জি টিভিতে একটা মুভি দেখাচ্ছিল, "A wednesday...আগেও দেখেছিলাম এবং দেখে আমার ভালো লাগা মুভির লিষ্টের মধ্যে জায়গা ও দিয়। তাও আবারো দেখতে বসে যায়। কম্পুতে কাজ করতে করতে দেখছিলাম। ছবিটা এতো মুগ্ধকর যে বোধকরি শুধু দু'বার না আরো বার কয়েক দেখা যাবে। ছবিটার কয়েকটা দৃশ্য কল্পনা করতে করতে একটা ঘটনা মনে পরে যায়। একটা দৃশ্য এমনঃ ..মাত্র উল্টোদিকের পুলিশ স্টেশন থেকে বোমা নিস্ক্রিয় করে যখন ইন্সপেক্টর জয় তার সঙ্গীদের নিয়ে রাস্তা পেরিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ফিরে যাচ্ছিল তখন এক হাবিলদার, ইন্সপেক্টার আরিফকে জিপে করে আসতে দেখে মন্তব্য করে, 'পাগলা আ গেয়া। আজ ফের কয়ি মরেঙ্গে'।
রাতের খাওয়া সারতে সারতে কথাটা মাথায় ঘুরছিল। স্কুলের কথা মনে পরে গেল। আমাদের এক টীচার ছিলেন, নুরুল ইসলাম, বি.এস.সি। আড়ালে আবড়ালে তাকে সবাই ডাকতো 'পাগলা স্যার' বলে। কারণ স্যারের স্বভাব এতোই উদ্ভত ছিল যে ছাত্র সমাজে তিনি রীতিমত আতঙ্কের নাম ছিলেন এবং তার পোশাক আশাক এবং হাটাচলা ও ছিল কিছুটা ছিটগ্রস্থ মানুষের মতোন। উনার নেক্সট মুভমেন্ট কি হবে কেও আন্দাজ করতে পারতো না। তো একদিন আমাদের এক ক্লাসের স্যার আসছেনা দেখে ছেলেরা খুব শোরগোল করছিল। হঠাৎ একসময় হাত দুখানা পেছনে রেখে ধীর লয়ে 'পাগলা স্যার' আমাদের ক্লাসে ঢুকে। উনাকে দেখেই সবার আত্মারাম খাচাছাড়া। ক্লাস ক্যাপ্টেন কে জিজ্ঞেস করে জেনে নিলেন কি কি হোমওয়ার্ক আছে। ক্লাসে তখন যাকে বলে পীন-পতন নীরবতা। যারা যারা হোমওয়ার্ক করে আনেনি তাদের দাড়াতে বলে ক্লাস ক্যাপ্টেনকে বললেন বেত নিয়ে আসতে। সে সুবোধ বালকের ন্যায় দুটো বেত নিয়ে এলো। তার কোনো ভয় ছিল না কারণ সে হোমোওয়ার্ক করে এনেছে। ঘুটি কয়েক প্রথম বেঞ্ছের ছেলে ছাড়া বাকি ক্লাসের আর কেও সেদিন সে হোমোওয়ার্ক করতে যায় নি এবং যার ফলস্বরুপ প্রথম বেঞ্চ বাদে বাকি সবাই দাঁড়ানো। বলা বাহুল্য, তাদের মাঝে আমিও ছিলাম। তো স্যার বেত দুটোকে একত্রে করে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন। এত্তোগুলো ছেলেকে দাঁড়ানো দেখে কিছু ভাবলেন। বোধহয় ভাবছিলেন, কাকে দিয়ে শুরু করবেন। স্যার প্রথমে গেলেন প্রথম বেঞ্চে বসে থাকা ছেলেদের দিকে যারা হোমওয়ার্ক করে এনেছে। ক্লাস ক্যাপ্টেনকে বললেন তার হোমওয়ার্ক দেখাতে। উলটে পালটে দেখলেন কিছুক্ষণ। একটু পর বললেন বেঞ্চ থেকে বেরিয়ে টেবিলের সামনে গিয়ে দাড়াতে। সে গিয়ে দাড়াতে আচমকা তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে এমন মারা মারলেন যে পুরা বেত দুটো একা তার উপরেই ভাংলেন। বেচাড়া কেদে কেটে একশেষ। ক্লাসের ফার্ষ্ট বয় সে। কোনোদিন মার খায় নি। ক্লাসের বাকিরা এমনি ভাবচকা খেয়ে গেলাম যে কি ঘটছে কেও কিছু বুঝতে পারলাম না। এমনতো না যে, সে হোমওয়ার্ক না করে করেছে বলেছে। তবে! বেতদুটো নিয়ে একসময় স্যার আনমনে কি ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন আর আমরা সবাই একে অপরের মুখ ছাওয়াছাওয়ি করতে লাগলাম। ঘটনাটা কি হল? ক্লাসে তখন কেও নড়তে চড়তেও ভয় পাচ্ছে পাছে যদি কোন শব্ধ হয় এবং পাগলা স্যার আবার চলে আসেন। ক্যাপ্টেনের সাথে খাতির ছিল বলেই সেকেন্ড বেঞ্চ থেকে চুপিসারে তার কাছে জানতে চাইলাম, ঘটনা কি। কিন্তু সে তখনো ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে আর বলছে হেডস্যারের কাছে নালিশ দিবে, যারা হোমওয়ার্ক করে আনেনি তার মার খেলো না আর সে করে মার খেলো। এমন বিচার কেও কখনো শুনি নি।
...
মুভি দেখতে দেখতেই একটা ঘটনা আমার মুখজুড়ে হাসি এনে দেয়
ঘটনা হচ্ছে আমার ভাগ্নে, যে মাত্রই হাটা শিখছে। তো সে যে কোনো খোলা দরজা দেখলেই সেটা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে। হামাগুড়ি দিয়ে দিয়ে দরজার কাছে পৌছে এক ধাক্কায় দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ আগে তেমনি আমার ক্লোজেটের দরজা সামান্য একটু মেলে আছে দেখে সে হামাগুড়ি দিয়ে ওটার কাছে যেয়ে এক ধাক্কা মারলো। স্বভাববশত সেটির বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু বন্ধ হলো না। হয়তো কোনো কিছু দরজা আগলে রেখে থাকবে। সে দরজা বন্ধ হয়ে গেছে মনে করে হামাগুড়ি দিয়ে চলে যাচ্ছিল কিন্তু যখন দেখলো যে বন্ধ হলো না তখন আবার ফিরে এলো এবং আবার একটা ধাক্কা মারলো। এবারো বন্ধ হলো না। আবার ধাক্কা দিল। এভাবে চারবারের বার সে বসা থেকে উঠে দরজা ধরে উঠে ধারালো এবং নিজের শরীর দরজার উপর রেখে এবার আবার একটা ধাক্কা মারলো এবং দরজা বন্ধ হয়ে গেলো।
১৫ মাস বয়স তার কিন্তু এসব কেও তাকে শিখিয়ে দেয় নি
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১১ ভোর ৬:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




