে ভালবাস। যদি তুমি এখনও খুঁজে না পাও, তাহলে খুঁজতে থাক। এখনই কোন সিদ্ধান্ত নিও না’।
মুভিটি রিলিজ হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। পরিচালনা করেছেন জো জন্সটন। অভিনয়ে জেইক গিলেনহাল(ব্রোকব্যাক মাউন্টেন, প্রিন্স অফ পার্সিয়া), ক্রিস কুপার এবং লরা ডার্ন। এটা ছিল জেইক গিলেনহালের প্রথম লিড রোল।
এই মুভিটির কাহিনী নেওয়া হয়েছে হোমার হিকাম-এর অটোবায়োগ্রাফী নভেল ‘রকেট বয়েজঃ একটি স্মৃতিকথা’ বইটি থেকে।
যারা মুভি দেখার নাম শুনলেই বিরক্ত হন, আমার বিশ্বাস তারাও এই মুভিটি দেখে মুগ্ধ হতে বাধ্য হবেন। টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করতে চাইলে তা করতে পারবেন এখান থেকে ।
একটি ‘বিপ্লবী স্বপ্ন’ এবং ‘পূর্ব-পশ্চিম’ যৌথ প্রয়াস
৩০শে নভেম্বর, ২০১০, ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





