somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নরওয়ের মিডিয়া সন্ত্রাসে ঢাকায় নিহত নোবেল জয়ী ইউনুস

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিল গেটস যুক্তরাষ্ট্রের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের নিজেদের বাড়তি সম্পদ অধিকার বঞ্চিত সমাজকে উপহার দেবার আহবান জানালে বেশ কিছু ধনাঢ্য ব্যক্তি কিছু সম্পদ দান করেছেন। এটা একটা খুব জনপ্রিয় আর যুগপোযোগী পদক্ষেপ। বিল গেটস নিজেও নিজের মেয়েকে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে বাকি টাকা আফ্রিকায় তার সন্তানের বয়েসীদের পেছনে খরচ করছেন।ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ এর স্রস্টা স্যার বার্নার্ড লি তো সম্পদ অর্জনের সব সম্ভাবনাকে না বলে বউয়ের হাতে দুই বাচ্চা আর সংসার চালানোর এসাইনমেন্ট দিয়ে নিরলস কাজ করছেন এটাকে গরীব মানুষের মিডিয়ায় রূপান্তরের জন্য। যাতে তার বাচ্চার বয়েসীরা কোথাও ডিজিটাল ডিভাইডের শিকার না হয়। তথ্য বিপ্লবের মাধ্যমে আন্তর্জালিক সমাজতন্ত্র বা অন্তত ভার্চুয়াল ইক্যুইটি নিয়ে এসেছেন।

মহৎ যারা যারা আত্মকেন্দ্রিক নন, তারা অমরতার আয়োজনে সম্পদ বিসর্জন দেন।রাজা রামমোহন রায় বা হাজী মুহম্মদ মুহসিনদের মতো লোকেরা চতুর্থ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে কেবলি ছবি, তাদের দর্শন সমাজে অনুপস্থিত।

অধ্যাপক ইউনুসের বিরুদ্ধে ইউরোপের অর্থ গ্রামীণের বোন সংস্থায় ট্রান্সফারের যে অভিযোগ উঠেছে, তা উনার অর্থ বিষয়ক স্পর্শ কাতরতার ফলাফল। ওই অর্থ দিয়ে ইউনুস ভূমধ্যসাগরের তীরে প্রাসাদ তৈরী করেন নি, সেটি গ্রামীণের বোন সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছে।তবুও এটি দাতাদের সঙ্গে চুক্তির বরখেলাপ। দ্রুত ব্যবসা প্রসারের নেশা কাল হয়েছে তার জীবনে।

ঢাকার উদ্যোক্তাদের ব্যবসা প্রসারের এক হানা নেশা আমার চোখে পড়েছে। স্লো এন্ড স্টেডি উইনস দ্য রেস এখন উপহাসের পাত্র বাণী চিরন্তনী।
সাদাকালো বাংলা ছবিতে চিত্র নায়ক ফারুককে দেখেছিলাম প্রথম শটে পায়ে হেঁটে, ২য় শটে সাইকেলে,তৃতীয় শটে বাইকে,চতুর্থ শটে গাড়ীতে পঞ্চম শটে নায়িকার কোলে। ব্যবসা বৃদ্ধির এই ঢালিউড মডেল অধ্যাপক ইউনুস এবং ঢাকার অন্যান্য রুই-কাতলা-মৃগেলকে আপ্লুত করেছে।ফলে উদ্যোক্তাদের একুরিয়ামটাতে মাতস্যন্যায়। ইউনুস বিষয়ক নরওয়ের ডকুমেন্টারী ফাঁদ তার ধারাবাহিকতা। ইউনুস সাধু নন, তার ঘরের বন্ধু বিভীষণরাও সন্ত নন।

ইউনুসের বাবা সওদাগর ছিলেন। ক্ষুদ্র ঋণের দর্শন টি সওদাগরের দর্শন। তাই এর ভালোখারাপ দুই দিকি আছে। সোশ্যাল কমিটমেন্ট কম সেটা নোবেল কমিটিও জানেন। তাই পুরস্কারটা অর্থনীতিতে না এসে শান্তির সম্ভাবনাতে এসেছে। বারাক ওবামার মতো। আওয়ার্ড ইন হোপ।

আমাদের দেশে পশ্চিমা বা সাদা চামড়া প্রীতি ভয়াবহ। ইউনুস নিজেও এই রোগের শিকার। কাজেই নরওয়ের এক অখ্যাত সাংবাদিকের ডকুমেন্টারী দেখে আমরা নড়ে চড়ে বসলাম। এবার ইউনুস বধে কোন বাধা রইলো না।

উইকীলিক্সের তথ্যফাঁসবিপ্লব,অতীতে তেহেলকা ডটকমের শনৈ শনৈ উন্নতিতে নরওয়ের অখ্যাত সাংবাদিক বেছে নিলেন ইউনুসকে। ঢাকাই কইয়া দিমুর বাপ-মায়েরাও এনজিও করেছেন, যারা নোবেল কমিটিতে এসব তথ্য আগেও ফ্যাক্স করেছেন তারা নরওয়ের ক্রাইম রিপোর্টার ঝন্টুকে চুরি করা পয়সায় কেনা প্রাডোতে জোবরার রহস্যভেদে পৌঁছে দিয়েছেন। খুব খুশী লাগছে। দেশ রত্ন শেখ হাসিনা ইউনুসকে সুদখোর বলেছেন। আমি ভেবেছিলাম মেয়েদের মুখে কিছু আটকায় না, উপরন্তু হাসিনা নোবেল পাবার মতো লোক ওয়াজেদ মিয়ার স্ত্রী। আর ইউনুসকে সুদখোর বলার সুইপিং কমেন্ট আজ ইন্দিরাগান্ধী বেঁচে থাকলেও করতেন। তবে ফাঁদ ডকুমেন্টারীতে ঢাকা তোলপাড় হবার পর শেখ হাসিনা ওই কমেন্টের কারণে অল্টারনেটিভ নোবেলের যোগ্য হয়ে গেলেন।

