কিছু কিছু ঘটনা মানুষের জীবনে থাকে- যা বললে গল্পের মতো বা মিথ্যের মতো শোনায়।
আমার জীবনে এমন একটি ঘটনা আছে।
আমাকে জীবন দান করেছে একটি চড়ুই পাখি।
আমি জন্মেছি মৃত।
দ্বিতীয় জন্ম মানুষ হতে পাখির জন্ম।
মানুষের দেদে পাখির প্রাণ আমি।
আকাশ দেখলেই তাই আমার এতো ভাবালুতা।
অবয়বে আমি মানুষ হলেও পাখির মতো মন আমার।
কবিতার মতো শোনাচ্ছে জানি।
কিন্তুু, ভাববাদ বাদ রেখে সেই অদ্ভুদ গল্পটা বলি।
বাবা তখন সরকারী চাকরি করেন । পার্চেস অফিসার হিসেবে।
এই চাকরিতে অনেক ঘুষ খাওয়ার সুযোগ থাকে।
অনেক লোক কয়েকশ' বিঘা জমির মালিক হয়েছেন এরূপ চাকরি করে।
আর
আমার বাবা পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ সৎ পার্চেস অফিসারের সম্মান।
তিনি আজ যে ৮/৯ টি বাড়ীর মালিক- তা নিজ চেষ্টায় ব্যবসা করে করেছেন।
বাবার সততা প্রমান , আমার গল্প আর গল্পের উপজীব্য নয়।
আমার জন্ম আর এর অবাক করা মিরাকল আমার মূল গল্প।
আমি তখন মায়ের গর্ভে।
৮ মাসের বাচ্চা।
পৃথিবীতে আসবার জন্য প্রহর গুনছি।
তখন অবশ্য ভাবতে পারি নি -এই স্মৃতি একদিন ফেসবুক ষ্ট্যাটাসে লিখবো।
বাবা ৮ ঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে এসে খেতে বসেছেন।
পাবনায় চাকরি করতেন। আমাদের নারায়নগঞ্জের গ্রামের বাড়ীটি তখন ছিলো একতলা।
বাবা প্রথম লোকমা মুখে তুলবেন-এমন সময় একটা চড়ুই পাখি
ফ্যানের পাখায় আঘাত লেগে- ঠাস্ করে পড়ে গেলো মেঝেতে।
আমার ক্লান্ত , দয়ালু বাবা উঠে গেলেন খাওয়া থেকে । মা এনে মাথায় পানি দিলেন চড়ুই পাখিটির।
প্রকৃতি খুব রহস্যময় খেলা খেলে।
আমার বাবা মা , তখনও জানেন না, তারা একটি চড়ুই পাখির জীবন নয়, তাদের সন্তানের জীবন রক্ষা করেছেন।
চড়ুইটি বেঁচে গিয়েছিলো।
বাবা , মা পাখিটির কথা ভুলে গিয়েছিলেন।
মাস দুয়েক পর আমি এলাম পৃথিবীতে।
প্রতিটি শিশুর মতো আমারও কান্না শুনবার জন্য সবাই ব্যকুল ছিলো। আমার কান্না শুনতে না পেয়ে সবাই কাঁদতে লাগলো
আমি প্রায় দশ মিনিট মৃত বাচ্চাদের মতো নীরব ছিলাম।
এমন সময় একটি চড়ুই পাখি আবার সেই একই পাখায় আঘাত লেগে মেঝেতে পড়ে মৃত্যুবরণ করে।
আর আমি চিতকার করে কেঁদে উঠি।
আমি জীবনে অনেক গল্প লিখেছি, কিন্তুু, এ গল্পটা লিখি নি।
কারন- কিছু ঘটনা , জীবনের এতো গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে থাকে- আর এতো বড়ো এর অর্থ যে- সবার কাছে বলে দিলে এর
গভীরতা , বিশালতা .. হালকা হয়ে যায়।
জানি না .. আজ হঠাৎ একটা চড়ুই পাখিকে আমার কবুতরের সঙ্গে খেলা করতে দেখে - কেন বারবার সেই ঘটনাটি মনে পড়ছে !
আর সবাইকে আমার জীবনের এই মিরাকলটি বলে দিতেও ইচ্ছে করছে !!
পাখি টি কি আত্মহত্যা করে আমাকে মৃত্যু থেকে জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছিলো ?
না কি শুধুমাত্র দৈবিক ভাবে ঘটনা প্রবাহ মিলে যাওয়াতে সবার এরকম মনে হয়েছিলো ?
জানি না , তবে সেই সত্য জানবার ইচ্ছে আমার কোনোদিন ই যাবে না।
আমি .. মানব দেহে পাখির রুহু ..জন্মেই আমার মৃত্যু..মৃত্যু থেকে জীবনে ..এসেছি।
জীবনে তাই আমার কোনো মৃত্যু ভয় নাই।
মৃত্যু পেরিয়ে আমি এসেছি...তোমাদের কাছে।
আমি .. মানব দেহে পাখির রুহু ..জন্মেই আমার মৃত্যু..মৃত্যু থেকে জীবনে ..
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন
নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন
দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।