একাত্তরে স্বাধীনতা সংগ্রামের পর দীর্ঘ বছর এদেশে জনপ্রিয় ছিল পরিবার-পরিকল্পনা কার্যক্রম। একসময় যেসব কর্মী মানুষের বাড়িতে ঢোকার সাহস পেত না, সেই তারাই এক পর্যায়ে মানুষের আশা-ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছিল।
একথা আমি বলছি, আমার মায়ের অভিজ্ঞতা থেকে। মা ১৯৬৫ সালে যোগ দিয়েছিলেন এই চাকরিতে। বেঁচে থাকা অবস্থায় মায়ের মুখে অসংখ্যবার সেই গল্প আমি শুনেছি, প্রথম যখন তারা লোকজনের বাড়িতে যেতেন পরিবার পরিকল্পনা কি তা বোঝানোর জন্য, তারা তাদের বাড়ির ভিতরেই যেতে দিত না। একদিন, দুদিন, মাসের পর মাস। বছরও যায়। তারপর একসময় সব সয়ে আসে আস্তে আস্তে। দেশ স্বাধীন হয়। পরিবর্তিত হয় পরিস্থিতি।
একটু একটু করে বড় হয়ে উঠার সময় বাসায় দেখতাম পরিবার ছোট রাখার বিভিন্ন সামগ্রী। মা দিতেন লোকজনকে। বিনা পয়সায় সেগুলো নিয়ে যেতো সাধারণ আয়ের বা নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
কিন্তু আমার পেশাগত জীবনে খোঁজ নিতে গিয়ে ঢাকার আজিমপুরে পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তরে ইঁদুর দৌড়াতে দেখেছি। জনমানবহীন, স্যাঁতস্যাঁতে অন্ধকার অফিস। তারপর এলো সূর্যের হাসি চিহ্নিত সব ক্লিনিক। কিন্তু সেগুলোও মাঠে মারা পড়লো। দেশ ছেয়ে গেল অবৈধ গর্ভপাতের ক্লিনিকে, আর হাতুড়ে ডাক্তার-সেবিকাদের দৌরাত্ম্যও বাড়লো সেইসাথে।
এখন আপাত চোখে মনে হয়, পরিবার কার্যক্রম একেবারেই মুখ থুবড়ে পড়েছে। দেশের জনসংখ্যা স্ফীতিই এরকম ভাবার কারণ। তবে এলার্মিং যে, জনসংখ্যা বাড়ছে একটা নির্দ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে। যেখানে শিক্ষাসহ মানবিক অধিকারগুলোর কোনটাই পৌঁছায় না। ফলে এরা বেড়ে উঠছে দেশের অর্থনীতি-সমাজ ও রাজনীতির একটা বাড়তি চাপ হিসেবেই।
দেশের পরিবার-পরিকল্পনা কার্যক্রম এখন কোথায়?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছবির গল্প, গল্পের ছবি
সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!
কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?
এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন