বেহেস্তের বর্ণনা করতে গেলে শুধু হুরের বর্ণনা করা হয়। সত্তুরজন করে পরমা রূপসী, অনন্ত যৌবনা নারী, যাদের রূপের বর্ণনা করা মর্ত্যের মানুষের পক্ষ্যে সম্ভব নয়!
এতে ছেলেরা খুশি হয়ে গেলেও মেয়েরা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করেন, "আমাদের কী হবে?"
হুজুররা বেশ কনফিডেন্সের সাথে বলেন, "তোমরা তোমাদের স্বামীদের পাবে।"
মহিলারা তখন দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবেন, "ওখানেও গ্যান্দার বাপ?"
আসলেই কী তাই? মেয়েরা কী শুধুই তাঁদের স্বামীদের পাবেন? আর কিছু নয়? আল্লাহ এমন করলেন কেন? ফেয়ার না!
কথা এগুবার আগে একটা তথ্য দেই। নিজেই উত্তর পেয়ে যাবেন।
এই ব্যপারে সবাই একমত হবেন যে দশ বছরের শিশু থেকে শুরু করে একশ বছরের বৃদ্ধ, যেকোন বয়সী পুরুষকে যদি প্রশ্ন করা হয় "স্বর্গে কোন জিনিষটা ছাড়া তোমার একেবারেই চলবে না?"
সে নির্ঘাত জবাব দিবে, "সুন্দরী রমনী!"
কেউ কেউ আলগা ভদ্রতা দেখাতে বলতে পারেন, "গল্পের বই" অথবা "স্পোর্টস।" ভুরু কুঁচকে তাকাতেই সে স্বীকার করবে, "ওকে আই অ্যাডমিট, হুর!"
পৃথিবীতে সকল পুরুষ ভাই ভাই, এদের স্বভাবে কোন হেরফের নাই।
কিন্তু মেয়েদের যদি একই প্রশ্ন করেন, তাহলেই উত্তরের বৈচিত্র্যতা দেখতে পাবেন।
"আমি আমার বাবার সাথে থাকতে চাই।"
"আমার ভাইবোনদের পেতে চাই।"
"আমার সন্তান যেন আমার সাথে থাকে।"
"ফেসবুক!"
"মোবাইল ফোন!"
"হৃত্বিক রোশন!"
লিস্ট লম্বা হতে থাকবে। স্বামীর নাম আসবে হয়তো অনেক নিচে। আদৌ আসবে কিনা কে জানে! স্বামীর তাতে মাথা ব্যথা নেই। সত্তুরজন হুরের কল্পনাতেই সে মগ্ন।
সমস্যার কথা হচ্ছে, মেয়েদের এই লিস্টেরও বয়সের সাথে সাথে পরিবর্তন ঘটে। স্কুল পড়ুয়া এক মেয়ে হয়তো বলবে, "গল্পের বই।" (ভুরু কুচকানোর কিছু নেই, ধরে নেয়া যেতে পারে মেয়েটি সত্যি বলছে। ছেলে হলে অবশ্যই বিশ্বাস করতাম না।)
সেই একই মেয়ে কলেজে উঠলে মত পাল্টাবে, "মেকাপ! আর পারফিউম। আর জুয়েলারী।"
এই মেয়ে আরেকটু বড় হলে বিয়ের পরে, "কাজের লোক!"
কথা হচ্ছে, মাত্র তিরিশ খন্ডের কুরআনে মেয়েদের এই লম্বা লিস্ট বর্ণনা করতে গেলে কুরআনের সাইজ আরও অনেক লম্বা হতো। কাজেই আল্লাহ সুরাহ ফুসসিলাতে বলেছেন, "And you will have therein whatever your souls desire, and you will have therein whatever you request [or wish]" (আয়াত ৪১)
মানে হচ্ছে যা চাইবেন, তাই পাবেন। টেনশনের কিছু নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪৫