somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোঃ খুরশীদ আলম
যারা ইমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ ( আল কুরআন)“সত্য ও সুন্দরকে ভালবাসি, অন্যায়- অবহেলা দেখলে খারাপ লাগে, তাই ক্ষদ্র এ প্রয়াস “

আমাদের অস্থিরতা যখন ক্ষতির কারণ

০৫ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[হালিশহর এলাকাকে দুর্গত এলাকা হিসাবে ঘোষণার দাবীতে মানববন্ধন]

আমাদের জীবনে বালা-মুসিবতের কোন শেষ নাই। একটা যায়, একটা আসে। আসতেই থাকে। জণ্ডিস ও পানিবাহিত রোগের কারণে আমাদের হালিশহর এলাকাকে দুর্গত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ঘরে ঘরে জণ্ডিসের পাদুর্ভাবে হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে রুগী ও দর্শনাথী বেড়েছে কল্পনাতীতভাবে। মানুষ দলে দলে স্মরনাপন্ন হচ্ছেন জণ্ডিসের পরীক্ষা করানোর জন্য। সিভিল সার্জনের পক্ষ হতে বলা হয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে সমস্যা থাকায় এই সমস্যা মহামারি আকারে রুপ নিয়েছে। চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। চিকিৎসক ও সচেতনরা যতই বাইরের খাবার গ্রহণ হতে দূরে থাকতে বলেন আমরা যেন ততই বাইরের লোভনীয় খাবারের প্রতি ঝুঁকে পড়ি, অনেকটা প্রতিযোগিতার মতো।

অভিজ্ঞতা : 1
মাত্র দু’এক বছর আগের কথা; সরকারের পক্ষ থেকে যখন সীম রেজিস্টেশন বাধ্যতামূলক করা হলো। সার্ভিস সেন্টারগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নাই। একই দৃশ্য মোবাইলের দোকানগুলোতে বিদ্যমান ছিল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ পাওয়াটা অনেকটা রেলের টিকেট পাওয়ার মতো অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল। তবুও অবৈধভাবে সীম রেজিস্ট্রেশন বন্ধ হয়নি, হচ্ছে না। আপনি ধারণাও করতে পারবেন না আপনার নামেই সীম রেজিস্ট্রেশন করা আছে কিন্তু সেটা ব্যবহার করছে অন্যকেউ, দীর্ঘ দিন ধরে।
অভিজ্ঞতা : 2
প্রায় একই সময় চলছিল জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনীর আনুষ্ঠানিকতা। ওয়ার্ড অফিস, সিটি কর্পোরেশন অফিস ও নির্বাচন কমিশনারের অফিসে তখন সর্বক্ষণ লোক জনের ভিড় লেগে থাকত। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনকে কেন্দ্র করে সাধারণ ভূক্তভোগীদের সমস্যার কোন শেষ ছিল না। কারো নামের বানানে ভুল, কারো ছবির জায়গায় ছবি নাই, কারো জন্ম তারিখে ভুল, কারো পিতা বা মাতার নামে ভুল ইত্যাকার সমস্যার সমাধানে লেজে গোবরে অবস্থা হয়েছিল তখনকার সময়। নির্ধারিত সময় বেধে দেয়ায় সাধারণ হুজুকে পাবলিক ওয়ার্ড অফিসের এবং স্থানীয় দালালদের চক্করে পড়ে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করতে বাধ্য হয়। অপর দিকে নির্বাচন কমিশনারের অফিসে পর্যাপ্ত কর্মচারীর অভাবে মানুষ পায়নি কাঙ্খিত সেবা। এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের পরপর এখন আবার শুরু হয়ে গেছে স্মার্ট কার্ড বিতরণ। এখানে ঝক্কি ঝামেলা কম হবে সে ব্যাপারে আমি নিঃসন্দেহ নই। চিন্তার খোরক যোগায় যখন দেখি আমরা কেমন যেন, কোন একটা “ রা” উঠলেই আমরা সেদিকে ছুটে চলি, পঙ্গপালের মতো, দ্বিগবিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে। ঠাণ্ডা মাথায় আমরা যেন কিছু করতেই পারি না। ফলে আমাদের এই অস্থিরতাকে কাজে লাগায় দালাল চক্র।
জাতীয় পরিচয়পত্রের বিকল্প জন্ম নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্টের কপি, জমির দলিল ইত্যাদি। একটা গুরুত্বপূর্ণ দলিলের বিপরীতে আমরা অন্যটি কাজে লাগাতে পারি সংশ্লিষ্ট দলিলটি হাতে পাওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত। তা আমরা করি না বরং আমরা আরেকজন কি করলো সেটার অনুকরণ অনুসরণ করি। এজন্য হয়তো আমাদের হুজুগে বাঙ্গালি বলা হয়।



[অবশেষে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পেলেন এই মুরুব্বি]

অভিজ্ঞতা : 3
এখন চলছে বিশ্বকাপ উত্তেজনা, উত্তেজনার লেটেস্ট ভার্সন। নিজ পছন্দের দলের জার্সি পড়ে ঘুরা, পড়াশুনা বন্ধ করে রাতভর জেগে খেলা দেখায় ভালবাসার কি নিদর্শন ফুটে উঠে তা জ্ঞানে আসেনি এখনো। দু’একজন নয় বরং পুরো দেশেই এখন এই অবস্থা, অধিকাংশই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য যে, এই মানুষদের সামনে একজন মানুষকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেললেও কেউ কথা বলেনা, সেলফি তুলে, ভিডিও করায় ব্যস্ত থাকে। হতাশা আর দুঃখের শেষ কবে হবে কে জানে।
আমরা এখন স্বাভাবিক বিষয়ে আশ্চার্য হই আর প্রয়োজনীয় বিষয়ে নিরব থাকি, দর্শক হয়ে রুচির পরিচয় দিই।
আমাদের ভিতরের মানুষটা মরে গেছে, একে জাগাতে হবে। যারা মানুষ ক্রমশ বাড়ছে বলে হা হুতাশ করেন তাদের কাছে প্রশ্ন করি, আসলে কি মানুষ বাড়ছে? আমি তো দেখি না। আমি দেখি অমানুষ আর পশু বাড়ছে শ’য়ে শ’য়ে। বরং মানুষ কমছে ক্ষণে ক্ষণে। আমাদের এই পশুত্বকে দূর করে মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করতে যদি না পারি তবে মানুষ পরিচয় দেয়াটা বোকামী বৈ আর কি? সত্যিকারের মানুষ হিসাবে গড়ে উঠতে হলে প্রথমেই হুজুকে ভাবসাব বন্ধ করে বিবেক দিয়ে ভাবতে হবে, কাজ করতে হবে। আর ভাল মানুষের সান্নিধ্যে থাকতে হবে। ভালতে বিসর্জন আর মন্দতে পলায়ন করতে হবে।



[একই ছাদের নিচে যখন সাপোর্টার দুইজন দুই দলের হয়]
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:০৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×