somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিউইর্কে ঈদ

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অভিমানে মনটা ভরে আছে। যার কাছ থেকে একটুখানি সাড়া পাওয়ার আশায় সকাল থেকে অধীর হয়ে ছিলাম তার sms পেয়ে বুকের ভেতরটা এক মূহুর্তের জন্য আনন্দে ছলাঁৎ করে উঠলেও পরক্ষণেই অভিমানের মেঘে মনের আকাশটা ছেয়েঁ গেছে। এ এমন এক অনুভূতি যে না পারছি খুশিতে ঢগবগ করতে, না পারছি অভিমান প্রকাশ করতে। সকালে তাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে sms করেছিলাম। উত্তর না দিলে এক সুবিধে হত যে তার নামে নালিশ করা যেত। এখন এদ্দিন যার কোন খবর নেই, যে দু দুইটা মেইল এর উত্তর দেয় না, যে ভালো আছে কিনা এই শংকা ধীরে ধীরে ঘনীভূত হচ্ছিল তার কাছ থেকে sms এর উত্তর পেয়ে মনে হচ্ছিল এর চাইতে উত্তর না পেলেই বোধ করি ভালো হতো। আমি কেন শুধু শুধু তার কথা ভেবে এদ্দিন উতলা হয়ে ছিলাম। নিজের উপরেই এখন রাগ হচ্ছে আমার। শুভমিতার একটা গান মনে পড়ে যাচ্ছে -

শুধু তোমায় ভেবে ভেবে, কতদিন রাত গেছে বয়ে
তুমি এসেই চলে গেছো, শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে

তুমি না লেখা কোন কবিতায় যেন অনেক বলা কথা
তুমি দগ্ধ দিনের পরে, নীল রাতের নীরবতা
তুমি না পাওয়া যন্ত্রণা, আজ আমার গেছে সয়ে,
তুমি এসেই চলে গেছো, শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে
শুধু তোমায় ভেবে ভেবে

তুমি বৃষ্টি থামার পরে, ভেজা সুখের রিণিরিণ
তুমি চৈত্র শেষের ঝড়ে, যেন দমকা হাওয়ার দিন
তুমি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি, আমি বেড়াই বুকে নিয়ে
তুমি এসেই চলে গেছো, শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে

শুধু তোমায় ভেবে ভেবে, কত দিন রাত গেছে বয়ে,
তুমি এসেই চলে গেছো, শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে
শুধু তোমায় ভেবে ভেবে

http://www.youtube.com/watch?v=7PG2QfK13nc
...

ঈদের দিন হিসেবে সকালটা মন্দ কাটেনি। সকালে পাশের বাসার আঙ্কেলের সাথে আমাদের বাসার তিনজন সব মিলিয়ে ছয়জন একগাড়িতে ছড়ে গেলাম পার্কে ঈদের নামাজ পড়তে। বরাবরের মতোই বিরাট আয়োজন। ডান পাশে মেয়েদের নামাজ পড়ার জায়গা। খুব সুন্দর একটা রোদেলা দিন। খোলা জায়গায় নামাজ পড়ার জন্য এর চাইতে ভালো আবহাওয়া আর হয়না। এর আগে ঈদের নামাজগুলোতে ঠান্ডার জন্য এত্তো এত্তো মোটা কাপড় পরে আসতে হয়েছিল। আজ সেই সব উপদ্রব নেই। নামাজ পড়ে খোলাখুলি সেরে আমরা ফিরে চল্লাম যে যার বাসায়। ফেরার পথে আমার এক কলেজ ফ্রেন্ডের সাথে ওখানে কাকতালীয়ভাবে দেখা হয়ে গেল। বন্ধু কাজ করে অন্য একটা স্টেটে। প্রতি বাইউইকলীতে নিউইর্ক আসে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্য। বোরকা পড়া তাকে দেখে একটু অবাক হলেও আর্শ্চয্য হয়নি। সে নামাজ পড়তে এসেছে তার মাকে সাথে করে। অনেকদিন বাদে বন্ধুকে দেখে খুব ভালো লাগলো।

