somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ইতিহাস

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পরিচিতি

তাজউদ্দীন আহমদ ১৯২৫ সালে ২৩রা জুলাই গাজীপুর জেলায় অন্তর্গত কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ।
তার পিতার নাম মৌলভী মোঃ ইয়াসিন খান এবং মাতার নাম মেহেরুননেসা খান । তাজউদ্দীন আহমদ সাহেবের স্ত্রী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য । তাদের ৪ সন্তান বড় মেয়ের নাম শারমিন আহমদ রিতি মেজো মেয়ের নাম সিমিন হোসেন রিমি তিনি একজন বিশিষ্ট লেখিকা ও কলামিস্ট এবং ৩য় মেয়ের নাম মাহজাবিন আহমেদ মিমি । আর ছোট সন্তানের নাম তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ ।


বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা হলেন তাজউদ্দীন আহমদ । তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সাফল্যের সাথে পালন করেন । সে সময় একজন সৎ এবং মেধাবী রাজনীতিবিদ হিসেবে তার পরিচিতি ছিল

তাজউদ্দীন আহমদ মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন যা মুজিবনগর সরকার নামে বেশি পরিচিত । স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসাবে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন । ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হবার পর আরও তিনজন জাতীয় নেতাসহ তাকে বন্দী করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয় । ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেই ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর বন্দী অবস্থায় ঘাতকের বুলেটের তাজউদ্দীন আহমদকে জীবন দিতে হয় ।
তাজউদ্দীন আহমদের লেখা পড়া
৪ ভাই ও ৬ বোনের মধ্যে ৪র্থ ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ ।তিনি লেখা পড়া শুরু করেন তার বাবার কাছে আরবি শিক্ষার মধ্যে । এই সময়ে ১ম শ্রেণীতে ভর্তি হন বাড়ির দুই কিলোমিটার দূরের ভূলেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৷তিনি ১ম ও ২য় শ্রেণীতে ১ম স্থান অর্জন করেন৷ ৪র্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের কাপাসিয়া মাইনর ইংলিশ স্কুলে ।এরপর পড়েছেন কালিগঞ্জ সেন্ট নিকোলাস ইনস্টিটিউশন,, ঢাকার মুসলিম বয়েজ হাই স্কুল এবং সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলে ৷ তিনি ম্যাট্রিক পরিক্ষা ১৯৪৪ সালে দেন । এবং ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সে সময়ের জগন্নাথ কলেজ থেকে অবিভক্ত বাংলার সম্মিলিত মেধাতালিকায় যথাক্রমে দ্বাদশ ও চতুর্থ স্থান ঢাকা বোর্ড লাভ করেন । ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ সম্মান ডিগ্রী লাভ করেন । ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এল.এল.বি. ডিগ্রীর জন্য পরীক্ষা দেন ও পাস করেন ।


তাজউদ্দীন আহমদের রাজনৈতিক জীবনের শুরু

আবুল হাশিম প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর ১৯৪৩ সালে তাজউদ্দীন আহমদ মুসলিম লীগের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে যান ।তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৪৪ সালে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয় ।


১৯৪৮ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ । ১৯৪৮ সালে মার্চ মাসের ১১ ও ১৩ তারিখে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ধর্মঘট কর্মসূচী এবং বৈঠক করেন৷ ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সাথে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতারাসহ তিনি বৈঠক করেন ৷ ১৯৪৯ সালে জুন মাসের ২৩ তারিখে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ ।

তিনি ছিলেন সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ পর্যন্ত ঢাকা জেলা আওয়ামী মুসলিম লীগের ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় আওয়ামী লীগ ।সেখানে তাজউদ্দীন আহমদ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ।

১৯৫৪ এর নির্বাচনে তিনি যুক্তফ্রন্ট প্রার্থী হিসেবে মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদককে পরাজিত করে পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন । ১৯৬৪ সালে প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন । ১৯৬৬ সালে ফেব্রুয়ারি ৬ তারিখে লাহোরে যে সর্বদলীয় নেতৃসম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান ছয়দফা দাবি উত্থাপন করেন সেই সম্মেলনে শেখ মুজিবের সাথে তাজউদ্দীন আহমদও যোগদান করেন ।


সম্মেলনের বিষয় নির্বাচনী কমিটিতে তাজউদ্দীন ছিলেন অন্যতম সদস্য । একই বছরে ৮ই মে দেশরক্ষা আইনে গ্রেফতার হলেন তাজউদ্দীন আহমদ । তিনি ১৯৬৮ সালে জেলে থাকা অবস্থাতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন । তিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলশ্রুতিতে জেল থেকে মুক্তি পান ।এবং তিনি ১৯৭০ সালে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন । একই বছরের সাধারন নির্বাচনের জন্য গঠিত আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সেক্রেটারি হিসেবেও তাজউদ্দীন আহমদ নির্বাচিত হয় ।এবং ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন ।
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×