somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশিষ্ট সন্ত্রাসী ইলিয়াস আলীর কুকীর্তির ইতিহাস – আজ তার জন্যই বিএনপি’র হরতাল

০২ রা মে, ২০১২ বিকাল ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গুম, হত্যা, বোমাবাজি এগুলো একটা গনতান্ত্রিক দেশের কারোরই কাম্য নয়। কিন্তু কিছু কিছু কুখ্যাত মানুষের কুকর্মের জন্য জনগন তাদের প্রতি বিরুপ মনোভাব প্রকাশ করে। ক্ষমতার দাপটে তারা হয়ে ওঠে বেপরোয়া। হিতাহিত জ্ঞান পর্যন্ত তাদের থাকেনা। জনগণকে নিয়ে তারা আদৌ চিন্তা করেনা। নিজেদের স্বার্থ এবং ক্ষমতার লোভে মরিয়া হয়ে ওঠে। আজ আমি ব্লগে এমন এক ব্যক্তির ঘটনা উল্লেখ করতে চাই যিনি বিএনপির কুখ্যাত সন্ত্রাসী ইলিয়াস আলী। যার কীর্তিকলাপে নিজের দলের নেতা কর্মীরাও আতংকে থাকে। ছোটকালে শুনতাম যে সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসীদের হাতেই মরে। আমার জানা মতে ইলিয়াস আলী তো কোন ধোয়া তুলসী পাতা ছিল না। সে নিজেই অনেক মায়ের বুক খালি করেছে নিজের হাতে খুন করে। তার কারণে এখন বাস ড্রাইভারকে পুড়িয়ে মারছে বিএনপি সন্ত্রাসীরা। ইলিয়াস আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের এক সময়ের অন্যতম ত্রাস সৃষ্টিকারী। যার বিরুদ্ধে হত্যা-গুম, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির হাজারো অভিযোগ। ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ইলিয়াস আলী যোগ দেয় এরশাদের নতুন বাংলা ছাত্র সমাজে। পরে দলবদল করে বিএনপির ছাত্রদলের নেতা হয়ে ওঠে ইলিয়াস আলী অস্ত্রের জোরে ছাত্রদলে গড়ে তুলে ইলিয়াস গ্রুপ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যায় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। ইলিয়াস আলী পরিণত হয় ত্রাস সৃষ্টিকারী এক সন্ত্রাসীতে। বহু খুনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। সে কারণে একাধিকবার গ্রেফতার করা হয় তাকে। ৮৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৮৮ সালের ১১ ডিসেম্বর ছাত্রদল নেতা বজলুর রহমান ওরফে পাগলা শহীদকে হত্যা করে। ১৯৮৯ সালের ২৯ নভেম্বর তার নেতৃত্বে ডাকসু কার্যালয় ভাংচুর করা হয়। ১৯৯০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার নির্দেশে জহুরুল হক হলের ভিপি ছাত্রলীগ নেতা শহীদুর ইসলাম চুন্নুকে মিছিলে গুলি করে হত্যা করে। ১৯৯২ সালের ৩ আগস্ট ছাত্রদলের রতন গ্রুপের সঙ্গে ইলিয়াস গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি নিহত হয়। ১৯৯২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মামুন ও মাহমুদ নামে দুই ছাত্রদল নেতাকে হত্যা করে লাশ পানির ট্যাংকের ভিতর লুকিয়ে রাখে। প্রতিপক্ষ গ্রুপের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা মির্জা গালিব ও ছাত্রলীগ নেতা লিটন হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৯১ সালে গ্রেফতার করা হয় তাকে।১৯৯২ সালে ১৬ জুন ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করা হলে রুহুল কবির রিজভী আহমেদ সভাপতি ও এম ইলিয়াস আলী সাধারণ সম্পাদক হয়। মাত্র ৩ মাসের মাথায় ছাত্রদলের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এ সময় বিএনপি ক্ষমতায় থাকা স্বত্বেও ১৯৯৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামুন ও মাহমুদ হত্যা মামলায় আবার গ্রেফতার হয় ইলিয়াস আলী। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ২ বছর কারাবাসের পর মুক্তি পায়। ১৯৯৬ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনে প্রথমবারের মতো দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। সিলেটের অনেক সিনিয়র রাজনীতিবীদ ইলিয়াস আলী ও তার দলবলের হামলার মুখে পড়েন। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এম সাইফুর রহমান, আবদুস সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, শাহ্‌ এম এস কিবরিয়া, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, আবুল মাল আবদুল মুহিতের মতো ব্যক্তিরা তার সন্ত্রাসের মুখোমুখি হন বারবার। সাইফুর রহমানের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়াকেও অনেকে ইলিয়াসের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করেন। দেশের বাইরেও উশৃংখল আচরণের দায়ে পুলিশের নজরবন্দি হতে হয় ইলিয়াস আলীকে। ২০০০ সালে লন্ডনের মিল্টন কিন্স শহরে জয়পুর রেস্টুরেন্টে ওয়েটারকে হত্যার হুমকি দেয় সে। কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে কঠোরভাবে হুশিয়ার করে দিয়ে যায় তাকে। ২০০১ সালে এমপি হওয়ার পর বিশ্বনাথ বালাগঞ্জে ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করে। প্রকাশ্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মাঠে নামে ‘ইলিয়াস বাহিনীর ক্যাডাররা’। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এ কিবরিয়া হত্যা এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে হযরত শাহজালাল মাজার গেটে হত্যা চেষ্টার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল সিলেটে ইলিয়াস আলীর প্রতিপক্ষ গ্রুপের ছাত্রদল নেতা দিনার ও জুনায়েদকে গুম করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ইলিয়াস আলী আজ পর্যন্ত কতগুলো মানুষকে হত্যা করেছে, কত সন্ত্রাসী তৈরী করেছে, কত মায়ের বুক খালি করেছে, কত দুর্নীতি, ডাকাতি করেছে, কত সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনা করে তার হিসাব কেউ রাখে না। শতকোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার বনানীতে ”সিলেট হাউজ” নামে বিশাল বাড়ি করেছে। এসব অর্থ সে ব্যক্তি জীবনে অবৈধ পথে অর্জন করেছে বলে জানা যায়। আর আজ তাকে ফিরে পেতেই কিনা বিএনপি একের পর এক হরতাল ডেকে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। একজন সন্ত্রাসীর জন্য আজ কত মায়ের বুক খালি করছে। কেননা ইলিয়াস আলীতো বিএনপির একজন বড় নেতা!!!!!!

১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×