বাসায় ফিরে দেখি বোন বিরীয়ানি রেধেছে। ওটা খেয়ে একটা মুভি দেখতে বসে গেলাম। ভালোই লাগছিল। একটু পরে পাশের বাসার সেই আঙ্কেলের বাসা থেকে ফোন, সবাইকে সেমায় খেতে যেতে হবে। গেলাম সবাই। আমার ভাগ্নে নতুন কাপড় পরে সবার আগে আগে হাটছিল। এত্তো ভালো লাগছিল তাকে এভাবে ছুটে ছুটে বেড়াতে দেখে। আঙ্কেলের বাসায় গিয়ে দেখি আন্টি শুধু সেমায় না বিরীয়ানির আয়োজন ও করেছে। বাসায় খেয়ে ফেলেছিলাম বলে শুধু তরকারীগুলো খেলাম। এক একটা তরকারী উহ্‌ আহ্‌ করার মতোই সুস্বাদু হয়েছে :)। উনি ডিভিডি ছেড়ে দিয়েছিলেন। আমির খানের "গাজিনী" মুভি। খেতে খেতে তাই দেখলাম কিছুক্ষণ। দেখলাম তাদের মেয়ের এক বন্ধু তার মা বাবা নিয়ে চলে এসেছে। জানতে পারলাম ইন্ডিয়ান পরিবার। আমাদের সাথে উনিও খেতে খেতে গাজিনী দেখছিল। বিরিয়ানী সেরে সেমায় নিলাম। সেমায় আবার তিন রকমের। এও একেকটা মারহাবা টাইপের খেতে। কিছুক্ষণ ওখানে বসে আমরা উঠলাম। নীচে অন্য বাসার আরেক বাঙ্গালী আঙ্কেলের সাথে দেখা। উনি আমাদের উনার বাসায় না নিয়ে কিছুতে ছাড়বেন না। কি আর করা। আমরা গেলাম উনার বাসায়। পেটে আর তিল ধারণের জায়গা নেই। তাও কিছু একটা মুখে দিয়ে একটুক্ষণ ওখানে বসে তাদেরকে বাসায় আসার নিমন্ত্রণ দিয়ে ওখান থেকে উঠলাম।

বেশ কজনের কাছ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা পেলাম। তার মাঝে কলেজের খুব ভালো এক পাকিস্তানী বন্ধুও আছে। অনেকদিন তার কোন খোজ নেই। অবশ্যি আমিও নেয়নি। খুব ভালো লাগলো তার শুভেচ্ছা পেয়ে। তাকেও প্রতি শুভেচ্ছা জানালাম। মুভিটা আবার দেখতে বসে গেলাম, সকালে যেটা দেখছিলাম। যদিও ভালো মুভি কিন্তু টানছিল না। মনটা উরু উরু করছিল, হয়তো সেই জনের জন্য। কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলাম। ঘুম থেকে উঠেই দেখি সেই sms, শুরুতে যেটার কথা লিখলাম। মেইল চেক করতে যেয়ে আরেকটা ভালো জিনিস ঘটলো। বিগত কদিনে প্রপেসর আর তার TA-কে মেইল করে করে বিরক্ত বানিয়ে ফেলেছিলাম। কি করবো কেও যে একটুখানি সাহায্য করেনা। এক TA বোধহয় আর না পেরে উত্তর দিয়েই দিল :)। কোডের কয়েক লাইন শুধু এদিক ওদিক করতে হবে। ইয়েয়েয়ে! মিলে গেছে উত্তর :) টেনশনে এ কদিন ঘুমোতে পারিনি যাক এবার নিশ্চিন্তে ঘুমানো যাবে।

উঠি। এবার আমাদের মেহমান আপ্যায়ন করবার পালা। ঈদের শুভেচ্ছা রইলো সবার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১১ সকাল ৭:৩৪
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×