'অদ্ভুত রত্নাকর' সভার প্রধান পন্ডিত বাচস্পতি মশায়কে সভাসদদের একজন, অটলদা একদিন বললেন
: বাচস্পতি, সেই সেদিন যে সাধুভাষা বেরিয়েছিল তোমার মুখ দিয়ে, যার সধ্বংসৃনিত হার্দিক্যে বুদবুধিদের মন তিংতিড়ি তিংতিড়ি ক'রে ওঠে, সেই ভাষার একটু নমুনা আজ এদের শুনিয়ে দাও। যে ভাষায় ভারতের ইতিহাসটি গেঁথেছ, যার গুরুভার হিসেব ক'রে বলেছিলে ডুন্ডুস্মানিত ভাষা, তার পরিচয়টা চাই। শুনে এদের সকলের আনতারা ফাঁচকলিয়ে যাক।
বচস্পতি মশায় শুরু করলেন, সম্মম্মরাট সমুদ্রগুপ্তের ক্রেঙ্কটাকৃষ্ট ত্বরিৎত্রম্যস্ত পর্যুগাসন উত্থ্রংসিত-
একজন সভাসদ বললেন, বাচস্পতি মশায়, উত্থ্রংসিত কথাটা শোনাচ্ছে ভালো, ওর মানেটা বুঝিয়ে দিন।
পন্ডিতজি বললেন, ওর মানে উত্থ্রংসিত।
: তার মানে?
: তার মানে উত্থ্রংসিত
: অর্থাৎ?
: অর্থাৎ তার মানে হতেই পারে না। মেরেকেটে একটা মানে দিতেও পারি।
: কী রকম।
: ভিরভ্রিংগট্টা
: আর বলতে হবে না, স্পষ্ট বুঝেছি, ব'লে যান।
বাচস্পতি আবার শুরু করে দিলেন, সম্মম্মরাট সমুদ্রগুপ্তের ক্রেঙ্কটাকৃষ্ট ত্বরিৎত্রম্যস্ত পর্যুগাসন উত্থ্রংসিত নিরংকরালের সহিত--
মথুরবাবুর মুখের দিকে চেয়ে বললেন, বুঝেছেন তো নিরংকরাল --
: (মথুরবাবু বললেন) একেবারে জলের মতো। ওর চেয়ে বেশি বুঝতে চাই নে-- মুশকিল হবে।
বাচস্পতি আবার ধরলেন, নিরংকরালের সহিত অজাতশত্রু অপরিপর্যস্মিত গর্গরায়ণকে পরমস্তি শয়নে সমুসদগারিত করিয়াছিল।
এই পর্যন্ত ব'লে বাচস্পতি মশায় একবার সভাস্থ সকলের মুখের দিকে চোখ বুলিয়ে নিলেন। বললেন, দেখুন একবার, সহজ কাকে বলে। অভিধানের প্রয়োজনই হয় না।
সভার লোকেরা বললে, প্রয়োজন হলেই বা পাব কোথায়।
(রবি বাবুর বাচস্পতি গল্প থেকে নেওয়া। এই লেখাটার কথা অনেকেই অনেক ভাবে হয়ত নিজের অজান্তে স্মরণ করিয়ে দেয়। তাই হাতের কাছে রেখে দিলাম যাতে প্রয়োজন হলেই চোখ বুলিয়ে অন্তত অভিধানের প্রয়োজনটা মিটাতে পারি।)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১১ ভোর ৬:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