ইউনুসের এই গল্পটি ঈশপের গল্পের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেলো। অর্থই অনর্থের মূল। ট্যাকা ট্যাকা করেই ঢাকা মহাপ্রস্থানের পথে বলাই বাহুল্য।নরওয়ের নরাধমের মিডিয়া সন্ত্রাসে ইউনুস নিহত। এই খবর পাবার পর বাঙ্গালী মুসলমানের জীবনে অঘোষিত ইউনুস ঈদ। ব্যর্থ এনজিও চোরেরা বান্ধবীদের ফোন করে বলছে, অনেস্টি ইজ দ্য বেস্ট পলিসি। সুযোগের অভাবে ভদ্রলোকেরা গম্ভীর ভাবে বলছে ইউনুস ইজ আ গ্রীডি ম্যান।

আপনি যদি জীবনে কিছুই না করেন, আপনি নিরাপদ, বিছানায় ঠেস দিয়ে শুয়ে হায়রে জীবনে কিছুই করতে পারলাম না এই লম্বা কার্বন ডাই অক্সাইড ছেড়ে যারা কিছু করছে তাদের ক্যারেকটার এসাসিনেশন করে মোটামুটি ডায়াবেটিসে শুকিয়ে সমাজে সততার পোড়াকাষ্ঠ হয়ে উঠতে পারেন।

সরদার ফজলুল করিম বা সিরাজুল ইসলাম চোধুরী বা পলান সরকার যদি ইউনুসকে চোর বলেন আমি মাথা পেতে নেব। কিন্তু চোরস্য চোরেরা আজ উচ্চকিত। ঝাঝরকূল ইউনুস সূচকে বলছে ফুডা ফুডা। এই বাঙ্গালী ঝাঝর সমাজ দক্ষিণ এশীয় কুচুটে সমাজের সক্রিয় অংশ।তাই জার্মানী-নেদারল্যান্ডস-নরওয়েতে ইউনুসের বন্ধু যারা তারা এই খেলাটা বুঝতে পেরেছে। আর বাঙ্গালী চিলের পিছে দৌড়াচ্ছে, যেন ইউনুস কূলটা হলে দেশে শান্তি আসবে।

গোলকের সামাজিক ব্যবসায় ইউনুস এক অবিসংবাদিত নাম। পুঁজিবাদের প্রাসাদে বসে এই ক্যাসানুভা বিকল্প দিয়েছেন রিসেশনে বিশীর্ণ ওবামাকে। ঢাকায় ইউনুসের শতাধিক ফিউনেরালে অপদার্থ সমাজ আত্মতুষ্টি পেতে পারে। তাতে ইউনুসের কিছু এসে যায়না। গল্প কবিতা লিখে নোবেল পাওয়া আর গ্রামীণের মতো সংগঠন দাঁড় করিয়ে নোবেল পাওয়া এক কথা নয়। সংগঠন তৈরীতে প্রতিদিন একটু একটু করে শরীর পুড়ে যায়, ৯টা-৫টা বাবুরা ভাবতেও পারেন কি একটা পানের দোকান দাঁড় করাতে কতটা পুড়ে উদ্যোক্তা ছোটখাট ইউনুসেরা।

ভাবনা ছবির যৌন কর্মী শাবানা আজমীর জীবন বেচে সন্তান মানুষ করার লড়াই মূল্যবোধের প্রচলিত উঁচু নাকটি কেটে দিয়েছে। তাই ইউনুসের দুর্নীতির ফাঁদ দেখিয়ে জাত গেল জাত গেল বলে লাভ নেই। বাংলাদেশ ইউনুসকে খল নায়ক ভাবলে, নরওয়ে ইউনুসের সোশ্যাল বিজনেস এক্সপ্রেসটাকে ডিরেইলড করতে চাইলে ইউনুসের কিছু এসে যায়না। আমৃত্যু কাজটা চালাবেন তিনি, আজি হতে শতবর্ষ পরে যখন কইয়া দিমুদের শরীর বায়োগ্যাস উতপাদন করবে, বায়োগ্যাস উতপাদন প্ল্যান্টে ইউনুসের ছবিতে ফুল দেবে কইয়া দিমুর গ্রান্ড ডটার আকলিমা ইউফান। কাজেই আজ ইউনুসের মৃত্যুতে শোকের কিছু নাই, চোখ কপালে তোলার কিছু নাই। আমি বরং নিজের চরকায় তেল দিই উহা ঘরঘর করিতেছে।

ইত্যবসরে জানাইয়া রাখি গান্ধীদর্শন ওবামাকে আকৃষ্ট করিবার পর এক বৃটিশ ক্রাইম রিপোর্টার আরেক ঝন্টু গান্ধী যৌন জীবন নিয়ে চটি রিপোর্টিং করেছেন। ভারতের কোন মিডিয়া উহা ক্যারি করে নাই। এতো বোকা তাহারা নহে।

পুনশ্চঃ এই লেখায় ইউনুস তোষণের নির্লজ্জ প্রচেষ্টায় বিক্ষুব্ধ হয়ে দেবদূত কেউ কেউ আমাকে বন্ধু তালিকা থেকে খারিজ করতে চাইলে আমি আর কীই বা করতে পারি!
সৎ বন্ধুতার ফিউনেরালে মন খারাপ হবে। মিস করবো তাদের। ইউনুসের আত্মার শান্তি প্রত্যাশা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:৫৬
৩৪টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×