somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

”For years you live in my heart with deep respect”

২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জুবায়ের সালেহীন। অসম্ভব মেধাবী একজন ছাত্রের নাম। শুধু মেধাবী নয়, তার সমগ্র অবয়ব জুড়ে আছে বিনয়। চোখ দুটি শ্রদ্ধা আর জ্ঞানের গভীরতায় ভরা। আমার কলেজের প্রিন্সিপাল স্যার শ্রদ্ধেয় আনসার স্যার ওর বাবা আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আম্বিয়া আপা ওর মা।ও আমার একেবারে প্রখম জীবনের ছাত্র। এককথায় ছাত্রজীবনের ছাত্র।

আমি এসএসসি দেবার সাথে সাথে আমার বাবা মারা যান। ঐ সময় আমাদের ঘরে ৫ কেজি রেশনের চাল আর ১৫০ টাকা ক্যাশ ছিল। আমার মাথায় তখন একেবারে গৃহিণী ঘরবোলা মা আর বোনের দায়িত্ব এসে পড়লো্. সংগে নিজের বেঁচে থাকার ভারও বইতে হবে। এই নিদারুন দুর্যোগের দিনে যে কয়টি পরিবার আমার প্রতি তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তার মধ্যে আমার এই স্যারের পরিবারও অন্যতম।

এসএসসির রেজাল্টের আগেই অর্থাত বাবার পারলৌকিক কাজ হয়ে যাবার পরই শুরু হলো আমার সংগ্রামের জীবন। যা শুরু হলো প্রাইভেট টিউশন দিয়ে।আমার টিউশন জীবনের দ্বিতীয় বাড়ী হলো আনসার স্যার আর আম্বিয়া আপার বাড়ী।আর ছাত্র হলো অন্যান্য ভাই বোনের সাথে জুবায়ের।

আমি প্রতিদিন সকাল বেলায় জুবায়েরকে পড়াতে যেতাম। এখানে পিতা হিসাবে আমি স্যারকে যেমন দেখিছি তার একটি প্রসংগ না বললেই নয়। জুবায়ের রা ছিল আট ভাই বোন।স্যার আর আপাকে দেখতাম কি সুন্দরভাবে আট ছেলেমেয়েকে হ্যান্ডেল করতে। কখনও রাগ করে উচ্চ:স্বরে ছেলেমেয়েদের সংগে কথা বলতে দেখেনি। কি অপরিসীশ ধৈর্য নিয়ে তাদের সংগে বন্ধুসুলভ আচরণ করতেন। কি রসবোধ ছিল তাদের সংগে কথোপকথনে। আর আজকে একটি সন্তানকে নিয়ে অভিযোগ আর অভিলাসের শেষ নেই। উল্লেখ্য এরা সকলেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্টিত হয়েছে।

যাক যে জন্য এত কথা তা হলো জুবায়ের। আমার ছাত্র। আমি ওদের বাড়ীতে ঘন্টা দুয়েক সময় দিতাম। জুবায়ের আমার কাছে কোন দিন আধ ঘন্টার বেশী পড়েনি। কারণ তার গনিত ছিল মুখস্ত। অংক দেখেই তার উত্তর বলে দিত। আমি যাবার আধ ঘন্টা পরে সে পড়তে আসতো। তার পরে আধ ঘন্টা গল্প হতো। আধ ঘন্টা পড়া আবার আধ ঘন্টা দুষ্টমী্।
এই সময়ে আমার হাত খানি নিয়ে বসে বসে লিখতো গানের কলি,” আমি কি তোর আপন ছিলাম না রে জড়িনা, আমি কি তোর আপন ছিলাম না”।

এই জুবায়ের এসএসসি প্রথম বিভাগে পাশ করলো। সে বারেই প্রথম কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ তার যাত্রা শুরু করলো। জুবায়ের সেই এসএসসি পাশ করা ছেলেটি সমস্ত ফরমালিটিস একা করে কুমিল্রা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হলো। আর পিছনে তাকাতে হয় নি তাকে। পরে কমিশন রযং্ কে আরমিতে। আজ বড় অফিসার জুবায়ের্।

মাঝে একবার ওর বিয়েতে সেনাকুজ্ঞে গিয়েছিলাম। আর যোগাযোগ নেই। বহুদিন পর ফেসবুকের ইনবক্সে ওর মেসেজ।আনন্দে মনটা আর বুকটা ভরে গেল। কথা হলো অনেক্।জুবায়ের এখন ফ্যামিলি সহ ওয়াশিংটন ডিসি তে এক বছরের ট্রেনিং প্রোগ্রামে আছে।ও লিখলো, ”For years you live in my heart with deep respect” আমিও ভুলিনি তাকে। কেননা এখনও সে মুরুব্বীদেরকে দেখলে দূর হতে বাই সাইকেল থেকে নেমে হেঁটে এসে সালাম দেয়।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৬
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×