অভিমানে মনটা ভরে আছে। যার কাছ থেকে একটুখানি সাড়া পাওয়ার আশায় সকাল থেকে অধীর হয়ে ছিলাম তার sms পেয়ে বুকের ভেতরটা এক মূহুর্তের জন্য আনন্দে ছলাঁৎ করে উঠলেও পরক্ষণেই অভিমানের মেঘে মনের আকাশটা ছেয়েঁ গেছে। এ এমন এক অনুভূতি যে না পারছি খুশিতে ঢগবগ করতে, না পারছি অভিমান প্রকাশ করতে। সকালে তাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে sms করেছিলাম। উত্তর না দিলে এক সুবিধে হত যে তার নামে নালিশ করা যেত। এখন এদ্দিন যার কোন খবর নেই, যে দু দুইটা মেইল এর উত্তর দেয় না, যে ভালো আছে কিনা এই শংকা ধীরে ধীরে ঘনীভূত হচ্ছিল তার কাছ থেকে sms এর উত্তর পেয়ে মনে হচ্ছিল এর চাইতে উত্তর না পেলেই বোধ করি ভালো হতো। আমি কেন শুধু শুধু তার কথা ভেবে এদ্দিন উতলা হয়ে ছিলাম। নিজের উপরেই এখন রাগ হচ্ছে আমার। শুভমিতার একটা গান মনে পড়ে যাচ্ছে -
শুধু তোমায় ভেবে ভেবে, কতদিন রাত গেছে বয়ে
তুমি এসেই চলে গেছো, শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে
তুমি না লেখা কোন কবিতায় যেন অনেক বলা কথা
তুমি দগ্ধ দিনের পরে, নীল রাতের নীরবতা
তুমি না পাওয়া যন্ত্রণা, আজ আমার গেছে সয়ে,
তুমি এসেই চলে গেছো, শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে
শুধু তোমায় ভেবে ভেবে
তুমি বৃষ্টি থামার পরে, ভেজা সুখের রিণিরিণ
তুমি চৈত্র শেষের ঝড়ে, যেন দমকা হাওয়ার দিন
তুমি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি, আমি বেড়াই বুকে নিয়ে
তুমি এসেই চলে গেছো, শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে
শুধু তোমায় ভেবে ভেবে, কত দিন রাত গেছে বয়ে,
তুমি এসেই চলে গেছো, শুধু ভোরের স্বপ্ন হয়ে
শুধু তোমায় ভেবে ভেবে
http://www.youtube.com/watch?v=7PG2QfK13nc
...
ঈদের দিন হিসেবে সকালটা মন্দ কাটেনি। সকালে পাশের বাসার আঙ্কেলের সাথে আমাদের বাসার তিনজন সব মিলিয়ে ছয়জন একগাড়িতে ছড়ে গেলাম পার্কে ঈদের নামাজ পড়তে। বরাবরের মতোই বিরাট আয়োজন। ডান পাশে মেয়েদের নামাজ পড়ার জায়গা। খুব সুন্দর একটা রোদেলা দিন। খোলা জায়গায় নামাজ পড়ার জন্য এর চাইতে ভালো আবহাওয়া আর হয়না। এর আগে ঈদের নামাজগুলোতে ঠান্ডার জন্য এত্তো এত্তো মোটা কাপড় পরে আসতে হয়েছিল। আজ সেই সব উপদ্রব নেই। নামাজ পড়ে খোলাখুলি সেরে আমরা ফিরে চল্লাম যে যার বাসায়। ফেরার পথে আমার এক কলেজ ফ্রেন্ডের সাথে ওখানে কাকতালীয়ভাবে দেখা হয়ে গেল। বন্ধু কাজ করে অন্য একটা স্টেটে। প্রতি বাইউইকলীতে নিউইর্ক আসে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্য। বোরকা পড়া তাকে দেখে একটু অবাক হলেও আর্শ্চয্য হয়নি। সে নামাজ পড়তে এসেছে তার মাকে সাথে করে। অনেকদিন বাদে বন্ধুকে দেখে খুব ভালো লাগলো।
বাসায় ফিরে দেখি বোন বিরীয়ানি রেধেছে। ওটা খেয়ে একটা মুভি দেখতে বসে গেলাম। ভালোই লাগছিল। একটু পরে পাশের বাসার সেই আঙ্কেলের বাসা থেকে ফোন, সবাইকে সেমায় খেতে যেতে হবে। গেলাম সবাই। আমার ভাগ্নে নতুন কাপড় পরে সবার আগে আগে হাটছিল। এত্তো ভালো লাগছিল তাকে এভাবে ছুটে ছুটে বেড়াতে দেখে। আঙ্কেলের বাসায় গিয়ে দেখি আন্টি শুধু সেমায় না বিরীয়ানির আয়োজন ও করেছে। বাসায় খেয়ে ফেলেছিলাম বলে শুধু তরকারীগুলো খেলাম। এক একটা তরকারী উহ্ আহ্ করার মতোই সুস্বাদু হয়েছে
বেশ কজনের কাছ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা পেলাম। তার মাঝে কলেজের খুব ভালো এক পাকিস্তানী বন্ধুও আছে। অনেকদিন তার কোন খোজ নেই। অবশ্যি আমিও নেয়নি। খুব ভালো লাগলো তার শুভেচ্ছা পেয়ে। তাকেও প্রতি শুভেচ্ছা জানালাম। মুভিটা আবার দেখতে বসে গেলাম, সকালে যেটা দেখছিলাম। যদিও ভালো মুভি কিন্তু টানছিল না। মনটা উরু উরু করছিল, হয়তো সেই জনের জন্য। কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলাম। ঘুম থেকে উঠেই দেখি সেই sms, শুরুতে যেটার কথা লিখলাম। মেইল চেক করতে যেয়ে আরেকটা ভালো জিনিস ঘটলো। বিগত কদিনে প্রপেসর আর তার TA-কে মেইল করে করে বিরক্ত বানিয়ে ফেলেছিলাম। কি করবো কেও যে একটুখানি সাহায্য করেনা। এক TA বোধহয় আর না পেরে উত্তর দিয়েই দিল
উঠি। এবার আমাদের মেহমান আপ্যায়ন করবার পালা। ঈদের শুভেচ্ছা রইলো সবার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১১ সকাল ৭:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




