somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাকিস্তানের সাথে আরও কয়েকটা খেলা আমাদের মাটিতে হওয়া উচিৎ

০৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রায় দেড়শো বছর আগে, কোকাকোলার জন্ম নাকি হয়েছিল এনার্জি ড্রিংক হিসেবে। কার কি অবস্থা, জানিনা, তবে কোক খেলে আসলেই আমার শরীর চাঙ্গা হয়ে যায়। আমি না পারতে রাতে কোক খাইনা। সারারাত ঘুম আসে না। রাতে ঠিক মত ঘুম না হলে সারাদিন ঝিমাতে থাকি। কাম-কাজ সব মাথায় উঠে।
কালকে ভাই/বন্ধু তারেকের জন্মদিন ছিল। আমরা আমাদের ঐতিহ্যমত সব বন্ধুরা মিলে তাকে 'সারপ্রাইজ' দিতে গভীর রাতে হাজির হলাম। পেটে ছিল চরম ক্ষিধা। তারেকের বউ স্বর্ণা খাবার বানিয়েই রেখেছিল। খিচুরী দিয়ে চিলি চিকেন আর ডিমের তরকারী শেষে না চাইতেও একগ্লাস কোক খেয়ে ফেললাম।
আর যায় কই! সারারাত শুধু চোখটাই বন্ধ করে থাকা গেছে, ঘুম আসেনি। বরাবরের মত নিজেকে কষতে লাগলাম, "আর জীবনেও রাতে কোক খাবি?"
পাকিস্তান-বাংলাদেশের খেলা দেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ভাবলাম, বরাবরের মতই সকালে উঠে সেকেন্ড ইনিংস দেখে নিব। আসল খেলাতো তখনই জমে।
ঘুম আসছিল না বলে মাঝে দেখে নিয়েছিলাম মুশফিক টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছে। বাংলাদেশ দলে পাঁচটি পরিবর্তন হয়েছে। সাকিব ফিরে এসেছে।
ঘুমাবার আগে স্ট্যাটাসে লিখেছিলাম বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে বাংলাদেশ জিততেও পারে। কয়েকজন দেশভক্ত যুবসমাজের প্রতিনিধি আমার সে লেখায় লাইক দিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ফর্মের অবস্থা দেখে কয়জন সত্যিকারের আশা করেছিলেন?
আমি কেন জানি আশা করেছিলাম। আমরা যেবার তাদের হারিয়েছিলাম, সেবার তাদের ছিল ওয়াসিম, ওয়াকার, শোয়েব, সাকলাইন, সাঈদ, ইজাজ, সেলিম মালিক, ইনজামাম, আফ্রিদি, মইন খান! আমাদের কারা ছিল? কেউ না। এবারে অন্তত আমাদের সাকিব, মুশফিক, রাজ্জাক, মমিনুলরা আছে। যদি সেই লেজেন্ডারি পাকিস্তানি দলকে সেই পুঁচকে ব্যাঘ্র শাবকেরা দাপটের সাথে হারিয়ে দিতে পারে, তবে এখন এই সাধারণ পাকিস্তানি দলকে কেন হারানো সম্ভব না?
খেলা শুরু হলো। বাংলাদেশের ইমরুল কায়েস প্রথমেই জীবন পেলেন। গত ম্যাচে আমাদের "মিস্টার ডিপেন্ডেবল" চারটা লাইফ পাবার পরেও যেভাবে নিজের উপাধির প্রতি বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আউট হয়েছিলেন, সেখানে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের ক্যাচ ড্রপে খুব বেশি একটা স্বস্তি আসেনা। চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকার চেষ্টা করলাম। ঘুমাতে হবে। নাহলে কালকে অফিসে বারোটা বাজবে। কালকেই বিল ক্লোজিংয়ের ডেডলাইন। ঠান্ডা মাথায় টানা কাজ করে যেতে হবে।
ঘুম ভাঙ্গলো (শেষ রাতের দিকে ঘুম এসেছিল) ভোর সাড়ে ছয়টায়। উঠেই স্কোর দেখতে ক্রিকইনফো ওয়েবসাইটে গেলাম। স্কোর দেখে চোখ কপাল ছাড়িয়ে আরেকটুর জন্য ছাদে গিয়ে ঠেকত। তিনশো ছাব্বিশ তাও মাত্র তিন উইকেটে! তাও আবার পাকিস্তানের বোলিংয়ের বিপক্ষে! যারা কিনা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বোলিং পরাশক্তি বলে দাবী করে! বাংলাদেশই খেলছেতো? নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি? এখনও ঘুম ভাঙ্গেনি?
স্কোর কার্ড খুলে দেখি অবস্থা আরও ফাটাফাটি! আনামুল একশো, ইমরুল ফিফটি, মুশফিক ফিফটি, সাকিব প্রায় ফিফটি! সবচেয়ে বেশি চোখ কেড়েছে সাকিবের ইনিংসে যখন দেখলাম মাত্র ষোল বলে সে চুয়াল্লিশ করেছে! সাবাস ব্যাটা! একেই বলে প্রত্যাবর্তন!
পাকিস্তানের 'বিখ্যাত' ব্যাটিং লাইনআপের চেজিংয়ের 'সুখ্যাতির' জন্য প্রায় ধরেই নিচ্ছিলাম ম্যাচ অর্ধেক জিতে গেছি। তারপরেও একটা চিন্তা মাথায় এসেছিল, যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পাকিস্তানি বোলারদের পিটিয়ে তিনশো ছাব্বিশ করতে পারে, পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশী বোলারদের পিটিয়ে তার চেয়ে বেশি করতে পারবেনাতো? গত টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই এমনভাবে বড় স্কোর করার পরেও আমাদের হারতে হয়েছিল কিনা!
পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে নামলো। অতি সাবধান হতে গিয়ে তিনটা উইকেট হারালো। এইদিকে রানের চাকাও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছিল জিততে আমাদের খুব বেশি বাকি নেই!
একটাই ভয় ছিল, আফ্রিদি। যাকে দলে রাখা অনেকটা লটারির টিকিটে ইনভেস্ট করার মত ব্যাপার। যদি তার ব্যাটে বল লাগে, তাহলে জ্যাকপট! দশ টাকার লটারিই কোটিপতি বানিয়ে দেয়! আর নাহলে "আবার সুযোগ নিন।"
আফ্রিদি আগের ম্যাচেই ইন্ডিয়ার সাথে ভাল খেলে ফেলেছে। টানা দুই ম্যাচে আফ্রিদি দুর্দান্ত ব্যাট করেছে, এমন ঘটনা খুব একটা ঘটে না।
আমাদের ভাগ্য খারাপ, ব্যতিক্রম ঘটলো। আফ্রিদির ব্যাট আজকেই সবচেয়ে বেশি চওড়া হলো! মিসবাহর লটারি "লাইগা গ্যাল!"
কেউই হারার জন্য খেলতে নামেনা। দেশের কোন বোলারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তাঁরা তাঁদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন। নিজের দিনে আফ্রিদি মুরালি, স্টেইন, ম্যাকগ্রাকে পর্যন্ত পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে দেয়, আজকেও তার দিন ছিল। আমরা আবারও পাকিস্তানের সাথে জিতি জিতি করেও হেরে গেলাম। প্রায় পনের বছর হয়ে গেল, ওদের আমরা হারাতেই পারছি না! পাকিস্তানের সাথে আরও কয়েকটা খেলা আমাদের মাটিতে হওয়া উচিৎ। ইনশা আল্লাহ, আমরা জিতবই। পনের বছরের ক্ষরা দ্রুত কাটানো উচিৎ।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×