somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেলুলয়েডে সত্য ঘটনা(পর্ব ২) – মুভি রিভিউঃ ইনভিক্টাস(২০০৯)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইংরেজ কবি উইলিয়াম আর্নেষ্ট হেনলে, মাত্র ১২ বছর বয়সে আক্রান্ত হলেন দূরারোগ্য হাড়ের ব্যাধিতে। ২৫ বছর বয়সে কেটে ফেলতে হল তার একটি পা। ১৮৭৫ সালে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি লিখলেন একটি নামহীন কবিতা, যেটা পরবর্তীতে পরিচিত হয় ‘ইনভিক্টাস’(ল্যাটিন অর্থ ‘অজেয়’) নামে।

প্রায় এক শতক পরে এই কবিতাটিই দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার বন্দী জীবনে শক্তি সঞ্চারে রাখে মুখ্য ভূমিকা। তার মনকে সান্ত্বনা দেয় যখন তিনি দূর্বল হয়ে পড়তেন।

নেলসন ম্যান্ডেলার উপর এই কবিতাটির প্রভাব মূর্ত হয়ে ফুটে উঠেছে ‘ইনভিক্টাস’ মুভিটিতে। মুভিটির ঘটনা বিস্তৃত হয়েছে ১৯৯৫ সালে রাগবি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ মানের দলটিকে শুধুমাত্র উৎসাহ যুগিয়ে কিভাবে ম্যান্ডেলা চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন এবং সাদা-কালো চামড়ার মানুষদের মধ্যে এটা কিভাবে পার্থক্য ঘুচিয়ে দিয়েছিল সেটা নিয়ে। এটি রিলিজ হয়েছে ২০০৯ সালে, ডিরেক্টর হলিউডের ওয়েষ্টার্ন কিংবদন্তী ক্লিন্ট ইস্টউড।

১৯৯৪ সালে ম্যান্ডেলা যখন প্রেসিডেন্ট হলেন তখন শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ বিরোধ তুঙ্গে। কৃষ্ণাঙ্গরা চেষ্টা করতে লাগল সব বিষয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে। দেশের রাগবি টিমের নাম ছিল ‘স্প্রিংবক্স’। কৃষ্ণাঙ্গরা ভাবত যে সেটা শ্বেতাঙ্গদের দল। তাই তারা তাদের প্রতিযোগীদের সাপোর্ট করত। এখন তারা চেষ্টা করল সেটার নাম পরিবর্তন করে ‘প্রোটিয়াস’ রাখার জন্য। কিন্তু ম্যান্ডেলা বললেন যে এটা প্রতিশোধ নেবার সময় নয়, এখন সময় দেশ গড়বার, দলের নাম ‘স্প্রিংবক্স’ই থাকবে।

ফ্রাঙ্কস পিনার ছিলেন রাগবী দলের ক্যাপ্টেন। ম্যান্ডেলা তাকে ডেকে এনে নানান কথা আলোচনা করলেন। সরাসরি না বললেও বুঝিয়ে দিলেন যে তিনি চান তারা বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হোক, সাথে দিলেন উৎসাহ। তাকে বললেন যে, দেশটাকে গড়তে হলে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ এক্সপেক্টটেশনকে অতিক্রম করে যেতে হবে।

এভাবেই ঘটনা আগায়। আর ম্যান্ডেলার ধারণা সত্যি প্রমান করে এই ‘স্প্রিংবক্স’কেই শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ সবাই সাপোর্ট করতে থাকে। একটি সামান্য খেলাকে কেন্দ্র করে নেলসন ম্যান্ডেলা কিভাবে শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যেকার এতকালের বিরোধ মিটাতে সক্ষম হয়েছিলেন তা সত্যিই অবাক করা।

মুভিটির কাহিনী নেওয়া হয়েছে জন কার্লিনের লেখা বই ‘ফাইটিং দ্যা এনিমিঃ নেলসন ম্যান্ডেলা এন্ড দ্যা গেম দ্যাট চেঞ্জড্‌ এ নেশন’ থেকে। অভিনয়ে মরগ্যান ফ্রিম্যান এবং ম্যাট ডেমন। মরগ্যান ফ্রিম্যান ছাড়া এই চরিত্র করার আর কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না। নেলসন ম্যান্ডেলার চরিত্রটি তিনি দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

আশা করি মুভিটি সবার ভাল লাগবে। টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করতে চাইলে তা করতে পারবেন এখান থেকে

যে কবিতাটির কথা মুভিটিতে বলা হয়েছে সেটা এতই ইন্সপায়ারিং যে এখানে না দিয়ে পারছি না। আশা করি আপনারা বিরক্ত হবেন না।

Invictus
By William Ernest Henley

------------------------------------------
Out of the night that covers me,
Black as the pit from pole to pole,
I thank whatever gods may be
For my unconquerable soul.

In the fell clutch of circumstance
I have not winced nor cried aloud.
Under the bludgeonings of chance(fate)
My head is bloody, but unbowed.

Beyond this place of wrath and tears
Looms but the Horror of the shade,
And yet the menace of the years
Finds and shall find me unafraid.

It matters not how strait the gate,
How charged with punishments the scroll,
I am the master of my fate:
I am the captain of my soul.

বিঃদ্রঃ মুভিটিতে chance এর স্থানে fate বলা হয়েছে।


একটি ‘বিপ্লবী স্বপ্ন’ এবং ‘পূর্ব-পশ্চিম’ যৌথ প্রয়াস


৩রা ডিসেম্বর, ২০১০, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৪৭
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×